সাইফুল ইসলাম স্বপন/শাকের মোঃ রাসেল: রামগতি ও নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার বাসিন্দাদের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করা হচ্ছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে রামগতির ভোটারদের হাতিয়া উপজেলার ভোটার বানাতে গিয়ে এই দু উপজেলার বাসিন্দারা এখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। যে কোন মূহুর্তে বড় ধরণের সংঘর্ষ ও প্রানহানির আশংকা করছেন সাধারণ মানুষ। হাতিয়ার বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে লুটপাট, নারী নির্যাতন ও আগ্রাসী ভূমিকার অভিযোগ এনে ও রামগতির নাগরিক হয়ে বসবাস করতে ২০ টি সমাজের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এখন আন্দোলনে নেমেছেন। প্রতিদিন বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, রামগতির চর গাজী ইউনিয়নের ভুলুয়া নদী পার হয়ে একটু দক্ষিনে গেলেই বয়ার চর। যেখানে চোখে পড়ে ফসলের মাঠের কাশফুল ও বেড়ীতে লাগানো পাহাড়ী গাছের সমারোহ আর ছোট ছোট টুপরী ঘর।এসব ঘরে বসবাস করছেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নদী ভাঙ্গা ও ভুমিহীন মানুষ। যারা প্রতিনিয়ত নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। নিম্ম আয়ের এসব অসহায় মানুষ এখন প্রতিদিন সমবেত হন বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ কিংবা মানববন্ধনে। তাদের দাবী ১৯৩৫ সাল থেকে রামগতি উপজেলার সাথে বয়ার চর এলাকাসহ এর দক্ষিণে মেঘনা নদীর ১০ কিঃ মিঃ পর্যন্ত সীমান্ত ছিল। হঠাৎ করে ২০০৬ সালে বয়ার চরকে হাতিয়া উপজেলার বলে দাবি করে হাতিয়ার জনগন। ২০০৭ সালের ভোটার তালিকায় বয়ারচরে চরগাজী. চর লক্ষ্মী, চর দরবেশ, দক্ষিণ টুমচর ও চর জয়লাম সহ ৬ টি মৌজার মানুষ রামগতি উপজেলার চর গাজী ইউনিয়নের ৫, ৬ ও ৯ নং ওযার্ডের ভোটার হন। তার আগেও ১৯৯১,৯৬, ২০০১,২০০৮ ও সবশের্ষ ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ র্নিবাচনে রামগতি উপজেলার ভোটার হিসেবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। হঠাৎ গত ১৭ অক্টোবর রামগতির বয়ার চরে হাতিয়া উপজেলার লোকজন ভাটার তালিকা হাল নাগাদ করতে আসেন ওই এলাকায়। এসময় স্থানীয় লোকজন তাদের বাধা দেয়। বাধার মুখে ফিরে যেতে বাধ্য হন তারা। পরে প্রতিদিন হাতিয়ার লোকজন রাতের বেলায় প্রশাসনের লোকজনের সহযোগিতায় সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ওই এলাকায় প্রবেশ করেন। ভোটারদের কাছ থেকে তাদের ভোটার আইডি কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া কারো কারো কাছ থেকে ভূমি বন্দোবস্ত দেয়ার কথা বলে পরিচয় পত্র নিয়ে যাওয়া এবং গরু, মহিষ নিয়ে যাওয়াসহ নারী নির্যাতনও করছেন বলে অভিযোগ করেন বয়ারচরের বাসিন্দারা। এমন পরিস্থিতিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠে বয়ার চর। সিমান্ত জটিলতা নিয়ে আদালতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।এলাকার জন প্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের দাবি প্রশাসন ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে এসমস্যর দ্রুত সমাধানের। তা না হলে যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধতেঁ পারে এবং প্রাণ হানির আশংকা করছেন তারা। খবর পেয়ে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী, বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসির সাথে কথা বলেন এবং নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারের সাথে আলাপ করে শান্তিপূর্ন অবস্থানে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।
0Share