সাজ্জাদুর রহমান/বাংলানিউজ: লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনা নদীর ভাঙন রোধের জন্য বাঁধ নির্মাণ কাজে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে এ কাজ বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কাজ না করে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় আদৌ বাঁধ তৈরি করা হবে কিনা এ নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দেওয়ায় ফুঁসে উঠছে কমলনগরের জনগণ। তারা ২০ এপ্রিল সড়ক অবরোধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাট-বাজারের দোকান-পাট বন্ধ রেখে তোরাবগঞ্জ থেকে করুণানগর পর্যন্ত ১৭ কিমি এলাকা জুড়ে মানববন্ধন করে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
কমলনগর নদী ভাঙন প্রতিরোধ কমিটি আয়োজিত ওই কর্মসূচিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ অংশ নিবেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর এলাকায় বাঁধ নির্মাণে এক হাজার ৩৫০ কোটি টাকার প্রকল্প পাশ হয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে। ২০১৪ সালের ৫ আগস্ট একনেক বৈঠকের প্রথম পর্যায়ে ১৯৮ কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ের বরাদ্দকৃত টাকায় রামগতিতে এক কিলোমিটার, আলেকজান্ডারে সাড়ে তিন কিলোমিটার এবং কমলনগরে এক কিলোমিটার বাঁধ বাস্তবায়ন হওয়ার কথা ছিলো।
গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৯ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন আলেকজান্ডার এলাকায় সাড়ে তিন কিলোমিটার কাজ বাস্তবায়ন করে। যে কারণে ওই এলাকায় নদী ভাঙন প্রতিরোধ হয়েছে।
একই সময়ে বরাদ্দকৃত টাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কমলনগর উপজেলার মাতাব্বর হাট এলাকায় এক কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের কাজ পায়। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানটি সময় ক্ষেপণ করে এখনো পর্যন্ত কাজ শুরু করেনি। কাজ শুরু না করায় কমলনগরের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
রোববার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে কমলনগর উপজেলা নদী ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির আয়োজিত এক বিশেষ সভায় বলা হয়, একই সঙ্গে বরাদ্দকৃত টাকায় পার্শ্ববর্তী রামগতি উপজেলায় সেনাবাহিনী কাজ করলেও কমলনগর উপজেলায় এখনো কাজ শুরু করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ অবস্থায় বাঁধ নির্মাণের দাবিতে তারা সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবার স্মরকলিপি দেওয়ার ঘোষণা দেন।
নদী ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল মোতালেব ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুনের প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল হক ওই সভায় বক্তব্য রাখেন।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের তত্ত্বাবধায়ক কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, কাজ শুরু করার জন্য বিভিন্ন মালামাল মজুদ করা হচ্ছে। দ্রুতই কাজ শুরু হবে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবি) নির্বাহী প্রকৌশলী গাজী ইয়ার আলী বাংলানিউজকে বলেন, বালু, জিও ব্যাগ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই কাজ শুরু করা হবে। কাজ না করে টাকা তুলে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজ না করে টাকা তোলার কোনো সুযোগ নেই।
0Share