বাংলাদেশে টেলিভিশনে ভিডিও সম্পাদনা বিভাগের চাকুরী, নিজের ব্যক্তিগত প্রোডাকশন হাউজ কাদামাটি মিডিয়া এবং চলচ্চিত্র পরিচালনাসহ বিভিন্ন কাজে ঢাকায় খুব ব্যস্ত সময় পার করছেন, বিনোদন মিডিয়ার উদিয়মান যুবক আলাউদ্দিন সাজু। কিন্তু ঢাকায় শতব্যস্ততার মাঝেও তিনি নিজ জেলা লক্ষ্মীপুর নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন নিয়মিত। লক্ষ্মীপুরের স্থানীয় গণমাধ্যম লক্ষ্মীপুর২৪ এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক পদেও দায়িত্বরত তিনি। লক্ষ্মীপুর২৪ এর সম্পাদক সানা উল্লাহ সানুর সম্পাদনায় আঞ্চলিক ভাষার জনপ্রিয় “হাতদিনের লক্কুরা’’ অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা ও পরিচালনা করছেন তিনি। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বৃহত্তম নোয়াখাইল্লা ভাষা প্রিয় মানুষের নিকট তিনি জনপ্রিয়। লক্ষ্মীপুর২৪ এবং আলা উদ্দিন সাজুদের সাম্প্রতিক কাজগুলোর মাধ্যমে পুরো দেশ এবং লক্ষ্মীপুর জেলায় আলোচিত তারা। সম্প্রতি লক্ষ্মীপুর২৪ এর সাথে একান্ত এক বিশেষ সাক্ষাতকারে অংশ নিয়ে নিজের কাজ ও নানা বিষয় নিয়ে বলেছেন আলা উদ্দিন সাজু। তার এ সাক্ষাতকারটি হোয়াটস অ্যাপে গ্রহন করেছেন, লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরের আবদুর রহমান বিশ্বাস। তাদের আলাপচারিতা হুবহুব তুলে ধরা হলো: আবদুর রহমান বিশ্বাস: সাজু ভাই, কেমন আছেন? কোথায় আছেন? সাজু: জি, আল-হামদুলিল্লাহ্, ভালো আছি। আমি এই মুহুর্তে আমার ব্যাক্তিগত অফিসে অবস্থান করছি। বিশ্বাস: ভাইয়া, আমি লক্ষ্মীপুর২৪ এ শিক্ষানবীশ হিসেবে কাজ করি। আমি আসলে আপনার বিষয়ে পাঠকদের সামনে নানা বিষয় তুলে ধরতে চাই। শুরুতে আপনার ব্যক্তিগত পরিচিতি যদি একটু বলতেন। সাজু : জি আপনাকে ধন্যবাদ। আসলে আমি পেশাগত জীবনে একজন ভিডিও সম্পাদক, বর্তমানে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রোগ্রাম ভিডিও সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছি। পাশাপাশি ঢাকার মালিবাগ মৌচাকে “কাদামাটি মিডিয়া” নামে আমার নিজস্ব একটি মিডিয়া হাউজ রয়েছে। যেখানে চলচ্চিত্র, বিজ্ঞাপন, নাটক, ডকুমেন্টারী, মিউজিক ভিডিও ইত্যাদি প্রোডাকশন নির্মাণ ও সম্পাদনার কাজ করা হয়। আর একান্ত ব্যক্তিগত পরিচয় যদি বলি, আমার বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালালবাজার এলাকার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর গ্রামে । আমার বাবা প্রয়াত আবুল কাশেম একজন সরকারী কর্মচারী ছিলেন। বিশ্বাস: শুনেছি আপনি একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করছেন। সে বিষয়টি কি যদি একটু জানাতেন। সাজু: হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন। আমি একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করছি, যার নাম “সব সুখ তোর জন্য”। ইতিমধ্যে এর ৬০% কাজ শেষ হয়েছে, চরচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য করেছেন একাদিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারপ্রাপ্ত কাহীনিকার ছটকু আহম্মেদ। মহামারী করোনার কারনে আপাতত সুটিং বন্ধ রয়েছে। চলচ্চিত্র ছাড়াও আমি অনেকগুলো খন্ড নাটক ও সরকারী তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছি, যা বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ দেশের বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে। বিশ্বাস: ভাইয়া আপনি তো বৃহত্তম নোয়াখালীবাসীর ডিজিটাল পাঠক/দর্শকদের নিকট খুবই পরিচিত। বিশেষ করে লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরের আঞ্চলিক ভাষার সংবাদ ভিত্তিক অনুষ্ঠান “হাতদিনের লক্কুরা’’ উপস্থাপনার কারণে। তো এ অনুষ্ঠানটি কিভাবে করেন ? যদি একটু বলতেন। সাজু: আঞ্চলিক একটি অনুষ্ঠানের কারণে আমি পরিচিত কিনা জানি না। তবে এই মুহুর্তে আমি আমার পেশাগত কাজের ফাঁকে আমার জেলা লক্ষ্মীপুরের জন্য আঞ্চলিক ভাষায় সংবাদ বিষয়ক “হাতদিনের লক্কুরা” নামে একটি সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান নির্মাণ ও উপস্থান করি। যার সম্পাদনা করেন সানা উল্লাহ সানু এবং এটি প্রতি শুক্রবারে লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরের ডিজিটাল মাধ্যম ইউটিউব, ফেসবুক পেইজ, ওয়েবসাইট এবং অ্যাপসে প্রচারিত হয়। বিশ্বাস: এতো ব্যস্ততার মাঝে জাতীয় বড় মিডিয়ায় কাজ করেও ঢাকা থেকে প্রতি সপ্তাহে একদিন লক্ষ্মীপুর এসে অনুষ্ঠানটি কিভাবে করেন ? যদি একটু বলতেন । সাজু: আসলে আমি বড় মিডিয়ায় কাজ করি সত্য। নিজের চাকুরি ও প্রোডাকশন হাউজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি এটাও সত্য। সব ব্যস্ততার মধ্য থেকে সময়টা বের করে নিয়েছি। তাছাড়া আমার বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। সে কারণে লক্ষ্মীপুর জেলার প্রতি একটা ভিন্ন টান রয়েছে। আমি অনেক আগ থেকে ভাবতাম নিজের সাধ্যের মেধ্যে নিজের জেলার জন্য কিছু একটা করার, মূলত সেই চিন্তা ও দায়িত্ববোধ থেকেই লক্ষ্মীপুরের জন্য মাঝে মাঝে কিছু করার চেষ্টা করছি। তবে সম্প্রতি “হাতদিনের লক্কুরা” অনুষ্ঠানের জন্য আমাকে প্রতি সপ্তাহে লক্ষ্মীপুর যেতে হয়। তাতে আমার যাওয়া-আসাসহ বিভিন্ন রকমের কষ্ট হয় ঠিকই কিন্তু এ কষ্টের মধ্যে অন্যরকম একটা তৃপ্তি রয়েছে। যা শুধু আমিই অনুভব করি। আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস, যদি ঢাকায় আমার চাকুরি ও নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না থাকতো এবং পারিবারিক চাহিদা যদি প্রাকৃতিক ভাবে পুরণ হতো তাহলে আমি সপ্তাহে একদিনের জন্য না, সারা জীবনের জন্য লক্ষ্মীপুরে নিয়মিত হয়ে কাজ করতাম। বিশ্বাস : প্রতি সপ্তাহেতো লক্ষ্মীপুরে যান, এর মধ্যে ঢাকায় বেশি থাকা পড়ে না লক্ষ্মীপুরে। সাজু : ঢাকাতেইতো থাকি, লক্ষ্মীপুরে সপ্তাহে একদিন শুক্রবারে। শনিবার ভোরের গাড়িতে ঢাকায় চলে আসি। বিশ্বাস: বর্তমানে তো মানুষ যা করে, তার বেশিরভাগই স্বার্থের জন্য করে। সানা উল্লাহ সানু, আপনি এবং লক্ষ্মীপুর২৪ কোন স্বার্থে লক্ষ্মীপুরের জন্য এতো কষ্ট করে কাজ করছেন? সাজু : এক কথায় বলতে গেলে আমার স্বার্থ হচ্ছে, জম্মস্থান হিসেবে নিজ জেলার প্রতি ভিন্ন একটা ভালোবাসা। তাছাড়া যতটুুকু জানি সানু ভাই এবং আমাদের প্রতিষ্ঠান লক্ষ্মীপুর২৪ এ সবকিছুই এিই উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এখানে স্বার্থ খুঁজি না, দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে লক্ষ্মীপুরের জন্য কাজ করি। বিশ্বাস: সাজু ভাই, আমাকে এত সময়দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। সাজু : আবদুর রহমান বিশ্বাস আপনাকেও ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞ প্রিয় জেলাবাসির কাছে। আমাদের কাজ ভালো লাগলে দোয়া করবেন সবাই এবং আমাদের পাশে থাকবেন।
0Share