নিজস্ব প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে মাধব সরকার নামে এক চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় শিশু তাওহীদের (৭ মাস) ডান হাতে পঁচন ধরেছে। গত ৭ আগস্ট শিশুটির হাতে ইনজেকশন দেওয়ার জন্য ক্যানালা লাগানো হয়। এ সময় ভুল স্থানে ক্যানালা লাগানোর কারণে হাত ফুলে উঠে ও ফোসকা ফুটে। পরদিন শিশুটিকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে অবস্থার আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় প্রেরণ করে। পরে ১০ আগস্ট তাওহীদকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক আইয়ুব আলীর অধীনে শিশুটির চিকিৎসা চলছে। শিশু তাওহীদ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার লামচরী এলাকার মো. ইব্রাহিমের ছেলে। অভিযুক্ত ভূয়া চিকিৎসক মাধব সরকার শহরের গোডাউন রোডস্থ সরকার মেডিকেল হলের স্বত্ত্বাধিকারী। ক্ষতিগ্রস্ত শিশুর বাবা ইব্রাহিম বলেন, ঠান্ডাজনিত রোগে তাওহীদকে লক্ষ্মীপুরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ইব্রাহিম খলিলের কাছে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়ে। তার চিকিৎসা অনুযায়ী ইনজেকশন দেয়ার জন্য ৭ আগস্ট মাধবের কাছে শিশুটির হাতে ক্যানালা লাগানোর জন্য নেয়া হয়েছিল। এ সময় ভুল স্থানে ক্যানালা স্থাপন করা হয়।
পরদিন তার হাত ফুলে উঠে ও ফোসকা ফুটে। পরে সদর হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে গেলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা প্রেরণ করা হয়। ঢাকা শিশু হাসপাতালে ১১ দিন ভর্তি থেকে চিকিৎসা দিয়ে কিছুটা উন্নতি হলেও ক্যানালা স্থাপনের জায়গায় পঁচে গর্ত হয়ে রয়েছে। আগামি শনিবার তাওহীদকে পুনরায় চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ঢাকা হাসপাতালে নেওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বিষয়টি দেখালে তারা শিশুটির বাবাকে জানান ক্যানালা ভুল স্থানে স্থাপন করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাছানুজ্জামান রাসেল বলেন, শিশুটির হাতে ক্যানালা ভুল স্থানে স্থাপন করা হয়েছে বলে তার বাবা আমার কাছে অভিযোগ করেন। তবে ক্যানালা স্থাপনে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়নি বলে জানান মাধব। অভিযুক্ত ভূয়া চিকিৎসক মাধব সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ক্যানালা স্থাপনে কোন সমস্যা হয়নি। বাড়িতে তারা ইনজেকশন দিয়ে এ সমস্যা সৃষ্টি করেছে বলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আনোয়ার হোসেন জানান, ক্যানালার কারণেই এ সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। অথবা ক্যানালা ব্লক হলে ইনজেকশন দিলে এমন অবস্থা ঘটতে পারে বলে জানান তিনি।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি খুব দুঃখজনক। পরিবার পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
0Share