লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমানকে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরান হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে রোববার (২২ জানুয়ারি) তাকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়।
বহিষ্কার হওয়া চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান ২০২১ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন।
জানা যায়, চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান বিগত সময়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালীন বিভিন্ন অনিয়ম করেছেন। বিগত ৩১ জানুয়ারি তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নানা দুর্নীতি, অনিয়ম ও অসদাচরণ করে আসছেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পরিষদে কোনো সভা করেননি। ইতোমধ্যে এলজিএসপি-৩, পরিষদের উন্নয়ন সহায়তা না করা, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর, কাবিখা, কাবিটা) অতিদরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচি ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বরাদ্দসহ বিভিন্ন বরাদ্দে ইউপি সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত না করে এবং কোনো সভা না করে প্রকল্পে মেম্বারদের নাম ব্যবহার করে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ ইত্যাদি নানা অভিযোগে তিনি অভিযুক্ত।
অভিযোগ রয়েছে, ২০২১-২২ অর্থ বছরের অতিদরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচির ৮২ জন শ্রমিকের অনুকূলে ২৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। চেয়ারম্যান প্রকৃত শ্রমিকদের নামে বিকাশ অ্যাকাউন্ট না খুলে নামে-বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে সে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। একই অর্থ বছরের টিআর, কবিখা, কাবিটা বরাদ্দের দুই কিস্তির ১০ লাখ টাকা নামমাত্র প্রকল্পে ব্যয় দেখিয়েছেন। কোনো ধরনের সভা ছাড়াই চেয়ারম্যান অবৈধ সুবিধা নিতে এডিপি খাতের ১০ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রকল্প তালিকা দাখিল করেন। এছাড়া হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স বাবদ আদায়কৃত দুই লাখ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছেন। এসব ঘটনায় ১২ জন সদস্যর মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের ১০ সদস্য তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে দরখাস্ত দেন।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সদস্যরা অনাস্থা দিয়েছেন। তদন্তে তা প্রমাণিত হওয়ায় অনাস্থাপ্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। তারই আলোকে আজ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে ওই পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ওয়াহিদুর রহমান বলেন, আমি কোনো দুর্নীতি করিনি। এ নিয়ে আমি আদালতে শরণাপন্ন হবো।
40Share