লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের পশ্চিম চররমনী মোহন গ্রামের বাসিন্দা শিল্পী আক্তার, বয়স ২৭ বছর। স্বামী আবদুর রশিদ একজন জেলে। ১২ বছরের একটি কন্যা শিশু রয়েছে তাদের পরিবারে। নদীতে মাছ শিকার করে যা পান তা দিয়ে চলে অসহায় এ পরিবারের সংসার।
গত চার মাস আগে শিল্পী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরীক্ষার-নিরীক্ষার পর ডাক্তার জানতে পারেন শিল্পীর পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে। অপারেশন করালে সুস্থ হবেন শিল্পী। কিন্তু যেখানে তাদের সংসার চালাতে কষ্ট হয়, সেখানে শিল্পী চিকিৎসা বা অপারেশন করানোর মতো কোন সাধ্য নেই তার স্বামীর আবদুর রশিদের। তাই সমাজের ভিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছে অসহায় এ পরিবারটি। মাত্র এক লাখ টাকা হলে অপারেশন ও ওষুধপত্রসহ আনুষাঙ্গিক খরচ চালাতে পারতেন তারা।
শিল্পী জানান, অসুস্থ হওয়ার পর নোয়াখালীর একটি হাসপাতালে যান তারা। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানতে পারেন তার পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে। ডাক্তার এক মাসের মধ্যে অপারেশন করার পরামর্শ দেন, আর কিছু ঔষধপত্র দিনয়ে দেন। কিন্তু অপারেশন তো দূরে থাক ওষুধপত্র কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।
শিল্পী আরো জানায়, আমার স্বামী পেশায় একজন জেলে। নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে সে আহত হয়। এর পর থেকে সেও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মাঝে মধ্যে নদীতে মাছ ধরতে যায়। যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। আমার অপারেশন কারানো তো দূরের কথা, ব্যবস্থাপত্রে ডাক্তার যে ওষুধ লিখেছে সেগুলো কেনার মতো সাধ্য নেই আমাদের। মাঝে মধ্যে চরম ব্যাথা উঠে, তখন ব্যাথানাশক ওষুধ সেবন করি। কিন্তু চিকিৎসক বলছে এক মাসের মধ্যেই অপারেশন করাতে। এখন দুই মাস পার হয়ে গেছে, দিন দিন আমার অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে।
শিল্পীর ভাসুরের স্ত্রী বলেন, এ পরিবারটি একেবারে অসহায়। কোনমতে তাদের সংসার চলে। কিন্তু শিল্পীর চিকিৎসা চালানোর মতো কোন অবস্থা তাদের নেই। তাই সমাজের বিত্তবানরা যদি শিল্পী চিকিৎসায় সহযোগীতা করতো, তাহলে তার জীবনটা রক্ষা পেত।
শিল্পীর ১২ বছরের শিশু কন্যা সামিয়া আক্তার বলেন, আমার মা খুবই অসুস্থ। ব্যাথা উঠলে খুব কষ্ট পায়। তাকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করুন।
শিল্পীর মা মালেকা বেগম বলেন, গত শুক্রবার (১ জুলাই) শিল্পী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেয়। কিন্তু অর্থের অভাবে সেখানে নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই লক্ষ্মীপুরে শহরের ওয়েলকেয়ার হাসপাতালে শিল্পীকে আপাতত ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে ৭০ হাজার টাকা হলে অপারেশন করানো সম্ভব হবে। কিন্তু টাকার অভাবে অপারেশন করানো যাচ্ছে না। আমার স্বামী নেই, টাকার অভাবে এখন মেয়েটাও বুঝি মারা যাবে?
শিল্পীর স্বামী আবদুর রশিদ বলেন, আমি নদীতে মাছ ধরে সংসার চালাই। আমি নিজেই অসুস্থ। মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতের শিকার হয়ে আহত হয়েছি।সংসার চালাতে পারি না। স্ত্রীর অপারেশন করাবো কিভাবে?
শিল্পীর চিকিৎসায় কেউ সাহায্য করতে চাইলে ০১৮৩১৩৫৪৮৯৪ এ নম্বরে যোগাযোগের অনুরোধ করেন শিল্পীর পরিবারের সদস্যরা।
0Share