সানা উল্লাহ সানু: সর্বশেষ ২০০৯ সালের পর সকল জল্পনা ও সমস্যা ডিঙিয়ে রবিবার (৪ মার্চ) লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের কার্য নির্বাহী পরিষদের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ৩ ঘন্টার এ নির্বাচন কে ঘিরে লক্ষ্মীপুরের সাংবাদিক সমাজে প্রত্যাশা অনেক। তাই দীর্ঘদিন পর নির্বাচন কে ঘিরে সাংবাদিকদের মধ্যে এক ধরেনের আমেজি প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যায় পর্যন্ত মিডিয়া পাড়া খ্যাত মোহাম্মদীয় হোটেল মোড় আর সাংবাদিক পাড়া খ্যাত রহমানিয়া প্রেস মোড়ে জমেছিল নির্বাচনী আড্ডা। প্রবীণ সাংবাদিকদের তুলনায় নবীনদের আমেজ যেন একটু বেশিই।
তবে ভোটার তালিকার কলবরে লক্ষ্মীপুরের সাংবাদিক সমাজে অতি পরিচিত অনন্ত আরো ৫-৭টি নাম যুক্ত হলে অতীতের যে কোন নির্বাচনের তুলনায় এটি আমেজি নির্বাচন হতো এমনটাই দাবি করছেন অনেক সাংবাদিক। তবুও সবাই চাচ্ছেন অনন্ত একটা নির্বাচন আগে হোক, পরে একটা সিদ্ধান্তে আসা যাবে। কারণ এ রকম একটি নির্বাচন পেতেও বহু বৈঠক পেরিয়ে আসতে হয়েছে লক্ষ্মীপুরের সাংবাদিক সমাজ কে। অপেক্ষা করতে হয়েছে ৯টি বছর।
সাংবাদিকদের কাংখিত এ নির্বাচনে রিটানিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে আছেন, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ডেপুটি কালেক্টর (রেভিনিউ ) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট ফাতেমা তুজ জোহরা। এবারের ভোটার তালিকায় ৭২ জন ভোটারের সামনে রয়েছে ৩৭ জন প্রার্থী।
১১টি পদের মধ্যে সভাপতি পদে ২জন, সহ-সভাপতি পদে ৪জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৪জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ৩জন, কোষাধ্যক্ষ পদে ২জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে ৪জন, ক্রীড়া ও সমাজসেবা পদে ৩জন, দপ্তর সম্পাদক পদে ২জন, প্রচার সম্পাদক পদে ৪জন ও কার্য নিবাহী সদস্য পদে ৯জন প্রার্থী রয়েছে।
জানা যায়, হাইকোর্টের একটি রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে গত (২০ ফেব্রুয়ারী) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়। সে আলোকে (২৫ ফেব্রুয়ারী) রোববার রিটানিং অফিসারের নিকট প্রেস ক্লাব নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়।
লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরের গবেষণা বিভাগের তথ্য থেকে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলাব্যাপী যে সকল প্রেসক্লাব রয়েছে এগুলোর মধ্যে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮১ সালে। প্রেসক্লাবের প্রথম প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন প্রবীন সাংবাদিক মরহুম আলহাজ্ব গোলাম রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আরেক প্রবীন সাংবাদিক এম এ মালেক। পরবর্তীতে আবদুল মান্নান ভূঁইয়া, মরহুম গোলাম রহমান, মরহুম জাকির হোসেন, মরহুম এম এ মঈদ, অধ্যাপক মাইন উদ্দিন পাঠান, মোঃ কামাল হোসেন, হোসাইন আহাম্মদ হেলাল, নাসির উদ্দিন মাহমুদ, আ হ ম মোশতাকুর রহমান, মোঃ কাউছার, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ সাংবাদিকগণ পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন সময়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
শুরুতে প্রেসক্লাবের কোন স্থায়ী ভবন না থাকলেও বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে নিজস্ব ভবন। তবে ভবন থাকলেও লক্ষ্মীপুর জেলার সাংবাদিকদের কে একত্রিত করে ধরে রাখার ইতিহাস খুব কমই আছে এ প্রতিষ্ঠানটির। অভ্যন্তরীন বিষয় নিয়ে এ প্রেসক্লাবের মামলা কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালে সাবেক জেলা প্রশাসক টিপু সুলতান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের উদ্যোগে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের অভ্যন্তরীন সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির সদস্যদের মাঝে ঐক্য দেখা যায়নি। ফলে একটি মাত্র প্রেসক্লাবের অভাবে লক্ষ্মীপুরের সাংবাদিকদের মাঝে ঐক্য গড়ে ওঠেনি।
0Share