এমআর সুমন, লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর : লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল ২০১৭ সালে রায়পুর পৌরসভাকে উপহার দিয়েছিলেন একটি অ্যাম্বুলেন্স। ৫ বছর পর মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে এক পুলিশ কর্মকর্তার। এতে গত ৮ মার্চ থেকে উপহারের ওই অ্যাম্বুলেন্সটি রায়পুর থানায় জব্দ করে রেখেছে পুলিশ। এতে কম খরচে অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত পৌরবাসী এমন অভিযোগ পৌরসভার কয়েকজন কর্মকর্তার।
পৌরসভার সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে রায়পুর পৌরসভাকে কাজী শহিদ ইসলাম অ্যাম্বুলেন্সটি উপহার দেন। এসময় শোরুমের ক্যাশ মেমো দিয়ে বাকী কাগজপত্র দেয়নি পৌরসভাকে। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্সটি রেজুলেশন করে মানবসেবার কাজে নিয়োজিত করেন। ৫ বছর পর পুলিশের এক কর্মকর্তা (মোখলেছুর রহমান) ২০২১ সালের গাড়ীর কাগজপত্র দেখিয়ে ২০২২ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে হঠাৎ মালিকানা দাবি করে। পরে পুলিশ জিডির সূত্র ধরে অ্যাম্বুলেন্সটি জব্দ করে।
অ্যাম্বুলেন্সটি পরিচালনার করার দায়িত্বে থাকা রায়পুর মাতৃছায়া হাসপাতালের পরিচালক তুহিন চৌধুরী বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি চলতো রায়পুরে।কিন্ত কিভাবে রেজিষ্ট্রেশন ঢাকাতে ?
রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট বলেন,
আমি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার আগে শহিদ ইসলাম অ্যাম্বুলেন্স পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সামনে উপহার দিয়েছেন। ৫ বছর ধরে এটি পৌরসভায় আছে। শোরুমের ক্যাশ মেমো ছাড়া কোনো কাগজপত্র দেননি। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সটি রায়পুর পৌরসভার কাছে থাকার পরও মোখলেছুর রহমান সাহেব ২০২১ সালে কিভাবে গাড়ীটির রেজিষ্ট্রশন দেখান তা আমরা জানি না। তিনি আরও বলেন, মোখলেছুর রহমান সাহেবের তিনটি কাগজ তিন রকমের। প্রায় পাঁচ বছর তিনি (মোখলেছুর) তাহলে তিনি কোথায় ছিলেন? বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়। ধোঁয়াশার মধ্যে আছে পুরো বিষয়টি। তবে অ্যাম্বুলেন্সটি জব্দ করায় সাধারণ মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এদিকে মোখকলেছুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন,
‘২৪ লাখ টাকা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি কিনেছিলাম। পরে ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেনকে অ্যাম্বুলেন্সটি ভাড়ায় খাটানোর জন্য দিয়ে ছিলাম। কয়েক মাস ভাড়া দেওয়ার পর আর কোনো ভাড়া দেননি তিনি (জাকির)। অ্যাম্বুলেন্সটি ফেরত চাইলে সেটিও দেননি। এ নিয়ে থানায় জিডি করি। পরে অন্য একটি গাড়ি চুরি ও প্রতারণার মামলায় জাকিরকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তারের পর আমার অ্যাম্বুলেন্সের বিষয়ে ক্লুপাই। জাকির এখনো কারাগারে।’
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মোখলেছুর রহমান গত বছরের ২১ আগস্ট একটি অ্যাম্বুলেন্সের বিষয়ে ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানায় জিডি করেন। ওই জিডিতে দাবি করা হয়, অ্যাম্বুলেন্সের মালিক মোখলেছুরের স্ত্রী নিগার সুলতানা ওরফে রুমি।
এদিকে ২০১৭ সালে সাবেক সংসদ সদস্য পৌরসভাকে যেই অ্যাম্বুলেন্স উপহার দিয়েছেন। সেটির ইঞ্জিনের নম্বরের সঙ্গে নিগার সুলতানার অ্যাম্বুলেন্সটির মিল আছে। পরে ওই জিডির সূত্র ধরে অ্যাম্বুলেন্সটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। বর্তমানে এ নিয়ে ধোঁয়াশার রয়েছে। তাই অ্যাম্বুলেন্সটি এখন থানায় জব্দ করে রাখা হয়েছে।
0Share