নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা-Mora’ বর্তমান অবস্থান থেকে আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর ও উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার (৩০ মে) বিকেল অথবা সন্ধ্যার দিকে চট্টগ্রাম-নোয়াখালী উপকূল অতিক্রম করতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে [dropcap]৭ নম্বর[/dropcap] বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলের অন্যান্য জেলার সাথে লক্ষ্মীপুরের বিশেষ করে রামগতি, কমলনগর, রায়পুর এবং সদরের চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর।
এদিকে সোমবার দুপুর থেকে জেলার রামগতি, রায়পুর, কমলনগর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে উপকূলীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় মোরা মোকাবেলায় লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। খোলা হয়েছে ১০১টি আশ্রয় কেন্দ্র । স্বেচ্ছাসেবীদের সহযোগিতায় ইঞ্জিল চালিত নৌকা দিয়ে উপকূলীয় এলাকার লোকজনদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হচ্ছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি।
এছাড়াও লক্ষ্মীপুরে দুর্যোগ মোকাবেলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। যেকোন জরুরী প্রয়োজনে ০১৭৮৮৫৭৭৭২০, ০১৭৮৮৫৭৭৭২১, ০১৭৮৮৫৭৭৭২৭, ০৩৮১৬২৪৮৩ নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে অনুরোধ করা হয়।
এছাড়া যে কোন মোবাইল ফোনে ১০৯৪১/১০৯০ ডায়ালের পর ৪ ডায়াল করে ঘূর্ণিঝড়ের সর্তক সংকেত বিনা মূল্যে শোনা যাচ্ছে।
সোমবার দুপুরে কমলনগর ও রামগতিতে মেঘনা তীরবর্তী এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে এলাকাবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে আসার জন্য। উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে খোলা হয়েছে সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। রামগতি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় উপজেলার বিভিন্ন বিভাগীয় কর্মকর্তা এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জানিয়ে উপজেলার মেঘনা উপকূলীয় ইউনিয়ন চরআলেকজান্ডার, চরআলগী, চররমিজ ও বড়খেরী ইউনিয়নে মাইকিং করা হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
কমলনগর উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, মেঘনা উপকূলীয় ইউনিয়ন চরকালকিনি, সাহেবেরহাট, চরফলকন ও পাটারীরহাটে মাইকিং করানো হচ্ছে।
ওইসব এলাকায় সাইক্লোন শেল্টারগুলো প্রস্তুত রাখা পাশাপাশি তার কার্যালয়ে খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) রামগতি ও কমলনগর উপজেলা টিমলিডার জানান, যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি রামগতি ১০১ ইউনিটের এক হাজার ৫১৫ জন এবং কমলনগর উপজেলার ৬৩ ইউনিটের ৯৪৫ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন।
0Share