আবুল কালাম আজাদ: মেঘনা নদীর উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুর। ১৯৯৩সালের পর থেকে এ শান্তির জনপদ ‘সন্ত্রাসের জনপদ’ হিসেবে কুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে এ জেলায় অনেকটা শান্তি ফিরেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ‘বিএনপির দূর্গখ্যাতি’ থাকলেও বর্তমান সরকারের সময়ে
কয়েকটি উন্নয়ন কাজ নজর কেড়েছে স্থানীয়দের। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, লক্ষ্মীপুরের অলক্ষ্মী দূর করে শান্তি ও উন্নয়নের ‘লক্ষ্মী’ ফেরাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বসহকারে দেখছেন। এ জেলার উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তাদের একমাত্র ভরসা। দলীয় ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ৫জানুয়ারী জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তৃণমূল নেতাদের এক সভায় দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করে ‘অলক্ষ্মী’ দূর করার জন্য লক্ষ্মীপুরের দলীয় নেতাদেরকে তাগিদ দেন। এ নিয়ে তিনি হাস্যরসও করেন। পরে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর প্রায় দুই শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে রামগতি-কমলনগর মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষন বাঁধ নির্মাণ, রামগতি সড়ক সংস্কার কাজ, ভূমিহীনদের জন্য বেশ কয়েকটি আশ্রয়ণ প্রকল্প, যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্র, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ভবনসহ নানা উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করা হয়।
জেলায় ২৩টি সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর কারনে আইন শৃঙ্খলার ছিল চরম অবনতি। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর পুলিশের তৎপরতায় কয়েকটি সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধানের পতন হয়। এতে করে কিছুটা স্বস্তি ফিরে জনমনে। বিএনপির দূর্গখ্যাত এ জেলায় বর্তমানে সবকটি পৌর সভার মেয়র, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যান অধিকাংশই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের।
১৮লাখ মানুষের এ জেলায় প্রধান সমস্যা নদী ভাঙ্গন। রামগতি-কমলনগর মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষন প্রকল্পের ১ম পর্যায়ে ২শ’ কোটি টাকায় প্রায় ৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মিত হলেও এখনো ২২ কিলোমিটার এলাকায় নদী ভাঙ্গন অব্যহত রয়েছে। প্রতিদিন বিলিন হচ্ছে ঘরবাড়ি ফসলী জমি ও সরকারি বেসরকারি স্থাপনা। রেল লাইন সংযোগ না থাকায় কৃষি নির্ভর এ জেলার বাসিন্দারা এখনো পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় পিছিয়ে।
৯টি ইউনিয়ন নিয়ে ৩বছর আগে চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকা গঠন হলেও এখনো উপজেলা বাস্তবায়ন হয়নি। এতে করে সদর উপজেলার দূরত্ব বেশী হওয়ায় ওই থানা এলাকার বাসিন্দারা প্রশাসনিক ও দাপ্তরিরক কাজে নানা দূভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। প্রায় ২০ বছর পর ১৪মার্চ লক্ষ্মীপুরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জেলার সর্বস্তরের মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১৫টি দাবি উপস্থাপন করবে।
দলীয় নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের মানুষ, বঙ্গবন্ধুর কন্যার কাছে স্বপ্ন দেখছেন দাবিগুলো বাস্তাবায়নের। এসব দাবি বাস্তবায়ন হলে লক্ষ্মীপুরের পুরোপুরি লক্ষ্মী ফিরবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। শনিবার বিকেলে লক্ষ্মীপুর শহরে নিজ বাস ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু জানান, ১৪মার্চ বিকেল ৩টায় জেলা ষ্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ‘স্মরনীয়’ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। লক্ষ্মীপুরের উন্নয়ন ও লক্ষ্মী ফেরাতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। তিনি অবহেলিত লক্ষ্মীপুরবাসীর ভরসা। লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার আ স ম মাহাতাব উদ্দিন জানান, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর লক্ষ্মীপুরের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা মতে পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করায় বর্তমানে এ জেলা শান্তির জনপদে পরিনত হয়েছে। একসময় সন্ত্রাসের জনপদ বললেও বর্তমানে লক্ষ্মীপুর শান্তির জনপদ। ১৪মার্চ প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন প্রদক্ষেপ গ্রহন করেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ।
0Share