নানা প্রতিকূলতা প্রেরিয়ে সমাজ উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখায় লক্ষ্মীপুরের নারী শাহাদা আক্তার সাহেদাকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় জয়িতা পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনেরর কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ পুরস্কার প্রদান করে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।
৩১ জানুয়ারি মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ আমিনুর রহমান এনডিসি সভাপতিত্বে আলোচনা সভা সন্মাননা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতু নেসা ইন্দ্রিরা এমপি, অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল অংতগ্রহন করেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রাম জেলা ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন বিপিএম (বার), মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সচিব ফরিদা পারভীন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ হাসানুজ্জামান কল্লোল। আরো উপস্থিত ছিলেন জয়ীতা নারী ও সুধীজনরা।
সমাজ উন্নয়নে সফল “জয়িতা” নারী শাহাদা আক্তার শাহিদা (২৯) । কৃষক পরিবারে জন্ম তার। পরিবারে আর্থিক অবস্থা মোটেই ভালো ছিলো না। তার বাবা ছিলেন একজন গ্রাম পুলিশ ও কৃষক। ফলে পরিবারের টাকায় লেখাপাড়া চালানোর কোন উপায় ছিলো না। নিজের প্রচেষ্টায় বিএসএস পাশ করেছেন। লেখাপাড়া চলাকালীন সময়ে ২০০৯ সালে সাতশ টাকা বেতনে একটি এনজিওতে কাজ শুরু করেন।
সেখানে নারীদের বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা করা, কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে উঠান বৈঠকের আয়োজন করতেন তিনি। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত একটি এনজিওতে কাজ করেন। ২০১৭ সালে ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক ইউনাইটেড পারপাস কারিতাস বাংলাদেশ এনজিওতে কাজ করেছেন। বর্তমানের তিনি কমলনগর উপজেলা যুব মহিলালীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
শাহিদা ২০১৩ সাল থেকে নিজ এলাকায় অসহায় নারীদের সাহায্যে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নারী নির্যাতন, যৌতুক, বাল্য বিবাহ নিরোধ নিয়ে কাজ করেন তিনি। বর্তমানের কিশোর-কিশোরী ক্লাবের মাধ্যমে তাদের সচেতন করার কাজ করেন শাহিদা। সাহিদা আজ একজন সফল নারী। তিনি একজন সমাজসেবকও।
সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় তাকে জেলায় পর্যায়ে সম্মাননা ও ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়েছে। সহিদার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার দক্ষিণ চর মার্টিন গ্রামে। তারা পিতার নাম ফয়েক আহম্মদ। জীবনে সফলতা অর্জনকারী এ নারী বর্তমান অবস্থানে আসতে হয়েছে নানা বাধা পেরিয়ে। সহিদা বলেন, অভাবের সংসারে লেখাপাড়া করাটা খুব কঠিন ছিলো। পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে বহুকষ্টে এসএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করার সহযোগীতা করা হলেও পরবর্তীতে আর সহযোগীতা করার মতো অবস্থা ছিলো না। আমি নিন্ম বেতনে একটি এনজিওতে চাকরী নিয়ে নিজের লেখাপড়া চালিয়ে আজ এ পর্যন্ত এসেছি। নানা প্রতিকূলতাকে জয় করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি। সমাজের নারী ও কিশোর-কিশোরীদের সচেতনসহ নানা বিষয় নিয়ে আমি কাজ করে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে আমার এ কাজ অব্যাহত থাকবে।
শিক্ষা চাকরি সফলতা, সফল জননী, অর্থনৈতিকভাবে সফলতা, সমাজ উন্নয়নে অবদান, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে নতুন জীবনে সফলতাসহ ৫ টি ইভেন্টে মোট ১০ জন জয়িতাকে সম্মাননা হিসেবে ক্রেস্ট ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়।
0Share