সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর রবিবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এক বছরে কমলনগর রক্ষা বাঁধে ৬ বার ধস, এলাকাজুড়ে আতঙ্ক আর ক্ষোভ

এক বছরে কমলনগর রক্ষা বাঁধে ৬ বার ধস, এলাকাজুড়ে আতঙ্ক আর ক্ষোভ

এক বছরে কমলনগর রক্ষা বাঁধে ৬ বার ধস, এলাকাজুড়ে আতঙ্ক আর ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিনিধি: এক বছরের ব্যবধানে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মাতাব্বরহাট এলাকায় নির্মিত কমলনগর রক্ষা বাঁধে ৬ বারের মতো ধস নামে। রোববার(১৫ জুলাই) সকালে আকস্মিক এ ধসে বাঁধটির দক্ষিণ অংশের প্রায় ১০০ মিটারের বেশি এলাকার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে বাঁধের বাকি অংশ। এ নিয়ে গত এক বছরে ছয়বার ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন পুরো এলাকাবাসী। পাশাপাশি নিন্মমানের কাজের কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বিক্ষুব্ধ ও আতঙ্কিত স্থানীয়দের কয়েকজন জানায়, একসাথে বরাদ্ধ পাওয়া কমলনগরের পাশের রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডারে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে সাড়ে তিন কিলোমিটার বাঁধ সফলভাবে নির্মাণ হওয়ায় উপজেলা পরিষদসহ সরকারি-বেসরকারি কয়েকশ কোটি টাকার স্থাপনা রক্ষা পায়। সে বাঁধটি এখন পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। কিন্তু কমলনগরে এক কিলোমিটার বাঁধ বরাদ্দ হলেও সেনাবাহিনীকে দিয়ে না করিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করানো হয়েছে। আবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুলো হাত বদল ও পরবর্তীতে পাউবোর কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে নিম্নমানের কাজ করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

অন্যদিকে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু না হওয়ায় বাঁধের দুই পাশে ভাঙন চলছে। এতে বহু কষ্টে বরাদ্ধ পাওয়া ৪৮ কোটি টাকা পানিতে যেতে বসেছে।

বাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এক কিলোমিটার নির্মাণাধীন বাঁধের দুই পাশে অব্যাহতভাবে ভাঙছে। বাঁধের সীমানা ফেরিয়ে ভাঙন ভেতরে ঢুকে পড়েছে। এতে বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ছে। ধস ঠেকাতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বালুভর্তি কিছু জিওব্যাগ ডাম্পিং করতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানান, রোববার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ বাঁধের দক্ষিণ অংশে হাঠাৎ করে ধস নামে। ধসের কারণে বাঁধ ভেঙে ড্রাম্পিং করা জিও ব্যাগ ও ব্লকসহ প্রায় ১০০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বর্ষার শুরুতেই পানির চাপে বাঁধে এ ভাঙন দেখা দেওয়ায় বাঁধের পুরো অংশই এখন হুমকিতে রয়েছে। যে কারণে, বাঁধের আশপাশের এলাকায় বসবাসকারীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় সফিক তালুকদার, মোতাসিনমাঝিসহ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, বাধটি নির্মাণের শুরু থেকেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন অনিয়ম করেন। যথাযথভাবে জিও ব্যাগ ড্রাম্পিং না করে উল্টো নিম্নমানের বালু ও জিও ব্যাগ ব্যবহার করেন। এছাড়া নিন্মমানের ব্লক তৈরি কারে তা স্থাপনেও ব্যাপক অনিয়ম করেছেন। যে কারণেই বাঁধটির বিভিন্ন অংশে বারবার ধস নামছে বলে তারা অভিযোগ করেন। 

স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের জন্য ১৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। বরাদ্দকৃত টাকায় কমলনগরে এক কিলোমিটার, রামগতির আলেকজান্ডারে সাড়ে তিন কিলোমিটার ও রামগতিরহাট মাছঘাট এলাকায় এক কিলোমিটার বাধ নির্মাণ হওয়ার কথা। ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আলেকজান্ডার এলাকায় বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করে সাড়ে তিন কিলোমিটারের কাজ শেষ করে।

এদিকে ওই বরাদ্দের ৪৮ কোটি টাকায় কমলনগরে এক কিলোমিটার কাজ পায় নারায়নগঞ্জ ডকইয়ার্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। তার দুই বছর পর ২০১৬ সালের শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠানটি ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংকে দিয়ে কাজ শুরু করে। ওই বছর নিম্নমানের বালু ও জিওব্যাগ দিয়ে কাজ শুরু করায় স্থানীয়রা কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অনিয়মের প্রতিবাদে ওই সময় মানববন্ধন করা হয়। পরে একই বছরের ২৩ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বাঁধ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়।

রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডারে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে সাড়ে তিন কিলোমিটার বাঁধ সফলভাবে নির্মাণ হয়। কিন্তু কমলনগরে এক কিলোমিটার বাঁধ বরাদ্দ হলেও সেনাবাহিনীকে দিয়ে না করিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করানো হয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এজিএম মাসুদ রানা বলেন, কমলনগরের ভাঙন প্রতিরোধে এক কিলোমিটার বাঁধ যথেষ্ট নয়। তীর রক্ষা বাঁধের দুই পাশেই ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এতে নির্মাণাধীন বাঁধের ওপর প্রভাব পড়েছে। এছাড়া নদীতে জোয়ার ও পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এসবের কারণে বাঁধের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিক সংস্কার শুরু করেছি।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মুসা বলেন, এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের বাঁধ নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু তা অনুমোদন না হওয়ায় কাজ হচ্ছে না।

এদিকে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রজেক্ট ইনচার্জ নুরুল আফসার দাবি করেন, বাঁধ নির্মাণে কোনো অনিয়ম হয়নি। কার্যাদেশ অনুযায়ীই তারা কাজটি সম্পন্ন করেছেন।

লক্ষ্মীপুর নিউজ আরও সংবাদ

লক্ষ্মীপুরের গন্ধব্যপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মারামারি

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে কৃষি উপকরণ বিতরণ করলো কোডেক

উপকূলীয় অঞ্চলে শাক-সবজির বীজ বিতরণ করলো কোডেক

সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন: সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের

অল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে ফ্যাসিস্ট ষড়যন্ত্র আঘাত করতে পারে : এ্যানি

উপকূলের ক্ষতিগ্রস্থ ৩ হাজার কৃষক পেল প্রণোদনা, রবি প্রণোদনা পাচ্ছে আরো ৪ হাজার ৩৭৫জন কৃষক

লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে অনলাইন নিউজপোর্টাল প্রকাশনার নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত, তারিখ: 9/12/2015  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2024
Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu
Ratan Plaza(3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com