লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে অনুমোদনহীন অবৈধ ৫১টি ইটভাটা বন্ধের লক্ষ্যে হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন ও সরকারি আদেশ সংক্রান্ত অবহিতকরণ ও বিশেষ সমন্বয় সভা আয়োজন করা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর লক্ষ্মীপুরের সহযোগিতায় মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন রামগতি সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন কাফি, পরিবেশ অধিদপ্তর লক্ষ্মীপুরের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ, রামগতি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কবির হোসেন, উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুর রহিম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক মোঃ লোকমান হোসেন বাবলু, রামগতি প্রেসক্লাব সভাপতি রেজাউল হক, অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতৃবৃন্দ এবং ইটভাটার মালিকগন।
সভায় আলোচনায় অংশ নিয়ে ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছানা উল্যাহ বলেন, একটা উপজেলায় অনেক ইটভাটা থাকার দায় স্বীকার করে আরো বলেন বিদ্যমান ভাটাগুলো কে পরিবেশ ছাড়পত্রসহ আইনী প্রক্রিয়া সহজিকরণ করে ভাটা পরিচালনার সুযোগ দেওয়ার দাবি করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মাসুদ জাহান বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসা ও ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে জরিপ করে দেখা গেছে উপজেলা যে যে এলাকায় ইটভাটা পরিমাণ বেশী ওই সমস্ত এলাকার নারী শিশুরা সর্দি কাসিসহ নানাধরণের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে তাদের স্বাস্থ্যে ঝুঁকি বাড়ছে।
উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুর রহিম বলেন, বিগত সরকারের আমলে রামগতিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন রকম ছাড়পত্র ছাড়াই ব্যপক হারে অবৈধ ইটভাটা গড়ে উঠে যার পরিমাণ ৫০ টির অধিক, এগুলো মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষতি করছে। এছাড়া ফসলি জমির টপ সয়েল, সবুজ বনায়ন এবং রাস্তার ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি ওজনের ইট বোঝাই ট্রাকের মাধ্যেমে ইট পরিবহন করায় সমস্ত রাস্তা ঘাট ধসে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভাটা মালিকগন এদেশের লোক তাদের উচিৎ দেশের বিবেচনায় অপ্রয়োজনীয় ভাটা কমিয়ে আনা।
পরিবেশ অধিদপ্তর লক্ষ্মীপুর সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, বর্তমানে রামগতিতে ৫১ টি ইটভাটা চলমান আছে যার মধ্যে বনলতা ও সরকার ব্রিকস নামে দুটি ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নিয়েছেন। বাকি ৪৯ টি ইটভাটা ছাড়পত্র নেননি ফলে বাকি সব অবৈধ অতএব ভাটা বন্ধ করুন। মহামান্য হাইকোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশনা হচ্ছে সকল অবৈধ ইটভাটা বন্ধ রাখার, অনতিবিলম্বে তা কার্যকর করা হবে।
এসময় সভার সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, বিগত সিজনে ৫১ টি ইটভাটাতে ৫১ বার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি। এতে অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা ও পরিবেশ ছাড়পত্রসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ভাটা মালিকদের কাছ থেকে ৮৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ওই সময় চিমনি না থাকায় ও জ্বালানি কাজে গাছের গুড়ি ব্যবহার করায় ১২ টি ইটভাটা মালিক পক্ষ ভাটা বন্ধ রাখতে মুচলেকা দেন। এসময় ভেকু মেশিনের সাহায্যে ভাটা গুড়িয়ে দেওয়াসহ কয়েক লক্ষ কাঁচা ইট বিনষ্ট করা হয়।
48Share