জুনাইদ আল হাবিব: চলতি বছরের ২৮মে(সোমবার) সাগরে ইলিশ শিকার করতে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়া ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ হন লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের ১৩জন জেলে। ঘটনার সাড়ে চার মাস সময় পার হতে চললেও এখনও সন্ধান মিলেনি তাদের। এতে একদিকে স্বজনরা যেমন তাদের অপেক্ষায় আছেন, অন্যদিকে এসব পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছেন। আয়ের একমাত্র উৎসে থাকা এসব পরিবারের সদস্যদের সন্ধান না মেলায় আর্থিকভাবে মারাত্মক দুশ্চিন্তায় ভুগছে স্বজনরা।
নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে আবু মাঝি (৫৬), তার ছেলে জাহেদুল ইসলাম (২২) ও মেয়ের জামাই মো. শরীফসহ (২৬) নিখোঁজ হন। অন্য জেলেরা হলেন মো. কাঞ্চন(৫০), আবুল বাশার(২৫), নুরুল ইসলাম(৫০), কাঞ্চন হোসেন(৬০), মো. সেলিম (৪০), মো. কামাল (৩৫), মাইন উদ্দিন ( ৪০), সালাহ উদ্দিন(৪০), স্বপন (২২), হৃদয় (২৫)।
নিখোঁজ জেলে আবু মাঝির স্ত্রী বলেন, “সাগরে যাওয়ার আগে বাড়িতে ফোন করে দোয়া চেয়ে বলেছে নামাজ পড়ে দোয়া করতাম। তুফানের মধ্যে পড়ে ট্রলার ডুবে যাওয়ার পর কারো খোঁজ পাইনি। শুনেছি, প্রথমে আমার স্বামী সাগরে পড়ে গেলে ছেলেও বাপের জন্য লাফ দিয়ে সাগরে পড়ে যায়। পরে গোটা সাবার ডুবে যায়।
অন এক্কারে খুব কষ্টে দিন কাড়াই। এখনও পর্যন্ত কোন ক্ষতিপূরণ পাইনি। ছোট ছেলেটার পড়ালেখা বন্ধ করে তাকে কাজে দিছি। এভাবেই এখন চলি। বিকল্প কোন রাস্তা নাই। মাইয়ার জামাইটাও নিখোঁজ হওয়ার কারণে তাঁর সংসারেও অভাবে যাইতাছে। আমাদের মতো সবার একই অবস্থা। ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া নাই। কখন তারা ফিরে আসবে সেই অপেক্ষায় সবাই।”
ট্রলারের মালিক বরগুনার পাথরঘাটার আবুল কালাম জানান, জেলেরা নিখোঁজের পর থেকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। ঘটনা ঘটেছে ভারতের সীমানায়। এজন্য ভারতে গিয়েও খোঁজ নিয়েছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমরা তাদের কোন খোঁজ পাইনি। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা থানায় জিডি করেছি।”
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরকে বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ মিলেনি। তাই এ সম্পর্কে আমি অবগত না। ক্ষতিগ্রস্থ জেলেদের পক্ষ থেকে যদি কোন আবেদন আসে তাহলে যে কোনভাবেই হোক ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে দেব।
0Share