নিজস্ব প্রতিনিধি: কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কন্ট্রোলারের কক্ষে আটকে রেখে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার এক ছাত্রকে হাত-পা বেঁধে পিটানোর অভিযোগ উঠেছে। উত্তরপত্রে হাতের লেখার গরমিলের বিষয়ে সঠিক তথ্য না দেয়ার অভিযোগে ওই কার্যালয়ের ৬কর্মকর্তা-কর্মচারী
তাকে নির্যাতন করে বলে জানায় ভুক্তভোগী ছাত্র ও তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রের পক্ষে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
শনিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্র মেহেরাজ হোসেন রিফাত সাংবাদিককের এ অভিযোগ করেন। আহত ছাত্র রিফাত কমলনগর উপজেলার মতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের জেএসসি পরিক্ষার্থী ও একই উপজেলার চর সামছুদ্দিন গ্রামের মৃত আবি আবদুল্লাহ বাবুলের ছেলে।
ভুক্তভোগী ছাত্র জানায়, গত বছরের জেএসসি পরীক্ষায় ইংরেজী ২য়পত্র বিষয়ের পরীক্ষার উত্তরপত্র কেন্দ্রের বাইরে নিয়ে যাওয়ায় তাকে বহিস্কার করা হয়। সম্প্রতি স্ব-শরীরে উপস্থিত হওয়ার জন্য তাকে চিঠি দেয় কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ। গত ২৭ জুলাই সে তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কুমিল্লা বোর্ড কন্ট্রোলার কায়সার আহম্মেদের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়। এ সময় উত্তরপত্রে লেখার গরমিলের বিষয়ে জানতে চাইলে, এক ক্লাসমিট তার উত্তরপত্রে লিখে দেয় বলে জানায় সে। এতে সন্তুষ্ট না হয়ে উত্তেজিত হন কন্ট্রোলার। এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষককে ওই কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে রিফাতের হাত পা বেঁধে লাথি ঘুষি ও পিটিয়ে আহত করে কন্ট্রোলারসহ ৬/৭জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রথমে জেলা শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতাল ও পরে শনিবার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মতির হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আলম জানান, উত্তরপত্রের লেখা সর্ম্পকে জানতে চাইলে ওই ছাত্র জানায় তার এক ক্লাসমিট তার উত্তরপত্রে লিখেছে। এতে সন্তুষ্ট না হয়ে কন্ট্রোলার কায়সার তাকে কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে ওই ছাত্রকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মারধর করেন।
রিফাতের মা পারভীন আক্তার জানান, তার ছেলেকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্নস্থানে একাধিক জখমের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতী নিচ্ছেন। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. আনোয়ার হোসেন জানান, তার শরীরে আঘাতের একাধিক চিহ্ন রয়েছে। এক্সরেসহ কিছু চেকআপ করতে দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট দেখলে জখমের বিস্তারিত বলা যাবে।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কন্ট্রোলার কায়সার আহম্মেদ জানান, ওই ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগ সত্য নয়। ২৭ জুলাই কয়েকজন ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সবার শেষে মেহেরাজ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। উত্তরপত্রে লেখার বিষয়ে প্রথমে এসে এক ক্লাসমিটের কথা জানায়। পরে সুমন নামে এক শিক্ষকের কথা বলে।
এদিকে আহত রিফাতকে হাসপাতালে দেখতে এসেছিলেন কমলনগর থানার হাজিরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, ‘ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ পেয়েছি আমরা। এ কারণে হাসপাতালে আহত ছাত্রকে দেখতে এসেছি। পরে তদন্তকাজ শুরু করব আমরা।’
0Share