নিজস্ব প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রামগতি রোডের মজুপুরস্থ বেসরকারী লক্ষ্মীপুর আধুনিক হাসপাতালের বিরুদ্ধে রোগীর চিকিৎসায় অবহেলা ও চিকিৎসাবিহীন মোটা অংকের বিল আদায় এবং হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত সোমবার ভুক্তভোগী রোগী এবং বেসরকারী উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান নোয়াখালী রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি-এনআরডিএসের লক্ষ্মীপুর জেলা ব্যবস্থাপক বাহার উদ্দিন সঞ্জু ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চেয়ে লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগ সূত্র ও ভুক্তভোগী বাহার উদ্দিন নিজে জানান, গত ১৩ আক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টায় হৃদয়রোগে গুরুত্বর অসুস্থ্য হয়ে তিনি ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তি হওয়ার পর তাকে একটা সেলাইন দেওয়া হয়। প্রায় দুই ঘন্টা পর দায়িত্বরত একজন ইন্টারনিশিপ চিকিৎসক এসে প্রাথমিক চিকিৎসা না দিয়ে তাকে কিছু পরিক্ষা-নিরিক্ষার জন্য ব্যবস্থা দিয়ে চলে যান ওই চিকিৎসক। পরীক্ষা-নিরিক্ষার জন্য আবারো দুই ঘন্টা লেগে যায়। এ দিকে কোন রকম চিকিৎসা ছাড়াই শুধু পরীক্ষা-নিরিক্ষার অপেক্ষায় রোগের সাথে যুদ্ধ করে তার জীবন অনেকটা হুমকির মুখে পড়ে।
জেলার নামকরা বেসরকারী এ হাসপাতালে চিকিৎসার এমন অস্বাভাবিক অবস্থা দেখে রোগীর সহকর্মী ও স্বজনরা তাকে অন্যত্র স্থানান্তর করার বিষয়ে একাধিকবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কে অনুরোধ করেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ছেড়ে না দিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আসবে বলে কালক্ষেপণ করেন।
পরবর্তী বিকেল ৫ টায় কোন উপায় না দেখে রোগীর সহকর্মী ও স্বজনরা অনেকটা জোর করে তাকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সিদান্ত নিলে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ শাহাজাহান তাকে চলে যেতে বলেন।
তবে যাওয়ার সময় হাসপাতালের পক্ষ থেকে চার হাজর সাতশ টাকার একটি বিল ভাউচার তাদের হাতে তুলে দেন।
রোগীর মুমুর্ষু অবস্থার কথা চিন্তা করে স্বজনেরা উক্ত ভুতুড়ে বিলটির বিষয়ে কোন কথা না বলেই বিলটি পরিশোধ করে এ্যাম্বুলেন্স যোগে তাকে নোয়াখালীর বেসরকারী গুডহিল হাসপাতেল ভর্তি করান।
নোয়াখালীর ওই হাসপাতলে চিকিৎসা সেবায় ভালো হয়ে ১ দিন পর ফিরে এসে গত ২১ অক্টেবর তিনি নিজেই লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসক বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।
বিষয়টি সম্পকে জানতে চাইলে আধুনিক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ শাহাজাহান অভিযোগের কথা অস্বীকার করে বলেন, নিয়মতান্ত্রিক অনুযায়ী আমাদের প্রতিষ্ঠানে সার্বক্ষনিক জরুরী বিভাগে চিকিৎসক রয়েছেন, ওই রোগীর জন্য জরুরী ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মাহবুব সাহেবকে কল করা হয়েছিল । ইতোমধ্যে তারা মাইজদীতে চলে যায়।
অন্যদিকে কোন রোগীর কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা তো হয়ই না বরং ১০-১৫ % ছাড় দিয়ে সফটওয়ারের মাধ্যমে বিল করা হয়। তিনি আরো বলেন যদি চিকিৎসা না দিয়ে থাকি তাহলে কিসের বিল করা হয়েছে? রোগীর স্বজন বিলের জন্য কোন মন্তব্য করেননি কিংবা আমার কাছেও বিলের ব্যাপারে আবেদন ও করেননি। আমাদেরকে ঘায়েল করার উদ্যেশে এমন ঘটনা মিডিয়াতে প্রচার করছে কিছু দুষ্ট মানসিকতার লোক।
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন ডাঃ গোলাম ফারুক ভুইয়া বলেন, অভিযোগ পেয়েছি এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
0Share