লক্ষ্মীপুরের দ্বীপ চর শামছুদ্দিন, চর রমনী মোহন ও মেঘনাপাড়ের চর কালকিনি, চরমার্টিনের ৩’শতাধিক শিশুকে দেয়া হলো ঈদের নতুন জামা। এ শিশুদের মধ্যে সবাই ভূমিহীন, ছিন্নমূল, মৎস্যজীবি ও কৃষি পরিবারের সন্তান। যাদের পরিবার থেকে ঈদে কখনো নতুন জামা পাওয়া যায়নি। সোমবার(৩জুন) সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঈদের নতুন পোশাক বিতরণ করা হয়।
ফলে ঈদের আগেই ঈদের হাসি ফুটেছে ৩’শতাধিক শিশুর মলিন মুখে। শিশুদের মাঝে ঈদের এই ব্যতিক্রমী আমেজ পৌঁছানোর আয়োজন করে “আলোকযাত্রা-কোস্টাল ইয়ুথ নেটওয়ার্ক” লক্ষ্মীপুর টিম।
এতে উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও দর্শন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাহবুবে এলাহি সানি, অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক মো. খালেদ সাইফুল্লাহ, নোয়াখালী সোনাইমুড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ উল্লাহ সবুজ, ব্যবসায়ী তারেক আজিজ, শিক্ষক ও সাংবাদিক সানা উল্লাহ সানু, লিয়াকত আলী শুভ, খুরশিদ আলম চৌধুরী, দেলোয়ার তালুকদার, সৈয়দ ইফতেখার হৃদয়, মো. শাহাবুদ্দিন, মো. মহিউদ্দিন প্রমুখ।
সম্প্রতি শিশুদের ঈদে নতুন জামা প্রয়োজনের গল্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরে ঈদ বস্ত্র বিতরণের উদ্যোগ নেন লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও তরুণ সংবাদকর্মী, “আলোকযাত্রা-কোস্টাল ইয়ুথ নেটওয়ার্ক” লক্ষ্মীপুরের টিম লিডার জুনাইদ আল হাবিব।
এতে শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ ও তালিকা প্রণয়ন করে ৩’শতাধিক শিশুর জন্য ঈদের নতুন পোশাক ক্রয় করা হয়। ঈদের নতুন পোশাক পেয়ে খুশি অনেকের মধ্যে সোহাগ(১১), রিয়াদ(১২), শামছুন্নাহার(৬), সালমা(১২), সাইফুলরা(৬)। ঈদের আগেই নতুন পোশাক গায়ে দিয়ে বেশ উৎফুল্ল দেখা যায় তাদেরকে।
সোহাগ, সালমরা বললেন, এভাবে প্রতি ঈদে নতুন জামা পড়তে চান তারা। অসহায়, ছিন্নমূল, নদীভাঙা শিশুদের মলিন মুখে হাসি ফুটানোর অনুভূতি তুলে ধরে জুনাইদ আল হাবিব বলেন, আসলে ওদের মুখে যখন হাসি ফুটতে শুরু করে, তখনি আমি ঈদের আসল অনুভূতি অনুভব করি।
যে দিন ওদের হাতে ঈদবস্ত্র বিতরণ করি, সে দিনই যেন আমার ঈদ। ঈদ বলতে আমি মূলত শিশুদের ঈদকেই বুঝি। কেননা, ঈদ আসলে শিশুরা যত আনন্দ অনুভব করে, সেটা বয়স্কদের বেলায় হয়ে ওঠে না। তাই সে চিন্তা থেকে ওদের জন্য ঈদবস্ত্র চেয়ে এ তিন বারের মতো ফেসবুকে পোস্ট করে, ম্যাসেঞ্জার ও মুঠোফোনে ভালো মনের মানুষদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে শিশুদের জন্য ঈদের নতুন জামা কাপড় বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছি।
এ ক্ষেত্রে যারা আর্থিকভাবে এবং মানসিকভাবে অনুপ্রেরণা দিয়ে পাশে থেকেছেন, সকলের প্রতি আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। আমি আশাকরি, ভালো কাজগুলো এভাবেই ছড়িয়ে পড়বে। ঈদের আনন্দ থেকে বাদ না পড়ুক কোন অসহায়, নদীভাঙা শিশু।
0Share