শাকের মোহাম্মদ রাসেল: এক সময়ে সব শ্রেণী পেশার মানুষের বিনোদনের মাধ্যম ছিল সিনেমা হল। ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় গত ৫ বছরে লক্ষ্মীপুরে ১৩টি সিনেমা হলের মধ্যে ১০টি’ই বন্ধ করে দিয়েছে মালিক পক্ষ। যে দুইটি সিনেমা হল চালু রয়েছে তাও বন্ধের পথে। বাংলাদেশে নিম্মমানের সিনেমা ও ডিস লাইনে ভারতীয় সিনেমার প্রভাবকে দায়ী করেছেন মালিক ও দর্শকরা।
জেলা তথ্য অফিস সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরের ৫ উপজেলায় ১৩টি সিনেমা হল ছিল। গত ৭ বছরে লক্ষ্মীপুর শহরে ঝুমর, রায়পুরে তাজমহল, বাশরী, বুলবুল টকিজ সিনেমা হলসহ ১০টি সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে। ৮০ দশকে সিনেমা হল ভর্তি দর্শক ছিল। দর্শকদের ছিল উপচে পড়া ভিড়। এসব হল গুলোতে প্রতিদিন তিনটি শোতে সিনেমা প্রদর্শন হত। ৯০ দশকের শেষের দিকে ধীরে ধীরে গ্রাম পর্যায়ে ডিস ভারতীয় ছবি প্রদর্শনের কারণে সিনেমা হল গুলোতে দর্শক কমতে থাকে। এক পর্যায়ে লোকসান গুনতে গুনতে মালিকপক্ষ সিনেমা হল বন্ধ করে দেয়। ভালো সিনেমা নির্মাণ করে পূনরায় সুষ্ঠু বিনোদনের মাধ্যমে দর্শকদেরকে হলমুখি করতে পারলেই এ শিল্পেকে বাঁচিয়া রাখা সম্ভব হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া সরকারি উদোগে ঋণ সহায়তা দিয়ে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখার দাবি জানিয়েছেন মালিকপক্ষ।
সিনেমা হল মালিক ও দর্শকরা জানায়, ১৯৮২ সাল থেকে সিনেমা হল ব্যবসা করে আসছি। বর্তমানে ভারতীয় ছবি, ডিস লাইন ব্যবসা ও বাংলাদেশের সিনেমার মান খারাপ হওয়ার কারণে দর্শকরা হলে আসেন না। ফলে প্রতিদিন লোকসান হওয়ার কারণে মালিকরা সিনেমা হল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। ইতিমধ্যে ১৩টি সিনেমা হলের মধ্যে ১০টিই বন্ধ হয়ে গেছে। বাকীগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম। যদি ভালো মানের চলচ্চিত্র তৈরি করা হয় তাহলে এ শিল্পে বেঁচে থাকবে। দর্শকরা আবারও হলমুখি হবে। তাই সরকারি উদোগে ঋণ সহায়তা দিয়ে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা। ভালো মানের সিনেমা তৈরি হলে দর্শকরা হলমুখি হবে। ভারতের সিনেমার মান বাংলাদেশ থেকে অনেক ভালো তাই সবাই ভারতের সিনেমার দিকে ঝুকিয়ে পড়েছে। চলচ্চিত্র অধিদফতরের নিকট ভালো মানের চলচ্চিত্র নির্মাণ করে দর্শকদের হলমুখি করার দাবি জানিয়েছেন দর্শকরা।
তবে জেলা তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল্যাহ আল মামুন জানান, বর্তমানে সিনেমা হলগুলোকে যদি আধুনিকায়ন অথবা ডিজিটালাইজট করা হয় তাহলে দর্শকরা সিনেমা হলে এসে সিনেমা দেখবে এবং দর্শক সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। ইতিমধ্যে যেসব সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে সেগুলো মালিকপক্ষ পূনরায় চালু করতে চাইলে জেলা তথ্য অফিস সামগ্রীকভাবে সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন।
আরো পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে বিনোদন কেন্দ্রের অভাব” সিনেমা হল বন্ধ: চায়ের দোকানই সিনেমা হল
0Share