সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর শুক্রবার , ১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১লা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
‘রোগী নিয়ে কখনও পেছনে তাকাইনি’

‘রোগী নিয়ে কখনও পেছনে তাকাইনি’

‘রোগী নিয়ে কখনও পেছনে তাকাইনি’

কাজল কায়েস: ‘অ্যাম্বুলেন্স হচ্ছে ভিআইপি গাড়ি। এটি শুধু রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হয়। স্যাভলন দিয়ে নিয়মিত এর সরঞ্জাম পরিষ্কার করার নিয়ম। কিন্তু এখন মরদেহ বহনের জন্য এটি ভাড়া দেয়া হচ্ছে। এর জন্য তো আলাদা গাড়ি আছে। বিষয়টি খোদ প্রশাসনের অনেকেই জানেন না।’ লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত অ্যাম্বুলেন্স চালক গোলাম সরওয়ার (৭৯ ) পৌরসভার বাঞ্চানগর এলাকায় বাড়ির আঙিনায় বসে কথাগুলো বলছিলেন। তিনি আরও বলেন, দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে রোগীর জীবন বাঁচানোই ছিল তার ধর্ম। অ্যাম্বুলেন্স চালকরা ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করলে শতকরা ৯০ জন রোগী প্রাণে বেঁচে যেত বলে মন্তব্য করেন অবসরপ্রাপ্ত এই অ্যাম্বুলেন্স চালক। গোলাম সরওয়ার বলেন, এখন তো আর ওই চালক নেই। মূলত চালকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সর্ম্পকে ধারণাই নেই। তারা তো রোগীকে নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় রেখে চলে আসে। চালককে অবশ্যই হাসপাতালে রোগীকে ভর্তি নিশ্চিত করার পর বের হতে হবে। এটি নিজে চাকরি জীবনে শতভাগ করেছি। তিনি আরও বলেন, চাকরি জীবনের এক অভিজ্ঞতার কথা তাকে এখনও তাড়া করে। তখন স্বাধীনতার সংগ্রাম চলছে।

অবসর প্রাপ্ত অ্যাম্বুলেন্স চালক গোলাম সরওয়ার

 

তিনি নোয়াখালী মাইজদীর হাসপাতালে (বর্তমানে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল) দায়িত্ব পালন করছিলেন। তখন সেখানকার রাজাকার ক্যাম্প রেজিস্ট্রি অফিস এবং পিটিআই মোড়ে দু’পাশ থেকে ব্যাপক গুলি ছোড়া হচ্ছে। মাঝে মুক্তি বাহিনীর সদস্যরা। ৩০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে কাতরাচ্ছেন। তখন ভয়ে আহত ব্যক্তির মৃত্যু দেখার অপেক্ষা করছিলেন যেন অন্যরা। চিকিৎসা ছাড়াই তিনি মারা যাচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে আড়ালে থেকে তাকে লক্ষ্য করে মোটা রশি ছুড়ে দিলে সেটা আঁকড়ে ধরে তিনি একটু-একটু করে এগিয়ে আসেন আমার দিকে। পরে তাকে তুলে নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। প্রাণে বেঁচে যান নাম না জানা ওই ব্যক্তি।

গোলাম সরওয়ারের সাক্ষাতকার নিচ্ছেন প্রতিবেদক কাজল কায়েস

গোলাম সরওয়ার বলেন, গ্রামের সরকারি হাসপাতালগুলোতে সাধারণত গুরুতর রোগীদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অ্যাম্বুলেন্স চালককে অবশ্যই ধারণা রাখতে হবে রোগ অথবা সমস্যা অনুযায়ী রোগীকে নির্দিষ্ট হাসপাতালে নিতে হবে। তাহলে বেঁচে যাবে অনেক প্রাণ। পথিমধ্যে যখনই রোগীর অবস্থা খারাপ হবে তখনই নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। বর্তমান সময়ের অ্যাম্বুলেন্স চালক প্রসঙ্গে কথা তুলতেই তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতাল থেকে এখন আর তেমন একটা অ্যাম্বুলেন্স বের করা হয় না। দালালদের কাছে রোগীরা জিম্মি। এখন সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালকরা রোগী বেচা-কেনা করেন।

কিন্তু অভাবে থাকলেও এ কাজটি কখনও করেননি বলে জানান সরওয়ার। নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে গোলাম সরওয়ার বলেন, লাকসাম-কুমিল্লা সড়কের ডাকাতরা তাকে চিনতো। সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তারা সব যানবাহনে ডাকাতি করতো। কিন্তু কখনও আমাকে তারা ধরেনি। কঠোর হরতাল-অবরোধের সময়ও রোগী নিয়ে কখনও পেছনে তাকাইনি। পুলিশের অভিযানে অনেক সন্ত্রাসী-ডাকাতরা গুলি খেয়েছে। তারা যখন অ্যাম্বুলেন্সে থাকবে তখন তার পরিচয় আমার কাছে শুধু রোগী। তাকে প্রাণে বাঁচানোও আমার দায়িত্ব।

প্রসঙ্গত, গোলাম সরওয়ার ১৯৬৪ সালে চাকরিতে যোগদান করে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনীর ছাগলনাইয়া ও লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ সালে তিনি অবসরে যান। তার ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে। বড় ছেলে এখন রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক।

লক্ষ্মীপুর সংবাদ আরও সংবাদ

লক্ষ্মীপুরে শিক্ষাবিদ মাহমুদ উল্লাহর আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া

লক্ষ্মীপুরে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে শারীরিক প্রতিবন্ধী পরিবহন শ্রমিকের বসতঘর পুড়ে ছাই 

‎দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হলেও চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি : তানিয়া রব ‎

নকল পণ্য সরবরাহ করায় লক্ষ্মীপুরে ব্যবসায়ীর ২ লাখ টাকা জরিমানা

লক্ষ্মীপুরের বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের আহ্বান

লক্ষ্মীপুরে প্রবাসী পরিবারের তারকাঁটা বেড়া ভাঙচুর

Lakshmipur24 | লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রনালয়ে নিবন্ধিত নিউজপোর্টাল  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2025
Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu
Muktizudda Market (3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com