লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইউসুফ মাহমুদ নামে এক পুলিশ সদস্য তার প্রেমিকার আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দিয়েছিল। বিষয়টি সইতে না পেরে প্রেমিকা ইসরাত জাহান নাফিজা বিষপান করে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, ন্যায় বিচার, পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় লক্ষ্মীপুরের রামগতি বাজারে মানববন্ধনের আয়োজন করে রামগতি উপজেলার সচেতন নাগরিক সমাজ। ঘন্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ মানববন্ধনে।
এরআগে গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় বিষপান করে ইসরাত জাহান নাফিজা এবং ১১ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গিয়ে মামলা না নেওয়ায় পরে (২৯ আগস্ট) ইউসুফ মাহমুদসহ তার মা রহিমা বেগম ও বোন ঝর্ণা বেগমসহ তিনজনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীর বাবা মো. হেলাল বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাজী সোনিয়া আক্তার আমলে নিয়ে মামলাটি নোয়াখালী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। যা এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্য বলেছেন বিচারক।
স্বজনদের অভিযোগ ও মামলার এজহারে জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একই ইউনিয়নের তার প্রেমিক রামগতি উপজেলার বড়খেরি এলাকার বাসিন্দা ইউসুফ মাহমুদ নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সদস্য আপত্তিকর ছবি ছড়িয়েদেন। এটি সহ্য করতে না পেরে প্রেমিকা ইসরাত জাহান নাফিজা (১৮) বিষপান করে (১১ আগস্ট) তারিখে মারা যায়।
মানববন্ধনে বক্তব্যে নিহত ইসরাত জাহান নাফিজা’র চাচা মো: রাশেদ বলেন, বড়খেরী গ্রামের ইয়াছিনের ছেলে ইউসুফের সঙ্গে আমার ভাতিজি’র প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সুবাধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তা শারীরিক সম্পর্কে রূপ নেয়। ইউসুফ আপত্তিকর অবস্থায় ভিডিও ও ছবি ধারণ করে রাখে এবং তা ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্ক করে আসছিলো। লম্পট ইউসুফ একপর্যায়ে বিয়ে কথা অস্বীকার করলে বিষয়টি নাফিজা আমাদেরকে জানায়। আমরাও মেয়ের দিকে তাকিয়ে ইউসুফের সাথে বিয়ে দিতে রাজি হই এবং আমি ইউসুফকে ফোন দিয়ে বিয়ের কথা বললে সে নাফিজাকে বিয়ে করতে পারবে না ও নানা রকমের তালবাহানা শুরু করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আপত্তিকর অবস্থায় ধারণকৃত ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেয় ইউসুফ এবং আমার বোনদের ইমোতে ছবিগুলো পাঠানো হয়েছিল। আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ায় গত ১ আগস্ট ইউসুফের বাড়িতে যায় নাফিজা। এতে তাকে অপমান করে বের করে দেয় ইউসুফের পরিবার। এগুলো সহ্য করতে না পেরে ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় বিষপান করে। গত ১১ আগস্ট অবস্থার অবনতি ঘটলে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম নেওয়ার পথে নাফিজা মারা যায়।
0Share