জোয়ারের পানির তোড়ে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার রামগতি বাজার-বয়ারচর সড়কের তেগাছিয়া বাজার সংলগ্ন মেঘনা ও ভুলুয়া নদীর সংযোগ গাবতলী খালের ওপর নির্মিত সেতুর পশ্চিমাংশের মাটি ধ্বসে গেছে। এতে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে, বন্ধ হয়ে পড়েছে যানবাহন চলাচল। দুর্ভোগে পড়েছে এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানায়, রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের তেগাছিয়া বাজার এলাকায় মেঘনা নদী সংলগ্ন গাবতলী খালের উপর নির্মিত ব্রিজটি দিয়ে রামগতি বাজার থেকে তেগাছিয়া বাজার, টাংকি বাজার এবং পাশ্ববর্তী নোয়াখালীর হাতিয়া এলাকার লোকজন চলাচল করে। ফসল, মাছ ও বিভিন্ন পণ্য ওই ব্রিজের উপর দিয়ে পরিবহন করা হয়। মেঘনা নদীর জোয়ারের পানি সরাসরি ওই খালে প্রবেশ করে। গত কয়েকদিন নদীতে অস্বাভাবিক উচ্চতায় জোয়ার হয়েছে। এছাড়া ভারী বৃষ্টিপাতে খালের পানির স্রোত বৃদ্ধি পায়। এতে ব্রিজটি পশ্চিম অংশে থাকা উইং ওয়ালের মাটি আস্তে আস্তে ধ্বসে যায়। সংযোগ সড়কটি ভেঙে পড়ায় সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৮টি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ অসুস্থ রোগী, ব্যবসায়ী ও যাত্রী সাধারণ।
সোমবার রাতে মেঘনার সৃষ্ট জোয়ারের পানি ওই খাল থেকে নামার সময় মাটিগুলো সরে যায়। এতে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। দুর্ঘটনা এড়াতে স্থানীয়রা সেতুর ভাঙা অংশে গাছের ডাল, বাঁশ ও তক্তা দিয়ে ঝুঁকিতে পারাপার হচ্ছেন। সেতুর দুই পাশে বড় বড় ফাটলও দেখা দিয়েছে, যা দীর্ঘমেয়াদি বিপদের আশঙ্কা তৈরি করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল রানা জানান, ব্রিজের মাটি ধ্বসে পড়ায় চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, রোগীসহ সকল ধরণের লোকজন চরম দুর্ভোগে পড়েছে। দ্রুত মেরামতের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী নাহিদ উদ্দিন জানান, সড়কটি ব্যবহার করে প্রতিদিন ব্রিজঘাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, তেগাছিয়া বাজার, চার রাস্তা বাজার, টাংকি বাজার, হাতিয়া বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াতের একমাত্র সড়ক। মেঘনা এবং সাগরের ইলিশসহ অনান্য প্রজাতির মাছ এ সড়কের দিয়ে পরিবহন করা হয়। কিন্তু ব্রিজের মাটি ধ্বসে যাওয়ায় মাছবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে স্থানীয় লোকজনসহ মৎস্য ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (LGED) ২০০২ সালে চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্ট (সিডিএসপি) প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি নির্মাণ করে। মেঘনার পানি গাবতলী খাল দিয়ে তীব্র স্রোতে প্রবাহিত হওয়ায় প্রায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এপ্রোচ সড়ক ভেঙে গেছে ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রামগতি উপজেলা প্রকৌশলী স্নেহাল রায় বলেন, রামগতি-বয়ারচর সড়ক ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়ে আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, সড়কটি অন্তত গুরুত্বপূর্ণ। বয়ারচরের সাথে রামগতির যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এ সড়ক। দ্রুত সংস্কার করে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবগত করা হয়েছে।
77Share