মিসু সাহা নিক্কন : মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী বেহুন্দি জাল, কারেন্ট জাল, খুঁটি জাল, চরঘেরা জাল, মশারি জাল ও অন্যান্য ক্ষতিকর অবৈধ জাল অপসারণে লক্ষ্যে লক্ষ্মীপুরের রামগতির মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তর।
বুধবার বিকেলে আসলপাড়া স্কুল ঘাটে বিশেষ কম্বিং অপারেশনে জব্দ করা অবৈধ জালগুলোতে আগুন লাগিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। এরআগে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে দিনব্যাপি টহল ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
উক্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম শান্তুনু চৌধুরী। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন, কোস্টগার্ড পেটি অফিসার মো. বাবুল আক্তার।
অভিযানকালে ২০টি বেহুন্দি জাল, ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ও ১৫ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়েছে। পরে, জব্দকৃত ওই জালগুলোকে মেঘনার পাড়ে এনে আগুন দিয়ে ধ্বংস করা হয় এবং জব্দকৃত মাছগুলোকে স্থানীয়দের মাঝে বিলি করা হয়েছে।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন, দেশের মৎস্যসম্পদ ধ্বংসকারী অবৈধ জাল অপসারণে বিশেষ কম্বিং অপারেশন শুরু করেছে সরকার। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় চলতি বছর ১৭টি জেলায় বেহুন্দী জাল, কারেন্টজালসহ মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী সকল প্রকার অবৈধ জাল অপসারণে ৩০ দিনব্যাপী বিশেষ এ অভিযান পরিচালনা করছে। জাটকা ও সামুদ্রিক মাছের ডিম, লার্ভী ও পোনা রক্ষায় গত ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ থেকে থেকে শুরু হওয়া এ অভিযান চার ধাপে চলবে ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, বিশেষ কম্বিং অপারেশন-২০২২ উপলক্ষে আজকে আমাদের এ অভিযান। ক্ষতিকর অবৈধ জাল অপসারণের লক্ষ্যে মাসব্যাপি কয়েক ধাপে এ অভিযান চলবে।
উল্লেখ্য, দি প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ রুলস, ১৯৮৫ অনুযায়ী সরকার ২০১৩ সালে মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী বেহুন্দি জাল, মশারি জাল, চরঘেরা জাল, বেড়/জগৎবেড় জাল, কারেন্ট জাল প্রভৃতি ক্ষতিকারক জালের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এবং ইলিশ আহরণের জালের ফাঁস ৬ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার বা ২ দশমিক ৬ ইঞ্চি নির্ধারণ করেছে। মৎস্য সম্পদের জন্য ক্ষতিকর এসব জালের ব্যবহার বাড়লে জাটকাসহ সামুদ্রিক ও উপকূলীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের ডিম, রেণু ও পোনা নষ্ট হবে এবং উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ার পাশাপাশি জলজ জীববৈচিত্র্য নষ্ট হবে। সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধঘোষিত এসব জাল ব্যবহারকারীকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।
0Share