সারোয়ার মিরন: আগামি ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি কমলনগর) আসনে যে বিষয় গুলো নিয়ে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাবে বলে মনে করছেন অনেক ভোটার।
মেঘনার ভাঙ্গন: মেঘনার ভাংগন রামগতি কমলনগরের প্রধানতম সমস্যা। মোট মিলিয়ে দুটি উপজপলা জুড়ে প্রায় পঁচিশ কিলোমিটার নদী ভাংগন কবলিত। এর মধ্যে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সাংসদ মো: আবদুল্ল্যাহ (আল মামুন) প্রায় দু’শত কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ছয় কিলোমিটার বেড়ি (পাথর ব্লক) বাঁধের কাজটি করেছেন। মোট কাজের চার কিমি রামগতি উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন, এক কিমি রামগতি বাজার, অবশিষ্ট্য এক কিমি কমলনগরের হাজিরহাট সংলগ্ন সম্পন্ন করা হয়েছে। উক্ত প্রজেক্টটি বারো’শ কোটি টাকার।
প্রাথমিক ভাবে কাজ হয়েছি দুই’শ কোটি টাকার। বাকি টাকা বরাদ্ধ করানোসহ এবং অবশিষ্ট্য ভাংগন কবলিত স্থান গুলোতে কাজ করা অতি প্রয়োজন। বিশেষ করে কমলনগরে মাত্র এক কিমি কাজ হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষ সব সময় নেতিবাচক মনোভাব পোষন করে থাকেন। উনারা নিশ্চয় নদী ভাংগন রোধের কাজজ কড়ায় গন্ডায় বুঝে নিতে আসন্ন ভোটকেই বেছে নেবেন।
বিদ্যুতায়ন: সারাদেশের দুই শতাধিক উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আসছে বহু আগেই। দক্ষিনা লের সর্বশেষ উপজেলা হিসেবে রামগতি কমলনগরের সিংহভাগ এলাকা এখনো বিদ্যুতের ছোঁয়া লাগেনি। খোদ উপজেলা শহর রামগতি পৌরসভাতেই বিদ্যুতের দেখা পায়নি অর্ধেক জনগোষ্ঠী। আসন্ন নির্বাচনে বিদ্যুত বি ত এ বিশাল জনগোষ্ঠি তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন খানিকটা ভেবেচিন্তেই।
স্বাস্থ্যসেবা: দু’ উপজেলায় দুটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দুটিই বহুমুখী সমস্যায় জর্জরিত। নেই প্রয়োজনীয় লোকবল এবং ডাক্তারও। কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এম্বুলেন্স নেই দুই যুগেরও বেশি সময়। রামগতি উপজেলায় দিন কয়েক আগে দেয়া হয়েছে এম্বুলেন্স। রামগতি উপজেলা হাসপাতালকে ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ শয্যায় উন্নীতকরনসহ প্রয়োজনীয় লোকবল ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ব্যবস্থা করতে হবে।
শিক্ষাব্যবস্থা: শিক্ষাক্ষেত্রে দৈন্যদশা থেকে কিছুটা উতরালেও রামগতি কনলনগর উপজেলার প্রত্যন্ত অ লে এখনো কাম্য সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাব রয়েছে। প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাবসহ রয়েছে শিক্ষক সংকটও। বিশেষ করে আসম আবদুর বর সরকারী কলেজে নেই যুগোপুযোগি বিষয় এবং নেই পর্যাপ্ত শিক্ষকও। শিক্ষকের অভাবে পাঠাদান ব্যাহত হচ্ছে। দীর্ঘ দিনের দাবি পুরনে চলমান শিক্ষাবর্ষে একটি বিষয়ে (বাংলা) অনার্স কোর্স চালু হলেও শিক্ষক সংকট চরমে থাকা আশানুরুপ শিক্ষার্থী ভর্তিতে আগ্রহ দেখায় নি। একটি সরকারি কারিগরি (টেকনিক্যাল) উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি এলাকাবাসীর।
স্টেডিয়াম: সেতো এক না পাওয়ার অনবধ্য ইতিহাস। সাবেক মন্ত্রী বর্তমান নির্বাচনে এ আসনের ঐক্যফ্রন্টের সম্ভাব্য প্রার্থী আসম আবদুর রব মন্ত্রীত্বকালীন সময়ে জমিদারহাট বাজারের দক্ষিনে নামফলক উন্মোচন করেছিলেন রামগতি স্টেডিয়ামের। প্রায় দুই দশক সময় পার হলেও স্টেডিয়ামটি এখনো আলোর মুখ দেখেনি। এ অঞ্চলের জনমানুষের দীর্ঘদিনের দাবি সহসায় আলোর মুখ দেখুক রামগতি স্টেডিয়ামটির। এরই পাশে অযন্ত আর অবহেলায় পড়ে আছে কেন্দ্রিয় বাস-ট্রাক টার্মিনালেও। স্টেডিয়াম ও বাস-ট্রাক টার্মিনালের নাম ফলক উদ্বোধন করা হয় একই সময়েই।
অন্যান্য: রামগতি পৌরসভা। এ এক দুঃসহ বেদনা আর শতো না পাওয়ার এক নাম। পৌরসভার কার্যালয়ের কাজ চলমান হওয়ায় আশা জাগালেও এ পৌরসভার অন্যতম তিনটা সড়ক দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়ে আছে। নেই অর্ধেকও বেশি নাগরিকের বিদ্যুত সুবিধা। পয়নিষ্কাশন এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার মারাত্মক সংকটে নাগরিক জনজীবন। তিন মেয়র পার হতে চললেও নেই বৃহৎ কোন উন্নয়ন কাজও।
লেখক: ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক
0Share