নিজস্ব প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুর সদর,কমলনগর,রায়পুর উপজেলায় ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ৫টি অস্বাভাবিক মৃত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ লাশগুলো উদ্ধার করলেও খুনের রহস্য উদঘাটন বা জড়িতদের কাউকে আটক করতে পারেনি। এতে ওই এলাকার জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
রায়পুর: রায়পুরে নির্মাণ শ্রমিকের লাশ উদ্ধার
রায়পুরে শনিবার ভোরে সোহেল (৩৫) নামে নির্মাণ শ্রমিকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ১০নং রায়পুর ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের সুলতান আহম্মদের ছেলে। ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে লাশটি পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় মৃতের বড় ভাই সোহাগ থানায় অপমৃত্যূর মামলা করেছেন। রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুপক কুমার সাহা বলেন, মৃত সোহেলের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার বড় ভাই সোহাগ বাদি হয়ে অপমৃত্যূর মামলা করেছেন।
লক্ষ্মীপুর:যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার
নিখোঁজের তিন দিন পর লক্ষ্মীপুর সদরে এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার বেলা ১টার দিকে রাধাপুর গ্রামে মুরাদ হোসেন সুমনের (৩২) লাশ পাওয়া যায়। মুরাদ লক্ষ্মীপুর পৌর এলাকার সাহাপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি অ্যাম্বুলেন্স চালক ছিলেন বলে পারিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আজাদ বলেন, দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় এক নারী মিঝিবাড়ি বাগানের একটি বাঁশঝাড়ে পাতা সংগ্রহ করতে গিয়ে মৃতদেহটি দেখেন। পরে পুলিশে খবর দেয়া হয়। বেলা ১টার দিকে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।
মুরাদের ছোটভাই মো. সোহেল বলেন, তিনদিন আগে মুরাদের বন্ধু পরিচয়ে দুই যুবক মোটরসাইকেলে করে তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে গিয়ে লাশ সনাক্ত করেন। তবে, কারা তাকে ডেকে নিয়েছিল তা তিনি জানাতে পারেননি।
অন্যদিকে লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে জেলার কমলনগর থানা পুলিশ হাজিরহাট ইউনিয়নের চর পাগলা গ্রামের একটি শস্য খেত থেকে একই এলাকার রমজান আলীর ছেলে আবদুর রহিমের (৪২) লাশ উদ্ধার করেছে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশের ধারণা সন্ত্রাসীরা তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তবে এ হত্যাকান্ডের কারণ জানাতে পারেনি পুলিশ। এ ব্যাপারে কমলনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি হুমায়ুন কবির জানান, এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। অপরদিকে শুক্রবার সকালে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের মৃত শামছুল হকের ছেলে ও স্থানীয় যুবদল কর্মী মো. আবু (৩৮) সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হয়ে নোয়াখালী হাসপাতালে মারা যায়। নিহতের ভাই হাবিব মাঝি অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে চন্দ্রগঞ্জ বাজারের সমতা সিনেমা হলের পশ্চিম পাশে মাটির কাজ দেখাশোনা করা অবস্থায় আমার ভাই আবু আমার কাছে আসেন। এ সময় নাছির বাহিনীর চিহ্নিত দুই সদস্য রুবেল ও মিজানসহ অজ্ঞাত আরো সাত/আট জন মিলে আমাদের ঘিরে ফেলে। একপর্যায়ে তারা আবুকে জাপটে ধরে তার পাজরে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে পালিয়ে যায়। এ সময় মারাত্মক আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালীর মাইজদী এশিয়া হাসপাতালে ভর্তি করার পর সে মারা যায়।
এ ছাড়া সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ৭নং ওয়ার্ড ইউপি মেম্বার মোহাম্মদ উল্লাকে (৪৫) সন্ত্রাসীরা বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ পোঁড়াখালের পাশে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে স্থানীয় জনতা বৃহস্পতিবার সকালে লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. ইকবাল হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ দিকে নিহতের পরিবারের অভিযোগ পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই এলাকার পতিপক্ষ বিএনপির নেতা হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে এ হত্যাকা- ঘটতে পারে। পরে জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে হুমায়ুন কবিরের বসতঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে। লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. ইকবাল হোসেন জানান, সদর উপজেলার দুই জন নিহত হওয়ার বিষয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কাজ শুরু করেছে। তবে দুটি ঘটনায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ঘটেছে বরে জানান তিনি।
0Share