নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সন্ত্রাসী কিংবা চোর ডাকাতের ভয়ে নয়, রক্তখেকো রাক্ষসের ভয়ে আতংকে দিন কাটাচ্ছেন লক্ষ্মীপুরের কমলনগর, রামগতি এবং সদর উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কিছু সাধারণ মানুষ। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এ এলাকাগুলোতে ছোট থেকে বড় কিংবা বয়-বৃদ্ধ সবার মুখে মুখেরাক্ষস নিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। কিছু এলাকায় মহিলাদের মাঝে দেখা যাচ্ছে আতংকের ছাপ। আবার অনেক এলাকায় ছোট শিশুরা ও স্কুলে আসছে আতংকে। এ নিয়ে বিস্তারিত জানানোর জন্য গত কয়েক দিন থেকে লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরের কাছে বেশ কয়েকটি ফোন এসেছে।
রাক্ষসের খোঁজ জানতে চাইলে কমলনগরের তোরাবগঞ্জ এলাকার স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি জানান, তারা নিজ এলাকার বিভিন্ন লোকজনের নিকট শুনেছেন- মেঘনা নদী থেকে এক প্রকার বিরাট পাখি নাকি আসেছে তাদের এলাকায়। তাদের ভাষায় সে গুলো নাকি মূর্হতেই ভয়ংকর আকৃতি ধারণ করে এবং মানুষ পেলে তাদের পিঠের ওপর চড়ে রক্তচুষে খায়। তাদের মধ্যেই কেউ কেউ অন্যজনের কথা দ্বিমত পোষণ করে বলেন, পাখি নয় কুকুরের চেহারার এক প্রকার প্রানী নাকি মানুষ ধরে ধরে রক্তচুষে খায়।
কেউ বলেছে ফজুমিয়ারহাট আবার কেউ বলেছে চরকালকিনিতে নাকি ২ জনের রক্ত খেয়ে আছড়ে মেরে ফেলেছে এ রাক্ষস! এ রকম অদ্ভুত সব গল্পই এখন গ্রাম জুড়ে লোকের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে। তবে কেউই রাক্ষস নামক প্রানীটি নিজেদের চোখে দেখেনি বলে স্বীকার করেছে।
লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরের পক্ষ থেকে কমলনগরের ফজুমিয়ারহাট, চর কালকিনি এবং রামগতির বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে ২ জন লোক মারা যাওয়া বা কোন ব্যক্তির রক্ত খাওয়ার খবরের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে এসব এলাকার কিছু সাধারণ গ্রামবাসি যে রাক্ষস নামক অলিক প্রানীর আতংকে আছে তা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর কে জানান, তারঁ স্ত্রী রাক্ষস ভয়ে সন্ধ্যার পর ঘরের বাহিরে বের হন না। এ নিয়ে শিক্ষকের স্ত্রীর সাথে ওই শিক্ষকের মনমালিন্য ও হয়েছে। ওই শিক্ষক বহু বলেও স্ত্রীকে বুঝাতে পারেন নি। স্কুলের ছোট ছাত্রছাত্রীদের মাঝে ও রাক্ষস বের হওয়ার আতংক ছড়িয়েছে । অনেক গ্রামের মহিলা ও শিশুরা বিশেষ প্রয়োজনে রাতে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না বলেও বিভিন্ন মাধ্যমে শুনা যাচ্ছে।
রাক্ষস গুজব বিষয়ে জানতে চাইলে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির আহমেদ লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর কে বলেন, রাক্ষস নামক এ রুপ গুজবের কথা তিনি জানেন না। কমলনগর এলাকার এ রকম কোন খবর ও তার কাছে নেই। তিনি আরো বলেন, এটা গুজব ছাড়া কিছুই নয়। সাধারণ মানুষ কে এসব গুজবে কান না দেওয়ার জন্য পরামর্শ ও দেন তিনি।
অন্যদিকে রামগতি-কমলনগরের সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি এডভোকেট আনোয়ারুল হক মোবাইল ফোনে লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর কে বলেন, আধুনিক যুগে এ ধরনের গুজব ছড়ানো এবং বিশ্বাস করা দুঃখজনক ঘটনা। তিনিও এ সকল গুজবে কান না দেয়ার জন্য পরামর্শ দেন।
0Share