তাবারক হোসেন আজাদ, রায়পুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে প্রায় দু’শ গ্রাহক ও ১৬ জন মাঠ কর্মীদের কাছ থেকে জামানত প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে বাংলাদেশ মহিলা সংস্থা নামের এনজিও উধাও হয়ে গেছে।মঙ্গলবার বিকালে ওই কার্যালয়ের সামনে তাদের টাকা ফেরতের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ শেষে ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের পক্ষে হায়দরগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী মোঃ আনাস বাদি হয়ে ফাঁড়ি থানায় ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
মঙ্গলবার ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী মোঃ আনাস, মাঠকর্মী জাহাঙ্গীর, মানিক, মহিন ও গ্রাহক সেলিনা, জাফর, শাহিনুর, মাহমুদা বেগম, জাহাঙ্গীর হোসেন, আমেনা বেগমসহ গ্রাহকরা জানান, প্রায় ৩ মাস আগে হায়দরগঞ্জ বাজারে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ইউসুফ মিজির বাড়িতে একটি সাদা কাগজে দস্তখত দিয়ে হায়দরগঞ্জ বাজারের পূর্বপাশে মিঝি বাড়ীতে ইউচুপ মিঝির দ্বিতল বভনের নিচতলা পুরোটা ভাড়া দেন দুই বছরের মেয়াদের জন্য বাংলাদেশ মহিলা সংস্থা নামের যাহার (গভঃ রেজি নং- সি-০৫১৫-ঢ-২৪২৬, প্রধান কার্য্যলয়ঃ ৫০, কবি নজরুল ইসলাম রোড, পিরিঙ্গী বাজার, চট্টগ্রাম) বাংলাদেশ মহিলা সংস্থা নামক এনজিও ম্যানেজার মাসুদ রানা ভাড়া নেন। তখন ৩০-৪০ হাজার টাকা করে জামানত নিয়ে ১০ হাজার টাকা বেতনে প্রায় ২০ দিন আগে ১০ জন পুরুষ ও ৬ জন মহিলা কর্মী নিয়োগ দেয়। এছাড়াও জমা দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন দেয়ার লোভ দেখিয়ে ২শ’ গ্রাহকের কাছ থেকে ১০-৩০ হাজার টাকা করে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আদায় করেন। সোমবার বিকেলে মাঠ কর্মীরা ওই কার্যালয়ে গিয়ে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পেয়ে ম্যানেজারকে ফোন দিলে ফোন বন্ধ পায়।
ঘটনা জানাজানি হলে শতাধিক নারী-পুরুষ তাদের আমানত ফেরৎ পাওয়ার লক্ষে ওই কার্যালরে সামনে মঙ্গলবার বিকেলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। অনেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
অভিযুক্ত বাংলাদেশ মহিলা সংস্থার ম্যানেজার মাসুদ রানার ০১৮২৬৮০৬১১৪ ও ০১৭১৬৬৮১৯৮৮ নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়াও বাড়ির মালিক ইউছুফ মিজি জানান, তারা সাদা কাগজে দস্তখত দিয়ে ৩ মাস আগে বাসা ভাড়া দেই। জাতীয় পরিচয়পত্র সহ তাদের সংস্থার কাগজপত্র দিবো দিচ্ছি বলে কালক্ষেপণ করে আসছিল।
হায়দরগঞ্জ ফাঁড়ি থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল মজিদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গ্রাহকদের পক্ষে আনাস নামে হায়দরগঞ্জ বাজারের এক ব্যবসায়ী বাদী হয়ে ওই এনজিওর ম্যানেজার মাসুদ রানাকে অভিযুক্ত করে ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় অভিযোগ করেছেন। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করে সত্যতা পাই। এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় চর আবাবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল্লাহ বিএসসি জানান, গ্রাহকরা তাদের আমানতের টাকা ফেরত চেয়ে ও ঘটনার প্রতিকার দাবি করে আমাকে জানিয়েছেন। আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ফাঁড়ি থানাকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ মোতাছেম বিল্যাহ্ জানান, ঘটনাটি আমাদের কেহ জানায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0Share