কাজল কায়েস: লক্ষ্মীপুরসহ সারাদেশে ব্যবসায়ীদের মনগড়া দামে উত্তপ্ত নিত্যপণ্যের বাজার। মহামারি করোনা ভাইরাসকে পুঁজি করে বিশেষ করে মুদি ব্যবসায়ীরা যেন অমানবিক হয়ে উঠছেন। বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে চাল ডাল পেঁয়াজ চিনি আদা ও বিভিন্ন সবজিসহ নিত্য জরুরি পণ্য মনগড়া দামে বিক্রি করছেন।
এসব পণ্য গড়ে কেজিতে ২০ থেকে ১০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন। মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে কিছু পণ্য আরো বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে বোবা কান্না চলছে নিম্মআয়ের পরিবারগুলোর মধ্যে।
করোনা থেকে বাঁচতে সচেতনতা বাড়িয়ে মানুষকে ঘরমুখো করতে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের ব্যস্ততা রয়েছে। তারা রাত-দিন কাজ করছেন।
বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় বণিক সমিতি, ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি, জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের আন্তরিকতা প্রয়োজন। এ মহাবিপদের সময় মতানৈক্য ভুলে সবার জায়গা থেকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
মানুষের কষ্ট লাগবে সার্বক্ষণিক কার্যকরী তদারকির মাধ্যমে এখনই বাজারের উর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরতে হবে। এদিকে গাছাড়া মনোভাব ঝেড়ে জনপ্রতিনিধিদের মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ চলছে। যদিও জনশ্রুতি রয়েছে, লক্ষ্মীপুর জেলার অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি জনবিচ্ছিন্ন।
সহজে ঘুম কাটে না কারো-কারো। আবার কয়েকজন করোনা কর্মে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন। পেয়েছেন ‘ভালো’ তমকা। শাসকদল আওয়ামী লীগের হাতেগনা ৫-৬ নেতা ছাড়া অন্যরা এখন নিরাপদে রয়েছে। দুইমাস থেকে চারজনের একজন এমপিও এলাকায় নেই ।
স্থানীয় প্রশাসন থেকে বরাবরের মতো এবারও বলা হচ্ছে, বাজারে নিত্য পণ্যের সংকট নেই। অসাধু ব্যবসায়ীরা নজরদারিতে রয়েছেন। বাজার স্থিতিশীল রাখতে নিয়মিত অভিযানে জেল-জরিমানা করা হচ্ছে।
সদ্য আলোচিত একটি উদাহরন হলো, ভ্রাম্যামাণ আদালতের অভিযানের আগে আদার কেজি বিক্রি করা হয় ৩২০ টাকা দরে, অভিযানের খবরে তা কমে গিয়ে ১৬০ টাকা দর হয়। ১০ মিনিটের ব্যবধানে রায়পুরের মধ্য বাজারে বুধবার দুপুরে অতি লোভী ব্যবসায়ীরা এ কাণ্ড ঘটিয়েছে।
প্রশাসনের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলছে কয়েকদিন ধরে। করোনার কারণে এখন বাংলাদেশেও দুর্ভিক্ষ ঝুঁকির আশংকা করা হচ্ছে । দিনদিন নিম্ম ও মধ্যবিত্ত মানুষের মধ্যে খাদ্যের জন্য হাহাকার বাড়ছে।
সরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে তৃণমূল পর্যায়ে অব্যাহত খাদ্য সহায়তা দেওয়া হলেও সমন্বয়হীনতা, সুষম বন্টন না হওয়া, স্বজনপ্রীতির কারণে বঞ্চিত অসহায়দের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
যদিও সরকার খাদ্য বরাদ্ধ বাড়িয়ে যাচ্ছে। নির্দেশনামতে দলমত নির্বিশেষে অসহায়দের তালিকা প্রস্তুতের কার্যক্রম এগুচ্ছে। সঠিক তালিকা তৈরী ও খাদ্য বন্টনে জনপ্রতিনিধিরা আন্তরিকভাবে কাজ করলেই কাউকে না খেয়ে থাকতে হবে না।
খেয়ে-পরেই বেঁচে থাকবে প্রত্যেকটি প্রাণ। পাশাপাশি বিদায় জানানোর শক্তি পাবে করোনাসহ সকল বিপর্যয়কে। জয় হবে মানুষের।
লেখক: সভাপতি, লক্ষ্মীপুর অনলাইন সাংবাদিক ফোরাম এবং লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি, দৈনিক কালের কন্ঠ ও জাগো নিউজ
0Share