নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামের ন্যায় পুরো লক্ষ্মীপুর জেলায় প্রতিদিনই শতশত শিশু ও নারী, পুরুষ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন।ঈদুল ফিতরের পর লক্ষ্মীপুর জুড়ে জ্বরের আক্রান্ত রোগী বাড়ছে বলে জানান অনেকে। এ সকল রোগীর প্রায় প্রত্যেকেরই চিকুনগুনিয়া হওয়ার লক্ষণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ফলে গ্রামের মানুষও এ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন।তবে এর মধ্যে জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাই বেশি। আক্রান্ত অধিকাংশ রোগী কোন হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলেন জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন।গণমাধ্যম কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে চিকুনগুনিয়ার প্রভাব থাকতে পারে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
লক্ষ্মীপুরে গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে প্রায় শতাধিক জ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ ও কমলনগর হাপাতালে প্রতি বেডে এবং ফ্লোরে রেখেও শিশুদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন বিভিন্ন হাসপাতালে ৮০-১০০ রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ প্রতিবেদকের দু মেয়েবেসহ পরিবারের ৫জন ধারাবাহিক ভাবে গত এক সপ্তাহ থেকে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। কমলনগরের চর লরেঞ্চ, তোরাবগঞ্জসহ ৩টি গ্রামের জ্বরে আক্রান্ত ২০ জন রোগী এবং পল্লী চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অধিকাংশ রোগীর জ্বরের মাত্রা ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠেছে। জ্বরের সঙ্গে বমি হয়েছে কয়েকজনের। মাথাব্যথা, গিঁটে গিঁটে ব্যথাও অনুভব করেছেন তারা।
কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মীর আমিনুল ইসলাম মঞ্জু জানান, চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হলেও ভয়ের কিছু নেই। জ্বর কমে গেলেও অনেক দিন ধরে ব্যথা থাকতে পারে। এটা সবার জানা থাকা জরুরি। কিন্তু চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সন্দেহ হলেও ‘চিকুনগুনিয়া’ শনাক্তকরণে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে দৌড়ঝাঁপের কোনো দরকার নেই।
চিকিৎসকরা জানান, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে রাজধানীতে ভাইরাসটির ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এর পর থেকে নগরজুড়ে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে এপ্রিল, মে ও জুন মাসে চিকুনগুনিয়া ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে জ্বর সেরে গেলেও শরীরে ব্যথা থাকছে দীর্ঘ সময়।
ভাইরাসজনিত জ্বর চিকুনগুনিয়ায় গিঁটে গিঁটে প্রচণ্ড ব্যথা, মাথাব্যথা, বমিবমি ভাব, চামড়ায় লালচে দানা, মাংসপেশিতে ব্যথা হয়। এডিস মশার কামড়ে ছড়ায় এটি। সাধারণত দিনের বেলা এই মশা কামড়ায়। তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে জ্বর ভালো হলেও ব্যথা থাকে দীর্ঘ সময়। এ রোগ-প্রতিরোধে কোনো ভ্যাকসিন নেই।
রোগীকে বিশ্রামে রাখার পাশাপাশি প্রচুর পানিসহ অন্য তরল খাবার খেতে দিতে হবে। জ্বর হলে খাওয়াতে হবে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ। সেই সঙ্গে বারবার পানি দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। আক্রান্ত রোগীকে রাখতে হবে মশারির ভেতর। কেননা, রোগীকে কোনো মশা কামড় দিয়ে অন্য সুস্থ লোককে কামড়ালে তিনিও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন।
0Share