সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটুক্তিসহ মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। মসজিদের অর্থ চুরি ও মাদ্রাসার মালামাল লুটের মিথ্যা অভিযোগ তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেয় কিছু স্বার্থান্বেষী মহল। এনিয়ে সচেতন মহলের মাঝে ব্যাপক মিশ্র প্রতিক্রিয়াসহ ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। যেকোন সময় দুর্ঘটনার শঙ্কা স্থানীয়দের। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামে এধরনের ঘটনা ঘটেছে।
বশিকপুর এলাকার কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে সরব হয়ে উঠে এ এলাকার বাসিন্দাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেইসবুক)। দেশে-বিদেশে, শহরে-গ্রামে এনিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর মতো কেউ কেউ না জেনে না বুঝে করছেন নানা মন্তব্য, দিচ্ছেন মতামত। কেউ কেউ ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করতে ব্যবহার করছেন এ মাধ্যমটি। ফলে ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষোভ, ঘটতে পারে যেকোন সময় অঘটন।
ওই এলাকায় সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বশিকপুর ইউনিয়নে দানশীল ও পরোপকারী ব্যক্তি হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত ব্যক্তিত্ব ছিলেন বশিকপুর গ্রামের হাজী আব্দুল জব্বার মাষ্টার বাড়ীর প্রয়াত মোঃ দীন ইসলাম। তাঁর সন্তানরাও শহর ও গ্রামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে নানা সহায়তা প্রদান করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দীন ইসলাম সামাজিক কাজে নিজের অর্থ ব্যয় করেছেন। বশিকপুর সেন্ট্রাল জামে মসজিদ, বশিকপুর ইসলামিয়া কাওমী মাদ্রাসা, বশিকপুর স্কুল এন্ড কলেজের প্রথম নির্বাচিত সদস্যসহ বেশ কিছু সামাজিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। অসুস্থতাজনিত কারণে তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকাকালীন সময়ে স্থানীয় একটি মসজিদের দানবাক্স চুরির ঘটনা ঘটে। এঘটনায় মামলা করা হলে চুরির সাথে জড়িতদের আটক করে পুলিশ। কিন্তু সম্প্রতি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরব হয়ে উঠে। এ সুযোগে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল ও প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চালায় নানা কটুক্তি ও মিথ্যাচার। এদিকে দীন ইসলামের মৃত্যুর পর একটি মহল তাঁকে ঘিরে মসজিদের অর্থ চুরি ও মাদ্রাসার মালামাল লুটের মিথ্যা অভিযোগ তোলে অপঃপ্রচার চালালে ক্ষোভে ফুঁসে উঠে এলাকাবাসী। এর বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
শুধু তাকেই নয়, প্রয়াত দীন ইসলামের বড় ছেলে ঢাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ নাসির উদ্দিন ও আপন ছোট ভাই তাহেরুল ইসলামের সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে তাঁদের বিরুদ্ধেও একটি কুচক্রী মহল ফেইসবুকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতে গিয়ে পড়তে হয়েছে জনরোষের মুখে।
প্রয়াত দীন ইসলামের ছেলে মোঃ নাসির দুঃখ প্রকাশ করে জানান, তাঁর প্রয়াত বাবা ও পরিবারকে নিয়ে যারা মিথ্যাচার করছেন তাদের বিচার সৃষ্টিকর্তা করবেন। এএলাকার জনগণ সবকিছুই বুঝে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, মিথ্যা মন্তব্য করে গন্তব্যে পৌঁছতে কিংবা ঠেকাতে পারবে না মিথ্যা সমালোচকরা। সামাজিক কাজে বাধা আসবেই, তবুও বশিকপুরের উন্নয়নে ও সামাজিক কাজে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চান তিনি।
এবিষয়ে বশিকপুর সেন্ট্রাল জামে মসজিদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোরশেদ আলম জানান, প্রয়াত দীন ইসলাম মসজিদে প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা ব্যক্তিগত অনুদান দিতেন। মসজিদে উন্নয়ন কর্মকান্ডে তিনি সবসময় কাজ করতেন। ব্যক্তিস্বার্থে কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাউকে নিয়ে মিথ্যাচার করা অন্যায় বলেও তিনি জানান।
বশিকপুর ইসলামিয়া কাওমী ও ইসলামিয়া এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা নুর উদ্দিন জানালেন, মাদ্রাসায় চুরির কোন ঘটনাই ঘটেনি। বরং প্রয়াত দীন ইসলাম মাদ্রাসা ও এতিমখানায় নিজে ও ছেলেদের কাছ থেকে এনে অনুদান দিতেন।
এদিকে মসজিদে চুরির ঘটনায় করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দত্তপাড়া ফাঁড়ির সাবেক উপ-পরিদর্শক কামরুল হোসেন মুঠোফোনে জানান, এঘটনায় ওই এলাকার কয়েকজন চিহিৃত চোরকে সেসময় শনাক্ত করে তাদের আটক করা হয় এবং তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়। তবে এঘটনায় কমিটির কেউই জড়িত ছিলো না বলেও জানান তিনি।
0Share