রায়পুর: রায়পুর উপজেলার ছয়টি মাছঘাটের প্রায় সাত হাজার জেলের কাছ থেকে অবৈধভাবে প্রতিদিন ৬ শতাংশ হারে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। জেলেদের অভিযোগ, সরকারদলীয় কয়েকজন নেতা এই চাঁদা তুলছেন। মেঘনা নদীর পাড়ে হাজীমারা, চরকাছিয়া পানিরঘাট, গোলগুইলা, বেড়ির মাথা, মিয়ার হাট ও কানি বগার ঘাটের জেলেদের এই চাঁদা দিতে হচ্ছে।
জেলেরা বলেন, সরকার আগে হাজীমারা, গোলগুইলা ও বেড়ির মাথা ঘাট ইজারা দিত। মাছঘাটের ইজারা তুলে দেওয়ার পর এলাকার ঘাটগুলো দখল করে নেন প্রভাবশালী বা রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমল থেকে খাজনার নামে জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর ঘাটে চাঁদাবাজির কথা শোনা যায়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পর আবার চাঁদা আদায় শুরু হয়। এখন ঘাটে ১০০ টাকার মাছ বিক্রি করলে ৬ টাকা চাঁদা দিতে হয়।
হাজীমারা ও চরকাছিয়া পানিরঘাটের জেলেদের অভিযোগ, দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন মোল্লা ও উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খালেদ হোসেন দেওয়ানসহ কয়েকজন নেতা ঘাটগুলো দখল করে নিয়েছেন।
চরবংশী গ্রামের দুই জেলে বলেন, ছয়টি ঘাটে প্রায় সাত হাজার জেলে আসেন। এতে প্রতিদিন ছয় ঘাট থেকে কমপক্ষে এক লাখ টাকা আদায় হয়।
মৎস্য কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ১৯৯৯ সালে তৎকালীন সরকার হাজীমারা, গোলগুইলা ও বেড়ির মাথা ঘাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের আওতায় নেয়। করপোরেশন খাজনা আদায়ের জন্য একজন কর্মকর্তাসহ আটজন কর্মচারী নিয়োগ দেয়। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সন্ত্রাসীরা মাছঘাটগুলোতে হামলা চালায়। এরপর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা থানায় ডায়েরি (জিডি) করে ঢাকায় ফিরে যান। এরপর সন্ত্রাসীরা ওই তিনটি মাছঘাটের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং আরও তিনটি ঘাট বসায়। এসব ঘাটে জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের নেতা জাকির হোসেন মোল্লা ও খালেদ হোসেন দেওয়ান বলেন, ঘাটে আড়তদারি ব্যবস্থায় মাছ কেনাবেচা হচ্ছে। এ জন্য জেলেদের কাছ থেকে মাছ বিক্রির ওপর তাঁরা কমিশন নেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন জানান, ইজারা প্রথা বাতিলের পর থেকে ঘাটে খাজনা আদায় অবৈধ। মাছ বিক্রি করলে জেলেদের কাছ থেকে কমিশন নেওয়া অন্যায়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র ইসমাইল খোকন বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। কোনো নেতা এটি করে থাকলে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।
সৌজন্য :প্রথমআলো
0Share