রিকশা চালক বৃদ্ধ শাহাদাত হোসেনের (৬৮) চার সন্তান (দুই ছেলে ও দুই মেয়ে)। বড় ছেলে মানিক হোসেন ডিগ্রি পাস করে মাস্টার্সে পড়ছেন। বিয়ে হয়েছে বড় মেয়ের। অন্য দুই ছেলে-মেয়ে স্কুল শিক্ষার্থী। ঘরে অসুস্থ স্ত্রী। পরিবাররে ভরণ পোষণ, স্ত্রীর ওষুধ, ছেলে-মেয়েদের পড়া লেখার খরচ মেটাতে অবিরাম চেষ্টা তার।
জীবনের শেষ প্রান্তে এসে রিকশা চালিয়ে এখন জীবিকা অর্জন করছেন। তবে স্বপ্ন দেখছেন ছেলেকে নিয়ে, ছেলের চাকরি হলেই ছাড়বেন রিকশা। শনিবার (১জুন) মধ্যরাতে লক্ষ্মীপুর শহরে বৃদ্ধ রিকশা চালক শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানালেন, তার জীবনের গল্প ও স্বপ্নের কথা।
বৃদ্ধ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা। নিজের জমি-জমা নেই। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে থাকেন পিয়ারপুর এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে। ঋণ নিয়ে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা কিনেছেন। এক বছর ধরে রিকশা চালাচ্ছেন তিনি। সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা এমনকি মধ্যরাতেও জীবিকার জন্য ছোটেন শহরের একপ্রাপ্ত থেকে অপর প্রাপ্তে, অলিতে-গলিতে। রোজা রেখে এই গরমেও তার বিশ্রামের সুযোগ নেই। বাড়তি আয়ের আশায় ঈদকে সামনে রখে সারারাত রিকশা চালান।
ঘরমুখো মানুষদের বাড়ি পৌঁছে দেন তিনি। এত পরিশ্রমেও তার যেন ক্লান্তি নেই। না পাওয়ার বেদনা নেই। নেই কোনো হতাশা। তবে আছে তার বুক ভরা স্বপ্ন। স্বপ্ন দেখছেন ছেলেকে নিয়ে। ছেলে চাকরি করবে, সংসার হাল ধরবে, মায়ের চিকিৎসা করাবে। সেই দিনের অপেক্ষায় আছেন তিনি।
শাহাদাত হোসেন বলেন, ছেলে ডিগ্রি পাশ করেছে। গত এক বছর ধরে চাকরির আশায় আশায় অনেক দরখাস্ত করেছে। চাকরির জন্য পরীক্ষাও দিয়েছে, কিন্তু টাকার জোর বা প্রভাবশালী পরিচিত না থাকায় চাকরি হয়নি। ছেলের একটা চাকরি হলে শেষ বয়সে অন্তত রিকশাটা ছাড়তে পারতাম। এখন রিকশা ছাড়লে না খেয়ে থাকতে হবে।
0Share