সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ,কমলনগর: কোনো জাতীয় দিবসেই কর্মস্থলে উপস্থিত থাকেন না কমলনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আয়ুব আলী। সর্বশেষ শুক্রবার জাতীয় শোক দিবসেও অংশগ্রহণ করেননি তিনি। এর আগে শিশু দিবস ও স্বাধীনতা দিবসেও উপস্থিত না থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
১৫ আগস্ট কমলনগর উপজেলা প্রশাসন যথাযোগ্য মর্যাদায় বঙ্গবন্ধুর ৩৯তম শাহাদাৎবার্ষিকী পালন করে। দিবসটি উপলক্ষ্যে বাধ্যতামূলভাবে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
বিশ্বস্ত বিভিন্ন সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১৭ মে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসেও তিনি কর্মস্থলে ছিলেন না।
কেন এই কর্মকর্তা জাতীয় দিবসগুলোতে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকেন না এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মহলে।
এদিকে, দালালদের সঙ্গে যোগসাযোশ করে বদলি বাণিজ্য, পেনশন উত্তোলন ও উপবৃত্তি বিতরণসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি কমলনগর উপজেলায় ৯৪টি আনন্দ স্কুলের শিক্ষক নিয়োগে বাণিজ্য করায় চাকরি বঞ্চিতরা বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে। ওই সময় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে হামলা ও ভাঙচুর চালায় তারা। এছাড়া কিছুদিন আগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে লাঞ্ছিত হন এ কর্মকর্তা।
অভিযোগে জানা গেছে, সপ্তাহে তিন দিন অফিস করেন তিনি। বুধবার বিকেলে কর্মস্থল ছাড়েন এবং ফিরে আসেন সোমবার। এসব কারণে উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় বিরুপ প্রভাব পড়েছে। শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ।
কমলনগরে প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৭০টি। পরিদর্শনের অজুহাতে এই কর্মকর্তা ওইসব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে পরিবহন খরচ বাবদ তিনশ থেকে হাজার টাকা ঘুষ নেন। এভাবে পরিদর্শনে প্রতিমাসে ওই শিক্ষা কর্মকর্তার অবৈধ আয় প্রায় অর্ধলক্ষাধিক টাকারও বেশি।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েক জন প্রধান শিক্ষক জানান, উপবৃত্তি, বদলি, পেনশন উত্তোলন, মেডিকেল এবং মাতৃত্বকালীন ছুটিতেও তাকে ঘুষ দিতে হয়। এভাবেই লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আয়ুব আলী বলেন, ছুটিতে বাড়িতে থাকায় শোক দিবসে উপস্থিত থাকতে পারিনি। তবে অন্য সব জাতীয় দিবসে উপস্থিত ছিলাম। তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়গুলো সত্য নয় বলেও দাবি করেন তিনি।
এদিকে, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ফজলুল হক সবুজের অভিযোগ, ওই কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের বিপক্ষে। রাজনৈতিক কারণে তাই তিনি বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎবার্ষিকী ও জন্মবার্ষিকীসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসগুলোতে উপস্থিত থাকেন না।
0Share