সারোয়ার মিরন: সুপ্রিয় বন্ধুগন। সালাম/আদাব। আশাকরি সবাই ভালো আছেন? পবিত্র ঈদ পরবর্তী সময়ে শতভাগ ভালো থাকবেন এমনটাই বিশ্বাস করি। রামগতি-কমলনগর তথা লক্ষ্মীপুরের নাগরিক হিসেবে মেঘনা পাড়ে বেড়াতে যাননি এমন মানুষ খুবই কম সংখ্যক হবে হয়তো। কিন্তু যারা এখনো রামগতি কমলনগরের মেঘনা তীরে পদধূলি দিতে পারেননি তাদের জন্য শোকগাঁথা। অপার কিছু সৌন্দর্য্য দেখা থেকে বঞ্চিত হলেন এ কথা হলফ করে বলতে পারি। সময় সুযোগ করে দেখে আসতে পারেন মেঘনার পাড়। বিশেষ করে মেঘনার স্বরুপ দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে আলেকজান্ডার (উপজেলা সংলগ্ন), রামগতি বাজার ও কমলনগরের হাজিরহাট, লধুয়া, বাংলাবাজার কিংবা পাটারীর হাট এলাকা দিয়ে।
একমাত্র স্থান হিসেবে রামগতি উপজেলা সংলগ্ন মেঘনার পাড়ে গেলেই আপনার মনোজগত আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠবে। মন চাইবে আপন শরীর খানি মেঘনার জলে ভেজাতে। লোক লজ্জায় তা সম্ভব না হলে চরন দু’খালি ভেজাবেন নিশ্চয়। মেঘনা জল হাতে নিয়ে ধন্য হতে চাইবেন নিশ্চয়। রামগতি উপজেলা সংলগ্ন এ মেঘনা পাড়ের মাত্র সাড়ে তিন কিলোমিটার জায়গাটুকুই আপনার নির্মল আনন্দের খোরাক হবে। আমি নিশ্চিত এ এলাকা দিয়ে স্বজন সমেত আপনার ঘুরে বেড়ানো আপনাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে বাঁধন হারার দেশে। দারুন এক স্মৃতি হবে আপনার। হয়তো অনাগত দিনে কোন এক ঔরসজাত কিংবা পরবর্তী প্রজন্মকে বলে বেড়ানোর মতো বিষয় অর্জিত হবে আপনার।
আপনার জানার কথা। রামগতি-কমলনগর মিলে মেঘনার ভাংগন কবলিত প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকা। রামগতি উপজেলা সংলগ্ন এ এলাকার সাড়ে তিন কিলোমিটার বাদ রেখে অন্য যে কোন স্থান দিয়েই আপনী মেঘনা দর্শনে যান না কেন আপনাকে ভাবতে হবে, কাঁদতে হবে। বিচলিত হতেই হবে আপনাকে। আপনী যদি মেঘনার ভাংগনের তান্ডবলীলা দেখতে চান অবশ্যই আপনাকে যেতে হবে রামগতি বাজার (পশ্চিম পাশ্ব), বিবিরহাট, রামদয়াল বাজার (চর আলগী), বাংলাবাজার, পাটারীরহাট, সাহেবের হাট, হাজীরহাট কিংবা লুধুয়া দিয়ে। এসব স্থানে গেলেই আপনী রামগতি কমলনগর উপজেলার নাগরিক হিসেবে হয়তো মনে মনে রাষ্ট্রযন্ত্রকে অভিসাপ দেবেন। নিজেকে অচ্ছুত ভাববেন। নিজেকেই নিজে গালি দেবেন মনের আগোচরে। অবহেলিত জনপদের নাগরিক হয়েছেন বলে রাগে গদগদ করবেন। নিজের অনাগত জীবনের কথা ভেবে চিন্তিত হবেন। ভাববেন হয়তো বেশি দিন দুরে নয়, এভাবে ভাংগতে থাকলে বছর কয়েক লাগবে আপনার আবাস্থল পর্যন্ত পৌছতে।
আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্য মো: আবদুল্ল্যাহ (আল মামুন) অনেক চেষ্টা তদবির করে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার নদী ভাংগনরোধের কাজ ভাগিয়ে এনেছেন। রামগতি কমলনগরের বিস্তৃর্ন বিশাল এলাকা ভাংগনের তুলনায় এ সামান্য পরিমান কাজ নগন্য। অনেকটা বালির বাঁধের মতো। বহু বছর ধরে কেউ যা পারেননি তা পেরেছেন আমাদের সাংসদ। আজন্ম কৃতজ্ঞ আমরা তাঁর কাছে। কাজ শুরু হয়েছে রামগতি উপজেলা সংলগ্ন এলাকায়। এখানে কাজ হবে সাড়ে তিন কিলোমিটার। কমলনগরের হাজীরহাট দিয়ে কাজ হবে এক কিলোমিটার। রামগতি বাজার দিয়ে অবশিষ্ট্য এক কিলোমিটার। সর্বমোট পাঁচ কিলোমিটার কাজ হবে শুনলে বা দেখলে আপনার আমার সকলের ভালো লাগে, লাগবে। সেই ভালো লাগাটা নিমিষেই উবে যাবে অন্যত্রই।
মেঘনার ভাংগন রোধে পাঁচ কিলোমিটার বাঁধ তথা দুইশত কোটি টাকার কাজের মতো অসামান্য অবদান রাখায় মাননীয় সংসদ সদস্য মো: আবদুল্ল্যাহ (আল মামুন) কে কৃতজ্ঞতার পাশাপাশি রামগতি-কমলনগরের অন্যান্য ভাংগন কবলিত এলাকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করার বাজেট অনুমোদনের জন্য মাননীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষনে জোরালো ভূমিকা রাখি। আপনাকে অবশ্যই স্বীকার করতেই হবে যে, রামগতি-কমলনগরের কোন স্থানই কম গুরুত্বপূর্ন নয়। পুরো রামগতি কমলনগর রক্ষা হলেই কেবল আমাদের রক্ষা, অন্যথায় নয়।
চলমান বর্ষায় ভাংগনের পরিমান ক্রমশ:ই বাড়ছে। বাঁধের আশপাশের এলাকাসহ অন্যান্য সকল এলাকায় প্রচুর ভাংগছে। ভাংগনের মুখে আছে বহু স্থাপনা, বাড়ি ঘর, জনপদ। আসুন আবার ঝাপিয়ে পড়ি আপন ভুমি রক্ষার মিছিলে। বিক্ষিপ্ত ভাবে নয়, সমবেত ভাবে গড়ে তুলি ফ্ল্যাটফর্ম। যে যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখি।
মেঘনার ভাংগন রোধে বিশেষ ভূমিকা রাখছে রামগতি-কমলনগরের প্রতিটি অনলাইন ব্যবহারকারী। তাই প্রতিটি অনলাইন ইউজার নিজেদের কার্যক্রম অনলাইনে একীভূত করার অভিপ্রায়ে হ্যাশ (#) ট্যাগ ব্যবহার করি। জোরদার ও সংগঠিত করি নিজেদের। নিজেদের অনলাইন উপস্থাপনাকে প্রসারিত করি দেশ বিদেশ।
হ্যাশ (#) ট্যাগের নিয়ম ও লেখা :#SaveRamgoti #SaveKamalnagar #ErosionLakshmipur
অনলাইনে আপনার যে কোন লেখা, পোস্ট, ছবি, শেয়ার, কমেন্টস্, ভিডিও আপলোডের আগে বা পরে এ হ্যাশ (#) ট্যাগ ব্যবহার করুন।
লেখক: ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক,রামগতি
0Share