আজিজুল হক মাউন : বায়ো-মেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল সিম রি-রেজিষ্ট্রেশনের নামে মোবাইল অপারেটর কোম্পানীর লক্ষ্মীপুরের রেজিষ্ট্রেশন পয়েন্ট গুলোতে চলছে ওপেন চাঁদাবাজি। টেলিকমিনিকেশন মন্ত্রণালয় ও অপারেটর কোম্পানীর থেকে সম্পূর্ন ফ্রিতে ( বিনা মূল্যে) সিম রি- রেজিষ্ট্রেশন করার নির্দেশ থাকলেও তা মানছে না এ অঞ্চলের রিটেইলাররা। তারা (রিটেইলার) মোবাইল ব্যাবহারকারীদের নিকট থেকে সিম রেজিষ্ট্রেশন করতে প্রতিটি সিমে ২০ থেকে ৫০ টাকা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বায়ো- মেট্রিক পদ্ধতিতে সিম রেজিষ্ট্রেশন করাতে সরকার ও মোবাইল অপারেটর কোম্পানীর এ নির্দেশ মানছে না এজেন্ট ছাড়াও জেলা, থানাসহ সকল কাস্টমার সার্ভিস সেন্টার গুলো।
সদর উপজেলার আবদুল করিম নামের এক রবি সিম ব্যাবহারকারী অভিযোগ করে বলেন, সরকার বলেছে সিম রেজিষ্ট্রশন করছে ফ্রিতে ( বিনা মূল্যে)। কিন্তু আমি রবির খোদ লক্ষ্মীপুর জেলা কাস্টমার কেয়ারে সিম রেজিষ্ট্রশন করলে আমার নিকট থেকে ২০ টাকা নিয়ে যায়। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে রেজিষ্ট্রশন না করলে সিম বন্ধ করে দিবে, তাই আমি টাকা দিতে বাধ্য হই।
নাছিমা বেগম নামের আরেক জিপি (গ্রামীণ ফোন) ব্যাবহারকারী স্কুল শিক্ষকা বলেন, লক্ষ্মীপুরে প্রায় ৫ লাক্ষ মোবাইল ব্যবহারকারী রয়েছে। ১০ থেকে ৩০ টাকা করে নেওয়ায় বিষয়টি সাধারণ মানুষ খুব একটা টের পাচ্ছে না। প্রতিটি সিম রেজিষ্ট্রেশন করতে২০ টাকা করে নিলে গ্রাহকদের নিকট থেকে ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে রিটেইলারগন।
গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। জেলার সদর উপজেলার দাসের হাট বাজারে গিয়ে দেখাযায় শুভ ফ্যাশন এন্ড টেলিকম, ছায়ানীড় ষ্টুডিও এন্ড টেলিকম, জহির টেলিকম, জে এস টেলিকমসহ খোদ গ্রামীণ ফোন ও রবি কাস্টমার সার্ভিস সেন্টার গুলো সিম রি-রেজিষ্টেশন করতে গ্রাহকদের নিকট থেকে ২০ থেকে ৩০ টাকা চাঁদা আদায় করছে। রেজিষ্ট্রশনের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কোন গ্রাহক বাদ যাচ্ছে না তাদের এ চাঁদাবাজি থেকে। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার সিম রেজিষ্ট্রেশন হয় না এ অঞ্চলের সিম রেজিষ্ট্রেশন পয়েন্ট গুলোতে।
এ ব্যাপারে ছায়ানীড় ষ্টুডিও এন্ড টেলিকমের স্বত্ত্বাধিকারী মোঃ সুমনের কাছে জানতে চাইলে তিনি ২০ টাকা করে আদায় করার কথা স্বীকার করেন। জহির টেলিকমের স্বত্ত্বাধিকারী জহিরুল ইসলাম বলেন, আমি কাউকে ডেকে আনি না, যার প্রয়োজন সে আসে আমার কাছে। আমার এখানে ২০ টাকার নিছে কোন সিম রেজিষ্ট্রেশন হয় না।
এ বিষয়ে ২৪ এপ্রিল রাত ৮ টায় গ্রামীণ ফোনের কাস্টামার সার্ভিস সেন্টার ১২১ নাম্বারে কল দিয়ে জানতে চাইলে কাস্টমার ম্যানেজার সোমা বলেন, সিম রি-রেজিষ্ট্রেশন করতে এজেন্টরা গ্রাহকদের নিকট থেকে কোন ফি আদায়ের নিয়ম নেই। সিম রেজিষ্ট্রেশনের জন্য এজেন্টদেরকে কোম্পানীর পক্ষ থেকে ১ টাকা আশি পয়সা পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। পরে এ ব্যাপারে প্রতিবেদক গ্রামীণ ফোন, রবি, বাংলালিংক, টেলিটক, এয়াটেল কাস্টমার ম্যানেজার বরাবর অভিযোগ করলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এমন বলে জানান তারা। এখন দেখার বিষয় কোম্পানী গুলো অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কতো সময় নেন। সময় কিন্তু বেশি নেই , ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মাত্র ৫ দিন।অন্যদিকে দ্রুত চাঁদাবাজ এই এজেন্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান মোবাইল ব্যাবহারকারী সাধারণ জনগনের।
0Share