নিজস্ব প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর: বর্তমান সরকারের পূর্ণ মেয়াদ শেষে নির্বাচন হলে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগে তিন মাসের মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে এত দূরের ভোটকে সামনে রেখে সরগরম হয়ে উঠছে দেশ ও লক্ষ্মীপুর জেলা। প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নেমে পড়েছেন গণসংযোগে। দলীয় কর্মসূচির পাশাপাশি সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন তাঁরা।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্মীপুর জেলার হাওয়া নিয়ে আমাদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনে আজ রায়পুরে আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হারুনুর রশীদ কে নিয়ে প্রতিবেদন। আগামী পর্বে থাকছে রামগতি-কমলনগরের সম্ভাব্য আওয়ামীলীগের একজন প্রার্থী নিয়ে প্রতিবেদন। পর্যায়ক্রমে বিএনপি ও জাতীয়পাটির্র সম্ভাব্য প্রার্থীদের কে নিয়ে ও আসছে প্রতিবেদন ।
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পরিচিত নাম হারুনুর রশিদ (সাবেক এমপি)। ১৯৯৬ সালে উপনির্বাচনে বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ব্যরিস্টার মওদুদ আহম্মেদকে পরাজিত করেন আঃলীগের প্রার্থী হারুনুর রশীদ। ফলে বহু বছর পর লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) আসন আওয়ামীলীগের কব্জায় আসে। তিনি আধুনিক রায়পুরের জনক হিসেবে পরিচিত পেয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর আঃলীগ নেতাদের মধ্যে একমাত্র হারুনুর রশিদ ই কেন্দ্রীয় আঃলীগ নেতা হওয়ায় সুযোগ পেয়েছেন। এতে তার উপদেশ ও পরামর্শেই চলছে লক্ষ্মীপুর আঃলীগ। সাবেক এমপি হিসেবে হারুনুর রশিদ ছিলেন ” মি.ক্লিন ম্যান ” খ্যাত ব্যক্তি। প্রত্যন্ত এলাকায় তার উন্নয়ন এখনো মানুষের মুখে মুখে।
প্রধানমন্ত্রীর আগাম নির্বাচনী প্রচারণায় একাদশ সংসদ নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাসে ফের সক্রিয় হয়েছেন বাংলাদেশ আঃলীগ এর যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক কেন্দ্রীয় নেতা ও আবহানী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হারুনুর রশিদ। নৌকার প্রার্থী জানান দিতেই ইতোমধ্যেই মেয়র নির্বাচন, ইউপি নির্বাচন, বিভিন্ন দিবসে জনসভা, জনসংযোগ, সমাবেশ সব জায়গায় নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছেন হারুনুর রশিদ। বাফুফের সাবেক সফল সাঃসম্পাদক হিসেবে পরিচিত হারুনুর রশিদ ইতোমধ্যেই নিজ উপজেলায় ক্ষুদে ফুটবলার তৈরিতে নিয়েছেন ব্যাপক কর্মসূচি। এলাকার প্রতিটি দলীয় প্রোগ্রামের প্রধান অতিথি হয়ে নিজকে আগামী নির্বাচনের শক্তিশালী প্রার্থীর জানান দিচ্ছেন।
লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরের সাথে আলাপ কালে তিনি জানান, ১৯৯৬ সালের পর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী মোহাম্মদ আলী খোকন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কারণে তার দলীয় ভোট ভাগ হয়ে তিনি চারদলীয় ঐক্যজোট প্রার্থী আবুল খায়ের ভূঁইয়ার ধানের শীষের কাছে হেরে যান। তার দাবী সে সময়ে আঃলীগের এক ডজন নেতা নৌকার বিপক্ষে ভোট করে।
তবে দশম জাতীয় নির্বাচনে সংবিধান রক্ষার নির্বাচন হওয়ায় এ আসনটি জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ নোমান কে ছেড়ে দেয় আঃলীগ। যদিও সেই নির্বাচনে আঃলীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন এসেনশিয়াল ড্রাগনের এমডি ড.এহসানুল কবির জগলুল।
লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরের সাথে আলাপ কালে উন্নয়ন ও স্বপ্নের ফিরিস্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি সাংসদ থাকা কালীন দালাল বাজার হয়ে রায়পুর এবং খাসের হাট হয়ে গ্যাস সঞ্চালন লাইন সংসদে পাশ করিয়ে ছিলাম। স্বপ্ন ছিলো রায়পুর উপজেলায় গ্যাস আসলে অনেক উন্নত হবে, বেকারত্বের অবসান হবে, মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়বে। কিন্তুু স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে আবারো আঃলীগ কে ক্ষমতায় আনতে হবে, নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে হবে। এই গ্যাস আমি আমাদের সরকারের ২০০১ এর শেষ সময় আদায় করেছিলাম। আমরা ক্ষমতা হস্তান্তর করার পর বিএনপি তা স্থগিত করে তৎকালীন মন্ত্রী মরহুম জিয়াউল হক জিয়া ও খায়ের ভূইয়ার অসহযোগিতার কারনে লক্ষ্মীপুর-২ এর জনগন গ্যাস বঞ্চিত হয়। ঐ গ্যাস লাইন চলে যায় রামগঞ্জে। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ইতোমধ্যেই চাঁদপুর থেকে রেল লাইন, সড়ক চার লেনের জন্য প্রধানমন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী মহোদ্বয়কে অনুরোধ করেছি। খেলাধূলার উন্নয়নে আমি ইতোমধ্যেই জেলা ওয়ারী কোচ নিয়োগ দিচ্ছি। বর্তমান এমপি নোমান সাহেব এর সাথে ভালো সম্পর্ক আছে তিনি জানান। জনাব নোমান সাহেব ইচ্ছে করলে একটি কলেজ জাতীয়করন, মডেল মসজিদ, মেইনরোডে রাস্তাটি দ্রত সংস্কার করে জনগনের ভোগান্তি লাগবে সচেষ্ট হতে পারেন বলেও তিনি জানান।
রায়পুর পৌরসভা, পানির ট্যাংকি, বিভিন্ন ব্রীজ, রাস্তাসহ অনেক উন্নয়ন এখনো জনগনের মনি কোঠায় রয়েছেন জনাব হারুন। আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলহাজ্ব মোঃ হারুনুর রশিদের আগাম প্রচারণা ও জনসংযোগ নিয়ে দীর্ঘক্ষন আলাপনে তিনি জানান, আমি লুটপাটে, দূর্নীতিতে বিশ্বাসী না। আমি প্রথম বার সাংসদ হয়ে কে বিএনপি, কে আঃলীগ, জাতীয় পার্টি করে এগুলো দেখে উন্নয়ন করিনি।
তিনি রায়পুরে নতুন নতুন আঃলীগ নেতাদের সর্ব প্রথম প্রাথমিক সদস্য পদ পূরন করে আঃলীগের রাজনীতিতে আসার অনুরোধ করেন। দলীয় ফোরামে আলাপ আলোচনা না করে, টাকা পয়সা, কোন উপটোকন দিয়ে দলের নেতা কর্মীদের বিভক্তি, বিভেদ, কোন্দল তৈরি না করতে অনুরোধ ও জানান তিনি।
সব শেষে তিনি লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর কে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে যোগ্যতার ভিত্তিতে, উন্নয়ন এর স্বার্থে নৌকা প্রতীক তুলে দিবেন লক্ষ্মীপুর -২ (রায়পুর) এর আঃলীগ এর নেতা কর্মীরা তার পক্ষেই কাজ করবেন। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে আঃলীগে কারো নির্বাচন করার সুযোগ নেই। কারন রায়পুর উপজেলা আঃলীগ ঐক্যবদ্ধ।
লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সব সময় আপডেট থাকুন । লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন।
0Share