মিসু সাহা নিক্কনঃ আর কয়েকদির পর শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা। এ উপলক্ষে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার বিভিন্ন পুজা মণ্ডপে চলছে এখন শারদীয় দুর্গা পূজার প্রস্তুতি। দুষ্টের দমন আর সৃষ্টের পালনের জন্যই দশহস্তে দেবী দুর্গা স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে আগমন করেছিলেন। এরই ধারাহিকতায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছর শারদীয় উৎসব হিসেবে দুর্গাপূজা উদযাপন করে আসছেন।
এ উৎসবকে ঘিরে এবার লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় মোট ১২টি পুজা মণ্ডপে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। বিভিন্ন মন্দিরে কারিগরেরা দুর্গা পূজা শুরুর এক থেকে দেড় মাস আগে থেকেই প্রতিমা তৈরির কাজে হাত দেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দক্ষ কারিগররা বিভিন্ন মন্দিরে শুরু করেন প্রতিমা বানানোর কাজ। ইতিমধ্যে অধিকাংশ পূজামণ্ডপের প্রতিমা গড়ার প্রধান কাজ শেষ হয়েছে। এখন শেষ মুহুর্তে কারিগররা তাদের নিপুন হাতের প্রতিমা রং করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আসছে ১১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব।
বিগত বছরের তুলনায় এ বছর দুর্গোৎসবে প্রতিমা তৈরির ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে আয়োজকদের। এরপরও থেমে নেই তাদের কোনো আয়োজন। রকমারী আলোকসজ্জার বর্ণালী বাহারে সাজানো হচ্ছে পুজা মণ্ডপ ও তার আশপাশ এলাকা। হাতে আছে আর মাত্র কয়েক দিন, তাই কারিগররা রাত-দিন চালিয়ে যাচ্ছে তাদের সাজসজ্জার কাজ। সব মিলে উৎসবের রঙ্গে সাজছে উপকূলীয় এ উপজেলা রামগতি।
বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন মÐপে চলছে শারদীয় দুর্গা উৎসবের ব্যাপক প্রস্তুতি। প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে কোনো কোনো মণ্ডপে রংতুলির কাজ শেষ, আবার কোথাও কোথাও চলছে রংতুলির কাজ। অন্যদিকে চলছে সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা, প্যান্ডেল ও ডেকোরেশনের কাজও। অপরদিকে পরিবার পরিজনের জন্য কেনা কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। ঘরে বাইরে পূজাকে ঘিরে চলছে ব্যস্ততা। জামা কাপড় তৈরি, কেনা-কাটায় সরগরম বিভিন্ন বাজারের বিপণিবিতানগুলোতে। শারদীয় দুর্গা উৎসবকে কেন্দ্র করে চারপাশে চলছে এখন উৎসবের আমেজ।
উপজেলা পুজা উযাপন পরিষদ সুত্রে জানা যায়, রামগতি পৌরসভায় ছয়টি, চরগাজী ইউনিয়নে দুইটি, চর রমিজ ইউনিয়নে একটি, বড়খেরী ইউনিয়নে তিনটিসহ মোট ১২টি মণ্ডপে এবার শারদীয় দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সকল পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করবে।
বাংলাদেশ পুজা উযাপন পরিষদ রামগতি শাখার সভাপতি উদয়ন মজুমদার জানান, এ বছর দেবী ঘোটকে চড়ে আসবে এবং দোলনা চড়ে যাবেন। সমাজের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবিসহ উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের সহযোগীতায় এবারও পুজা উযাপনের কাজ চলছে। পুজা চলাকালীন সময় প্রশাসনসহ সকলের সহযোগীতা কামনা করেন তিনি।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, এবার এ উপজেলায় একটি পূজা মণ্ডপ বেড়েছে, মোট ১২টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যাতে শান্তিপুর্ণ ভাবে শারদীয় দুর্গা উৎসব পালন করতে পারে সেজন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
0Share