এমআর সুমন: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার প্রথম ১৩ বছরের এক শিশুর করোনায় আক্রান্তের সংস্পর্শে এসে নতুন করে আরও ১২ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে শিশুর মা,বাবা ও ভাই ছাড়া বাকিরা বাড়ীর আত্মীয়স্বজন ও আশপাশের বাসিন্দা। তবে ওই শিশু কী ভাবে প্রথম করোনায় সংক্রমিত হয় আরও জানা যায়নি। এ নিয়ে রায়পুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৬ জনে।
বৃহস্পতিবার (১৪ মে) সকালে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন। এর আগে চট্টগ্রাম বিআইটিআইডি হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে থেকে এ তথ্য জেলার সিভিল সার্জন অফিসে জানানো হয়।
জানা যায়, ওই শিশু নরমাল জ্বর ও সর্দিতে কয়েক দিন ধরে ভুগছেন। পরে পৌর শহরের সেবা প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যায়। তারপরেও জ্বর, সর্দি ও কাশি ভালো হচ্ছে না, এমন খবর জানতে পেরে গত ২মে তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম বিআইটিআইডি হাসপাতালে হয়। এরপর ৪মে নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর শহরের সেবা হাসপাতালসহ ওই পরিবারটি ছাড়াও আশপাশের কয়েকটি পরিবারকে লকডাউন রাখা হয়। এরপর তাঁর সংস্পর্শে আসা স্বজন ও চিকিৎসকসহ ৩৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। তাঁদের মধ্যে ১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জাকির হোসেন জানান, শনাক্ত হওয়া সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে ও আইসোলেনে থাকতে বলা হয়েছে। ওই শিশুর সংস্পর্শে আসা আরও কিছু লোকের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের ভাষ্যমতে, রায়পুরে সামাজিক দূরত্ব মানছে না লোকজন। এ জন্য আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় রায়পুরকে ঝুঁকিপূর্ণ ও হটস্পষ্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সংক্রমণ এড়াতে গত মঙ্গলবার বিকাল থেকে ফের এ উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন। কিন্তু তিন দিনেও রাস্তাঘাট ও হাটবাজারে মানুষের উপস্থিতি কমেনি। প্রতিদিনই কারণে-অকারণে মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে। যদিও প্রশাসন সার্বিক চেষ্টা-তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। এছাড়াও লকডাউনের মধ্যেও গত এক সাপ্তাহে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ও পণ্যবাহী গাড়িসহ বিভিন্ন কৌশলে ঢাকা থেকে দেড় শতাধিক ব্যক্তি রায়পুরে এসেছেন।
এতে সুশীল সমাজের দাবি, প্রশাসন আরও কঠোর না হলে মানুষকে বাইরে বের হওয়া থেকে আটকানো যাবে না। সংক্রমণ ঠেকাতে না পারলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে বলেও মনে করেন তারা।
0Share