রায়পুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় এলপি গ্যাস ওজনে কম ও অনেক সিলিন্ডারে পানি থাকায় প্রতারিত হচ্ছেন গ্রাহকরা। প্রত্যেকটি সিলিন্ডারে সাড়ে ১২ কেজি গ্যাস থাকার কথা থাকলেও বেশ কিছু অসাবধু ব্যবসায়ী ৯/১০ কেজি গ্যাস দিয়ে পুরো দাম নিচ্ছেন। আর প্রতিনিয়িত প্রতারিত হচ্ছেন গ্রাহকরা। এতকিছুর পরও যন্ত্রণার শেষ নেই। কম ওজনের গ্যাস সঠিক ওজনের গ্যাসের দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে চরম ভোগাস্তিতে গ্রাহক পড়লেও নীবর রয়েছে প্রশাসন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, লাইনের গ্যাসের কোন ব্যবস্থা না থাকায় শুধু পৌর শহরে বর্তমানে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার গ্রাহক গ্যাস ব্যবহার করছেন। ৮’শ থেকে এলপি গ্যাস দাম বাড়তে বাড়তে এখন ১২০০ টাকার বেশি হয়েছে। যদিও গত বছর গ্যাসের দাম দেড় হাজার টাকার ওপরে চলে যায়। সম্প্রতি তা’ কমে ১১৫০ থেকে ১২০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। সময়ের আবর্তে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে গ্যাসের দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু গ্যাসের দাম বৃদ্ধি যেভাবে হয়েছে তা’ দেশের অন্য কোন ব্যবহার্য্য পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে তা’ কখনোই হয়নি। একজন মানুষের মৌলিক অধিকারের জায়গা থেকে সঠিক মূল্যে সঠিক ওজনের গ্যাস পাওয়ার কথা। কিন্তু মানুষের সেই মৌলিক অধিকার কখনই আদায় হচ্ছে না রায়পুরের মানুষের ক্ষেত্রে।
সিলিন্ডারের মুখ সিল করা। দোকানির কথা মত ওজন সাড়ে ১২ কেজি নিশ্চিত হয়ে সিলিন্ডার এলপি গ্যাস কিনলেন নিলেন জাহাঙ্গীর আলম টিটু নামের এক ব্যক্তি। কিছুদিন ব্যবহার করার পর দেখা গেলো সিলিন্ডার থেকে আর গ্যাস বের হচ্ছে না। এতে তার সন্দেহ হয়। তিনি ক্রয়কৃত দোকানে সিলিন্ডার নিয়ে গেলে ওজন দিয়ে দেখা যায়, তার সিলিন্ডারে তখনও ৪ কেজির মত গ্যাস রয়েছে। তবে চুলা জ্বলছে না কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে দোকানি তাকে জানান, ওই ৪ কেজি তরল গ্যাস নয়, পানি রয়েছে। আপনার ভাগ্য খারাপ বলে দোকানি তাকে সান্তনা দেয়। দোকানি জানালেন, এভাবে বেশ কিছুদিন ধরে সিলিন্ডারে গ্যাসের সাথে পানি পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তাদের বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
নাজমা আক্তান নামের এক স্কুল শিক্ষিকা শহরের একটি দোকান থেকে একটি গ্যাস কিনে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে গ্যাস সিলিন্ডার ওজন করে দেখা যায় সিলিন্ডারসহ গ্যাসের ওজন ২৬ কেজি ৫০০ গ্রাম। ১৪ দিন ব্যবহারের পর শেষ হয়ে গেলে সিলিন্ডারটি ওজন দিয়ে দেখা যায় ১৬ কেজি ৮০০ গ্রাম। হিসেব অনুযায়ী ওই সিলিন্ডারে গ্যাস ছিল ৯ কেজি ৭০০ গ্রাম। অথচ থাকার কথা সাড়ে ১২ কেজি। দুই একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া এভাবে রায়পুরে বিভিন্ন দোকান থেকে গ্যাস কিনে প্রতারিত হচ্ছেন গ্রাহকরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিল্পী রানী রায় বলেন, গ্যাস সিলিন্ডারে পানিসহ ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ তাদের নজরে এসেছে। এসব বিষয় খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
0Share