‘করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় দুই মাস ধরে ঘরবন্দি আমরা। কেউ আমাদের সহযোগিতা করেনি। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে খাদ্যসামগ্রী পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখুক।’
রোববার (০৩ মে) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের অর্থায়নে রামগতি আ স ম আবদুর রব সরকারি কলেজ মাঠে দুই হাজার অসহায় মানুষকে দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার। এ সময় খাদ্যসামগ্রী হাতে পেয়ে বৃদ্ধ তাজুল ইসলাম, শামছুল হক ও বৃদ্ধা মনতাজের নেছা প্রধানমন্ত্রীকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।
খাদ্যসামগ্রী বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিউজ্জামান ভূঁইয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন, রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল মোমিন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেল, পৌরসভার মেয়র এম মেজবাহ উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা রাসেল মাহমুদ মান্না ও নজরুল ইসলাম ভুলু।
আল্লাহর কাছে প্রধানমন্ত্রীকে বাঁচিয়ে রাখার দোয়া করে ৭৫ বছরের বৃদ্ধ তাজুল ইসলাম বলেন, প্রায় তিন বছর আগে মেঘনা নদীর ভাঙনে আমার ভিটেমাটি সব বিলীন হয়ে যায়। আলেকজান্ডার ইউনিয়নের আসলপাড়া গ্রামে আমার বাড়ি ছিল। এখন সব হারিয়ে সন্তানদের নিয়ে চরআলগি ইউনিয়নের আলগি গ্রামে অন্যের জমিতে ঘর করে দিনযাপন করছি। আমার দুই ছেলে চার মেয়ে। বড় ছেলে বিয়ে করে ১০ বছর হয় ছেড়ে চলে গেছে। কোনো খোঁজখবর নেয় না আমাদের। ছোট ছেলে কোনোরকম সংসার চালাতো। করোনার কারণে গত দুই মাস কাজ বন্ধ হয়ে অনেক কষ্টে সংসার চলছে আমাদের। প্রধানমন্ত্রীর উপহার প্রথম পেয়েছি আমরা। এর আগে কেউ কোনো সহযোগিতা করেনি আমাদের।
একই ধরনের আক্ষেপ জানিয়েছেন বৃদ্ধ শামছুল হক ও বৃদ্ধা মনতাজের নেছা। এদিকে খাদ্যসামগ্রী না পাওয়ায় মো. রাসেদ নামে এক প্রতিবন্ধীকে নগদ অর্থ দিয়েছেন চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান।
জেলা পরিষদ সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমজীবীদের মাঝে ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে খাদ্যসামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়। চাল-ডাল, তেল, ছোলা ও শিশুখাদ্যসহ আট পণ্য মিলিয়ে ১০ হাজার প্যাকেট করা হয়েছে। ক্রমান্বয়ে জেলা সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ ও কমলনগর উপজেলায় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ কোনো মানুষ যেন না খেয়ে থাকে। করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় মানুষগুলোর খাবার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর উপহার ১০ হাজার অসহায় মানুষের ঘরে পৌঁছে দেয়া হবে।
0Share