সানা উল্লাহ সানু: চরকালকিনি ইউনিয়নের নাছিরগঞ্জ থেকে পাটারীররহাট ইউনিয়নের জারিরদোনা পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ কিমি পরিধি নিয়ে নিয়ে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মেঘনা নদীতে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গনের তীব্রতায় এলাকাবাসী পুরোপুরি দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
ভাঙ্গনের তীব্রতা এতবেশি যে, এলাকাবাসী তাদের বাড়িঘর ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। উপজেলার প্রায় দেড়শত বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী লুধুয়াবাজার এবং কাদিরপন্ডিতেরহাট নদীতে বিলীনের শেষ প্রান্তে। নদীতে বিলীন হওয়ার প্রহর গুনছে ঐতিহ্যবাহী ফলকন উচ্চ বিদ্যালয়। ভাঙ্গছে রামগতি উপজেলার বেশ কিছু এলাকাও । এছাড়াও বেড়ীবাধঁ ভেঙ্গে গেছে পুরো উপজেলায়।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, চর ফলকন, চরকালকিনি, সাহেবেরহাট, পাটারীরহাটে ইউনিয়নের পর এবার নতুন করে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে চর মার্টিন ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডে। ভাঙ্গনের পুরাতন হিসাবের বাহিরে গত ২ বছরে চর কালকিনি ইউনিয়নের ৪টি ওয়ার্ড, সাহেবেরহাট ইউনিয়নের ৪টি ওয়ার্ড সম্পূর্নই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। চর মার্টিন ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডসহ বর্তমানে নতুন ভাঙ্গন চলছে ৫টি ইউনিয়নের অন্তত আরো ৮টি ওয়ার্ডে।
কমলনগর উপজেলা সদর হাজিরহাট থেকে বর্তমানে নদীর দূরত্ব মাত্র দেড় কিলোমিটার। ভাঙ্গনের ভয়াবহতা দেখে ফলকন ইউনিয়নের আজাদ মাঝি (৬৫)র ধারণা কমলনগর হয়তো মেঘনার বুকে পুরোপুরি হারিয়েই যাবে। স্থানীয়রা আরো জানান, দীর্ঘ বহু বছর থেকে মেঘনার অব্যাহত ভাঙ্গনে হাজার হাজার মানুষ সব কিছু হারিয়ে উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। নদীতে বিলীন হয়ে গেছে বহু সম্পদ ও স্থাপনা। রামগতি-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কের দুপাশ পরিণত হয়েছে উদ্বাস্তুদের আশ্রয় শিবিরে।
জানা যায়, ২০১৪ সালের ৫ আগষ্ট মেঘনার পাড়বাঁধার নিমিত্তে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার জন্য ১শ ৯৮ কোটি টাকা বরাদ্ধ হয়। সে বরাদ্ধে রামগতি অংশে সেনাবাহিনী দ্বারা ৪ কিমি কাজ সম্পন্ন হলেও অদৃশ্য কারনে কমলনগর অংশের মাত্র ১ কিমি কাজ যথা সময়ে শুরু করা হয়নি। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভে হতাশা হয়ে ১৭ কিমি এলাকা জুড়ে প্রায় ৫২ হাজার লোক কমলনগরে বাধঁ নির্মাণের দাবীতে মানববন্ধন করেন। এলাকাবাসী কমলনগর কে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি আশা করছেন।
0Share