সানা উল্লাহ সানু: ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার সুঠাম দেহের অধিকারী ফরহাদ। তাকে দেখে জাতিগত আমেরিকান মনে হলেও ফরহাদ একজন বাংলাদেশী অভিবাসী আমেরিকান । বর্তমানে ইউএস আর্মির স্পেশালিষ্ট পদে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে কাজ করছেন। বাংলাদেশে ফরহাদের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলার টুমচর গ্রামে। তিনি টুমচর গ্রামের সৈয়দ রহিম উদ্দিন পন্ডিত বাড়ির সৈয়দ সেলিমের ছেলে। তার পুরো নাম সৈয়দ মোঃ আজমুল হাসান ফরহাদ।
কিভাবে বিশ্ববিখ্যাত সেনাবাহিনীতে কাজের সুযোগ পেলেন এ বাংলাদেশী যুবক, তা জানতে কথা হয় ফরহাদের সাথে।
এসময় তিনি বলেন, অনেকটা কৌতুহল নিয়ে ইউএস আর্মির নিয়োগ প্রক্রিয়া সর্ম্পকে জানতে গিয়েই শেষ পর্যন্ত ইউএস আর্মিতে যোগদানের সুযোগ পাই। ইউএস আর্মির চাকুরী ও নিয়োগ প্রক্রিয়া সর্ম্পকে টিবিএস প্রতিনিধির সাথে কথা বলতে গিয়ে এমনটা জানান ফরহাদ।
ফরহাদ বলেন, ২০১২ সালে বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী শেষ করার পরেও ভালো কিছু করার সুযোগ হয়নি। মাঝে নানা পেশায় যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করি। কিন্ত ভালো কিছু হয়নি। অবশেষে করোনার পর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অভিবাসন ভিসায় আমেরিকায় চলে আসি। আমেরিকায় এসে নিউইয়র্কের একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে যোগদান করি। ওই কোম্পানীতে আসা যাওয়ার পথেই ছিল ইউএস আর্মি অফিস। কৌতুহল বশত একদিন মার্কিন আর্মিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সর্ম্পকে জানতে সেই অফিসে যাই। অফিসে বিস্তারিত জেনে এসে পরবর্তীতে বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে আর্মিতে দরখাস্ত করি। তখন আমার বয়স ৩৫ বছর। শেষে পরীক্ষা দিয়ে আমি মার্কিন আর্মিতে যোগদানের সুযোগ পাই।
বর্তমানে আমি ইউএস আর্মির কোয়ার্টার মাস্টার কোরের স্পেশালিষ্ট হিসেবে যোগদানের সুযোগ পেয়ে বেসিক কমব্যাট ট্রেনিং শেষ করি। চলতি বছরের জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনার পোর্ট জ্যাকসন ট্রেনিং সেন্টার থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করি। বর্তমানে ভার্জিনা অঙ্গরাজ্যের ইউএস আর্মিতে কর্মরত আছি।
ফরহাদ বলেন, ইউএস আর্মির একটি বিশেষ দিক হচ্ছে এ বাহিনীর সদস্যরা পেশাগত জীবনে অনেকটা স্বাধীন। সে কারণে যে কেউ ইচ্ছে করলেই ৪০ বছর পর্যন্ত এ বাহিনীতে কাজ করে ইচ্ছে মতো আবার পেশা বদল করতে পারে। যে কোন সময় আসা যাওয়া করতে পারে।
তবে আমার জন্য বাংলাদেশ হিসেবে ইউএস আর্মিতে স্পেশালিষ্ট হিসেবে চাকুরী করা একটা গর্বের বিষয়।
সৈয়দ মোঃ আজমুল হাসান ফরহাদের জন্ম ১৯৮৭ সালে । ছোট বেলা কেটেছে তার নানা বাড়ি রায়পুর উপজেলার চর বংশীতে। তিনি রায়পুর উপজেলার চর বংশী জয়নালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৩ সালে এসএসসি এবং ২০১২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ঢাকার একটি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রী শেষ করেন। বর্তমানে সপরিবারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন তিনি।
0Share