এমআর সুমন: করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং জরুরি সেবা ছাড়া সব ধরনের পরিবহন ব্যবস্থা। এ অবস্থায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। তাই কর্মহীন, দুস্থ ও অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার প্রশাসন। প্রতিদিনই উপজেলার কোনো না কোনো এলাকায় সরকারি ব্যক্তিগত ও ত্রান সামগ্রী নিয়ে হাজির হচ্ছেন রায়পুর সার্কেল অফিসের সহকারী পুলিশ সুপার স্পিনা রানী প্রামাণিক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরীন চৌধুরী। তারা দু’জনই নারী কর্মকর্তা। কিন্তু কাজ করছেন পুরুশের চেয়ে দ্বিগুন।
বুধবার সন্ধ্যায় ও বৃহস্পতিবার সকালে ওই দুই কর্মকর্তা পৌর এলাকার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় দুই শতাধিক কর্মহীন মানুষ, ও ভিক্ষুকদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। তবে সহকারী পুলিশ সুপার একেবারেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় এক সাপ্তাহ ধরে এই ত্রান বিতরণ করছেন।
জানা গেছে, করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকে জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল ও জেলা পুলিশ সুপার ডা. এ এইচ এম কামরুজ্জামানের নির্দেশে রায়পুর সার্কেল অফিসের সহকারী পুলিশ সুপার স্পিনা রানী প্রামাণিক ও ইউএনও সাবরীন চৌধুরী উপজেলার নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী, কর্মহীন অভাবী মানুষ ও ভিক্ষুকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেন ও তাদের হাতে নিজ ব্যক্তিগত ও সরকারি খাদ্য সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন এই দুই কর্মকর্তা। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিকালে পৌর এলাকার বিভিন্ন পাড়া মহল্লার দুই শতাদিক কর্মহীন, নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী দুস্থ মানুষ ও ভিক্ষুকদের বাড়িতে গিয়ে তাদের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলেদেন তিনি। খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ১০ কেজি চাউল, ৫ কেজি আলু, ২ কেজী মশুর ডাল, ১ লিটার তেল, ও একটি খারযুক্ত সাবান রয়েছে।
ইউএনও সাবরীন চৌধুরী বলেন, প্রাথমিক ভাবে উপজেলার ১০ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় নি¤œ আয়ের শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন ও ভিক্ষুকদের মাঝে ১০ টন চাউল ও লাখ টাকার আলু, ডাল ও পিয়াজ ও সাবান বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বরাদ্ধের পরিমান ও সাহায্য প্রার্থীর পরিধি বাড়ানো হবে।
রায়পুর সার্কেল অফিসের সহকারী পুলিশ সুপার স্পিনা রানী প্রামাণিক বলেন, মরণব্যাধি করোনা নিয়ে দেশের এই বিপর্যস্ত সময়ে তাদেরকে সহযোগিতায় সবার এগিয়ে আসা উচিত। তাই দিন মজুরদের খোজ-খবর নিয়ে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজস্ব অর্থয়ানে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিচ্ছি। আপাতত প্রথমে প্রায় শতাধিক পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দিনমজুর, অসহায় দারিদ্র পরিবারের মাঝে খাদ্য বিতরণ ধারাবাহিকতা সামর্থ্য অনুযায়ী অব্যাহত থাকবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। একই সঙ্গে ঘরে থেকে নিজে এবং অন্যকে সুস্থ রাখতে সবাইকে পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি আর জানান।
0Share