নিজস্ব প্রতিনিধি: “আঞ্চলিক সাহিত্য বিকাশে পাঠাগারের ভূমিকা” শীর্ষক আলোচনা নিয়েই আগামী ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামী বিভাগীয় পাঠাগার সম্মেলন। ৮ নভেম্বর সকাল ১০ টায় চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে, সম্মিলিত পাঠাগার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় পরিষদ।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন সম্মিলিত পাঠাগার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় পরিষদের কার্যনির্বাহী সদস্য শিল্পী শিবলী হাওলাদার। তিনি জানান, বিভিন্ন দাবি দাওয়া বাস্তবায়ন করার জন্য বেসরকারি পাঠাগারগুলোর মধ্যে ঐক্য অতীব জরুরি। সেই লক্ষ্যে সম্মিলিত পাঠাগার আন্দোলন জনমত তৈরি ও পাঠাগারগুলোর মধ্যে ঐক্য স্থাপনের লক্ষ্যে বিভাগে বিভাগে বিভাগীয় সম্মেলন শুরু হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম বিভাগের পাঠাগারগুলোর জন্য চট্টগ্রাম শহরের শিল্পকলা একাডেমিতে সম্মেলন হবে।
তিনি আরো জানান, যে সমস্ত পাঠাগার সংগঠক ও সুহৃদবৃন্দ সম্মেলনে অংশ নিতে ইচ্ছুক তাদেরকে একটি গুগল ফরমটি পূরণ করে অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহনের জন্য নিশ্চত করতে হবে।
সম্মিলিত পাঠাগার আন্দোলন সূত্রে জানা গেছে, জ্ঞান-নির্ভর ন্যায়-ভিত্তিক সমাজ নির্মাণে “পাঠাগার হোক গণমানুষের বিশ্ববিদ্যালয়” এ শ্লোগানকে সামনে রেখে সারা বাংলাদেশে বেসরকারি ভাবে যে পাঠাগারগুলো গড়ে উঠেছে সেই পাঠাগারের সংগঠকবৃন্দের সাথে পারস্পরিক ভাব বিনিময়, যোগাযোগ বৃদ্ধি, সাংগঠনিক নানা সমস্যা নিয়ে মতবিনিময়, সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরা এবং পাঠাগারগুলোর সাথে চিন্তার ঐক্যসূত্র গড়ে তুলা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ২০২২ খ্রিস্টাব্দে ২১,২২,২৩ ডিসেম্বর তিনদিনব্যাপী একটি আবাসিক পাঠাগার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত পাঠাগার সম্মেলনে সারা দেশের প্রায় ২৫০টি পাঠাগারের ৫০০ প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করে। সম্মেলনের শেষ দিনে বেসরকারি পাঠাগারগুলোর বিভিন্ন দাবি দাওয়া সরকারের নিকট তুলে ধরার জন্য “সম্মিলিত পাঠাগার আন্দোলন “ যাত্রা শুরু হয়।
তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ২৬ শে মার্চ ২১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরে ২০২৩ সালের ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর নওগাঁর পতিসর রবীন্দ্র কুঠিবাড়ীতে সম্মিলিত পাঠাগার আন্দোলন কেন্দ্রীয় পরিষদে দুই দিন ব্যপি সাংগঠনিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে,
১. দেশের সকল প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাসহ পর্যটন কেন্দ্রসমূহে সংশিষ্ট বিষয় ভিত্তিক পাঠাগার
স্থাপন করতে হবে।
২. জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র প্রতি বছর পাঠাগারগুলোকে যে আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করে তা বৃদ্ধি করে
নূন্যতম ১৫০০০০ টাকা করতে হবে।
৩. জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র কর্তৃক তালিকাভুক্ত সকল পাঠাগারকে এই অনুদানের আওতায় আনতে
হবে।
৪. সকল সরকারী দপ্তরসমূহে পাঠাগার স্থাপন করতে হবে।
৫. দূরপাল্লার ট্রেন, বাস, লঞ্চে পাঠাগার স্থাপন করতে হবে।
৬. প্রত্যেক কোম্পানীর সিএসআর তহবিলের শতকরার ১০ভাগ পাঠাগার উন্নয়নে ব্যয় করতে
হবে।
সর্বশেষ চলতি (২০২৪) বছরের ২১শে সেপ্টেম্বর তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি অডিটরিয়ামে “রাষ্ট্র সংস্কারে পাঠাগারের ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে ঢাকা ঘোষণা করা হয়। এ ঘোষণা মধ্য দিয়ে ৭টি দাবি আদায় করা হয়।
#ঢাকা_ঘোষণাঃ
১. নিবন্ধিত পাঠাগারসমূহে একজন প্রশিক্ষিত বেতনভুক্ত গ্রন্থাগারিক নিয়োগ করতে হবে।
২. জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র কর্তৃক অনুদানের বই নির্বাচনের ক্ষেত্রে ৮টি বিভাগের প্রতিনিধিত্বশীল
পাঠাগারের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে ।
৩. নির্বাচিত বইয়ের তালিকা যথাসময়ে অনলাইনে প্রকাশ করতে হবে এবং পাঠাগারসমূহকে
তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বই বাছাইয়ের স্বাধীনতা দিতে হবে।
৪. স্থানীয় সরকারের বরাদ্দে পাঠাগারসমূহের অবকাঠামো নির্মাণ , সংস্কার এবং বই ক্রয়ে
গুরুত্বপ্রদান করতে হবে।
৫. প্রতি উপজেলায় একটি করে মডেল পাঠাগার স্থাপন করতে হবে।
৬. পাঠাগার পরিচালনার জন্য অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নে সম্মিলিত পাঠাগার আন্দোলনের অংশীজন
হিসেবে প্রতিনিধির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
৭. আগামী পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় পাঠাগারকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহকে
কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে।
0Share