ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর জন্য লক্ষ্মীপুরসহ দেশের ৫ জেলায় ৬ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। এছাড়া উপকূলীয় আরো ৯ জেলায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছে। তবে কক্সবাজার থাকবে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেতের আওতায়। এসব অঞ্চলের লোকজনকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আব্দুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতের মধ্যে বুলবুল বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। এ কারণে ৫-৭ ফুট পর্যন্ত উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
যেসব জেলায় ৬ নম্বর বিপদ সংকেত
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল ও মুন ফেজ-এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
যেসব জেলায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত
মোংলা ও পায়রা বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
লক্ষ্মীপুরে প্রস্তুতি সভা
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরে প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি রোধে সরকারি-বেসরকারিভাবে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পালের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ সফিউজ্জামান ভূইয়া, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকতা মো. মাহফুজুর রহমান, প্রেস ক্লাব সভাপতি কামাল উদ্দিন হাওলাদার, সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুর রেদোয়ান আরমান শাকিলসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিরা।
জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেন, ‘জেলার প্রতিটি উপজেলা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগকে প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে মেডিকেল টিম গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সকল ধরনের নৌ-যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যার নাম্বার ০৩৮১৬২৪৮৩ ও ০১৭১১৯০৫৯৯৪। তাছাড়া সার্বক্ষনিক প্রতিটি থানায় পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করবে। এছাড়াও নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যথাসময়ে প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে যথাসময়ে আশ্রয়নকেন্দ্রে আনা হবে। উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করার মাধ্যমে সবাইকে সচেতন করা হবে।
0Share