‘যতই প্রতিকূলতা থাকুক, সবার সমন্বয়ে লক্ষ্মীপুরে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে চাই। বন্যার পরিস্থিতি, বন্যার দীর্ঘসূত্রিতা কিংবা জলাবদ্ধতা কিংবা দীর্ঘদিন ধরে বন্যার পানি জমে থাকার বড় কারণ হচ্ছে এখানে পানির অবাধ প্রবাহ নষ্ট হয়ে যাওয়া। এখানে বিভিন্নভাবে প্রতিকূলতা সৃষ্টি করা হয়েছে। রয়েছে প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা ও মানবসৃষ্ট প্রতিকূলতা। অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েও অনেক প্রতিকূলতা সৃষ্টি করা হয়েছে। আমরা সবকিছু পরিষ্কার করতে চাই।’
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা ব্যাপি খাল পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু কালে রহমতখালী খাল পাড়ে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার এসব কথা বলেন। লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মাদাম ব্রিজ এলাকাসহ পৌরসভার ১৩টি স্থানে এ অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ ছাড়া একযোগে রামগতি, রায়পুর ও রামগঞ্জ পৌরসভাতেও খাল পরিষ্কারের অভিযান চলছে।
জেলা প্রশাসক রাজিব আরও বলেন, আমরা আজ হয়তো একটি জলাশয় পরিষ্কার করছি। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে অঙ্গীকার করছি যে, লক্ষ্মীপুরকে জঞ্জালমুক্ত করার জন্য, পরিষ্কার করার জন্য যা যা প্রয়োজন আমরা সবাই মিলে করব। লক্ষ্মীপুরকে সমৃদ্ধ নগরী হিসেবে রূপান্তর করতে হবে। এজন্য একটি স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। বন্যা কিংবা বন্যার সময় ছাড়া এখানে জলাবদ্ধতার কারণে কোনো ধরনের সংকট বা দুর্ভোগ যেন পোহাতে না হয়, সেই ব্যবস্থা করা হবে। এ জন্যও সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। সবার সহযোগিতা পেলে আরও বড় বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব— বলেন জেলা প্রশাসক।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আকতার হোসেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রশাসক মোহাম্মদ রফিকুল হক, সেনাবাহিনীর মেজর জিয়া উদ্দিন আহমেদ, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান ও পৌরসভার সচিব মো. আলাউদ্দিন প্রমুখ।
আগস্টের প্রথম দিকে লক্ষ্মীপুরে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন এলাকায় কৃত্রিম বন্যা দেখা যায়। গত ২৪ আগস্ট নোয়াখালীর বন্যার পানি লক্ষ্মীপুরে ঢুকতে শুরু করে। ফলে সদরের পূর্বাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় সাড়ে সাত লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। কোথাও কোথাও পাঁচ থেকে ছয় ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। এখনও সদরের পূর্বাঞ্চল, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন বলে জানা গেছে।
বন্যা পরিস্থিতির শুরু থেকে খালে অবৈধ বাঁধ অপসারনে কাজ করেছেন, কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমানসহ জেলার প্রত্যেক উপজেলা প্রশাসন। এছাড়াও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কমলনগর-রামগতি বাঁচাও মঞ্চ এবং রামগঞ্জ ব্লাড ডোনেট ক্লাব সহ বিভিন্ন সংগঠন।
0Share