রহমত উল্যাহ পাটোয়ারী, রামগঞ্জ: রামগঞ্জের ভাদুর ইউনিয়নের সমেষপুর গ্রামের কৃষক আবদুল মান্নান ২টি ছাগল বাড়িরি পাশের মাঠে রবিবার সকাল ৯টার সময় বেঁধে আসার ঘন্টা খানেক পর চিৎকার শুনে দৌড়ে গিয়ে দেখেন ৫ থেকে ৬ কুকুরের এলোপাতাড়ি কামড়ে মারা যায়, একইদিন ভোরে সমেষপুর রুহুল আমিনের ফার্মে তিনটি পাগলা কুকুর ঢুকে শতাধিক মুরগীকে কামড়ে মেরে ফেলে।
জুলাই মাসে সমেষপুর মুন্সি বাড়ির হারুনের বাড়ি আঙ্গিনায় থাকা ১টিছাগল কুকুরের কামড়ে মারা যায়। এভাবে চলতি বছর পৌরসভার পশ্চিম ভাদুর গ্রামের বিল্লাল মিয়া ১টা, ইয়াছিন আলী ২টা, ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামের কাঁচারি বাড়ির আবুল বাশারের ১টা, বিল্লালের ১টা, হাওলাদার বাড়ির ইব্রাহিমের ২টা,তেলি বাড়ির তোফায়েল আহমেদের ২টা, দরবেশপুর ইউনিয়নের দরবেশপুর তালুকদার বাড়ির সহিদেও ২টা, বড়বাড়ির হেদায়েত উল্যাহ ২টা, আলীপুর বকসি পাটোয়ারী বাড়ির ফয়েজ আহমেদের, মাইজের বাড়ির আমিনুল ইসলামের ১টা, মুকুল মিয়ার ২টা,কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের পূর্বশেফালী পাড়ার মনির আহম্মেদের ২টাসহ উপজেলা ব্যাপী বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে হাজার ছাগল অন্যান্য পশু মারা যায়, ভাদুর ইউনিয়নের সমেষপুর চালিতা বাড়ির কৃষক কাদেরের রাস্তাপাশে বাঁধা তিনটি ছাগলের বাছুরকে কুকুর কামড়ে মেরে ফেলে।
উপজেলা প্রানিসম্পদ ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের সূত্র মতে, গড়ে প্রতিদিন ২ থেকে ৩টি গরু ছাগলকে কুকুরের কামড়ের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। জানা যায়, আগে কুকুর নিধনের মাধ্যমে বেওয়ারিশ কুকুর বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রন করা হতো। এখন নিধন নয়, ভ্যাকসিন ব্যবহার করে কুকুরের জন্মনিয়ন্ত্রনের সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে ভ্যাকসিন ব্যবহার ও নিধন বন্ধ থাকায় লাগামহীনভাবে বাড়ছে বেওয়ারিশ কুকুর। এটা যেন শাঁখের করাত। শীতে কুকুরের দাপট কম থাকলেও এখন কুকুরের দাপটে মানুষ আতঙ্কের মধ্যে আছে।
দেহলা গ্রামের আবুল বাশার,আলীপুরের মুকুল মিয়া, সমেষপুর গ্রামের বাচ্ছু মিয়াসহ এলাকাবাসী বলেন, গ্রামের কৃষকরা অতীতকাল থেকে গরু ছাগল পালন করে আসছে। বিগত কয়েক বছর থেকে ব্যাপক হারে কুকুর বৃদ্ধি পাওয়ায় খাদ্যের অভাবে পাগল হয়ে গরু ছাগল ,হাঁসমুরগী কামড়ায়। এতে ঘটনাস্থলে কিছু পশু মারা যায়। কিছু পশুকে চিকিৎসা দিলে বেঁচে থাকে। কুকুরের এ ভয়াবহ অবস্থায় অনেক মানুষ গরু ছাগল পালন করা বন্ধ করে দিয়েছে।
রামগঞ্জ পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটোয়ারী বলেন, আগেতো আমরা কুকুর নিধন করে নিয়ন্ত্রন করতাম, এখন হাইকোর্টের নির্দেশে নিধন বন্ধ রয়েছে। ভ্যাকসিন প্রয়োগ কুকুরের জন্মনিয়ন্ত্রনে ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় এটিও বন্ধ আছে।
রামগঞ্জ উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.মোঃ রাকিবুল ইসলাম বলেন, কুকুরের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায়, মানুষ এখন আর খোলামেলা ভাবে গরু ছাগল পালন করতে পারছেনা। প্রতিদিন অত্র পশু হাসপাতালে ২ থেকে ৩টি গরু ছাগলকে কুকুরের কামড়ের চিকিৎসা দিতে হয়। যে গরু ছাগল গুলি ঘটনাস্থলে মারা যায় সে হিসাব আমাদের কাছে নাই। তাই সংরক্ষিত স্থানে সর্তকতার সহিত গরু ছাগল পালন করতে হবে।
0Share