সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর শুক্রবার , ১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১লা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
লক্ষ্মীপুরের গাঢাকা দেওয়া জনপ্রতিনিধিদের তালিকা হচ্ছে

লক্ষ্মীপুরের গাঢাকা দেওয়া জনপ্রতিনিধিদের তালিকা হচ্ছে

লক্ষ্মীপুরের গাঢাকা দেওয়া জনপ্রতিনিধিদের তালিকা হচ্ছে

কাজল কায়েস: মরণব্যাধি করোনাভাইরাসে থমকে গেছে লক্ষ্মীপুরসহ সারা দেশ। এর ভয়াবহতায় সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা অসহায় জনগণের পাশে থাকার জন্য জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু সহযোগিতায় না এসে গাঢাকা দিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি। এর মধ্যে সংসদ সদস্য, পৌরসভার মেয়র, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা রয়েছেন।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অমান্য করে অনেক জনপ্রতিনিধি জনগণের সহযোগিতায় এগিয়ে না এসে গাঢাকা দিয়েছেন। লক্ষ্মীপুরসহ সারা দেশে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে সেসব প্রতিনিধিদের তথ্য সংগ্রহ করছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি সংস্থা। ওই গোয়েন্দা সংস্থাটি এ সংকটে গাঢাকা দেওয়া জনপ্রতিনিধিদের তালিকা করছে।

এদিকে ৩১ মার্চ সরকারের শীর্ষ স্থানীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থা লক্ষ্মীপুরে এ দুর্যোগে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা মাঠ পর্যায় থেকে নিরূপণ করেছে। এর মধ্যে তারা সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। একই সঙ্গে জনগণকে সহযোগিতা না করে গাঢাকা দেওয়ায় জনপ্রতিনিধিদের তালিকাও করছে।

সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে করোনা সংকটে লক্ষ্মীপুরে অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি গাঢাকা দেওয়ার সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে অনেকেই শুধু চেহারা দেখানোর জন ফেসবুকে ভেসে উঠেছেন বলে লোকজন বলাবলি করছে। আবার অনেকেই গা ছাড়া মনোভাব নিয়ে আছেন। কিন্তু তাদের কাউকেই করোনা রোধে সচেতনতা সৃষ্টি, প্রচার-প্রচারণা বৃদ্ধি ও খাদ্য সহায়তায় কোনো সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। এদিকে অনেক জনপ্রতিনিধি সরকারি খাদ্য সহায়তা জনগণকে দিয়ে নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছেন।

অন্যদিকে লক্ষ্মীপুরের ৪টি সংসদীয় এলাকায় চারজন সংসদ সদস্য (এমপি) থাকলেও তারা এ সংকটময় সময়ে এলাকাছাড়া। একবারের জন্যও এমপি এ কে এম শাহজাহান কামাল, আবদুল মান্নান, আনোয়ার হোসেন খান ও কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল এলাকায় আসেননি। এর মধ্যে পাপুল এমপি কোন দেশে আছেন তা বলা মুশকিল। তবে তাদের পক্ষ থেকে কয়েকদিন প্রতিনিধিরা এলাকায় মাস্ক, লিফলেটসহ কিছু সরঞ্জাম বিতরণ করছেন।

লক্ষ্মীপুরে শাহজাহান কামাল এমপির প্রতিনিধি বায়েজীদ ভূঁইয়া প্রায় দুই হাজার শ্রমজীবীর বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য পৌঁছে দিয়েছেন। ক্রমান্বয়ে ৭ হাজার শ্রমজীবীকে খাদ্যসামগ্রী দেবেন বলে জানা গেছে। রামগঞ্জে এমপি আনোয়ার হোসেন খানের লোকজন অসহায় ১৫ হাজার মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেওয়া শুরু করেছে। কমলনগরে মেজর মান্নানের পক্ষে তার প্রতিনিধি ছিদ্দিক মিয়া সহায়তা দেওয়া শুরু করেছেন।

লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান সদর, রায়পুর ও রামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পরিষদের সদস্যদের নিয়ে কর্মহীন মানুষের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। চেয়ারম্যান ও কয়েকজন সদস্য এক মাসের সম্মানী ত্রাণ সহায়তার জন্য তহবিলে জমা দিয়েছেন।

অন্যদিকে জেলার ৫৮টি ইউনিয়নের মধ্যে প্রায় ১৮ জন চেয়ারম্যান করোনা সচেতনতায় শুরু থেকে সক্রিয়ভাবে মাঠে কাজ করছেন। অন্যরা যেন ঘুমে রয়েছেন। ৩টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ৪টি পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলদের অধিকাংশ গাছাড়া ভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদের মধ্যে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহের, সদরের উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু, কমলনগর উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ বাপ্পি, ভাইস চেয়ারম্যান ওমর ফারুক সাগর ও রায়পুরের ভাইস চেয়ারম্যান এ বি এম মারুফ বিন জাকারিয়া করোনা থেকে জনগণকে রক্ষা করতে শুরু থেকেই হাটবাজার, মাঠ-ঘাট, বাসা-বাড়িতে প্রচার-প্রচারণা করছেন। তারা সরকারি বরাদ্দের পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে অসহায়দের বাড়ি বাড়ি চাল, ডাল, আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন।

লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির পাটওয়ারী, উত্তর হামছাদির চেয়ারম্যান এমরান হোসেন নান্নু, লাহারকান্দির চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন মুশু পাটওয়ারী, চন্দ্রগঞ্জের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল, তেওয়ারীগঞ্জের চেয়ারম্যান ওমর হোসাইন ভুলু, কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জের চেয়ারম্যান ফয়সাল আহমেদ রতন, চরকাদিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ, রামগতির বড়খেরির চেয়ারম্যান হাসান মাকছুদ মিজানসহ ১৮ জন শুরু থেকেই করোনা প্রতিরোধে কাজ করছেন।

রায়পুরে ১০ জনসহ রামগঞ্জ, সদর, রামগতি ও কমলনগরের মোট ৪০ জন ইউপি চেয়ারম্যানরা রহস্যজনক ভূমিকায় রয়েছে। নিয়ম রক্ষার কাজ করে দায় সারছেন তারা। করোনা রোধে প্রচার-প্রচারণাও চালানো হয়নি অনেক ইউনিয়নে। এদিকে সচেতনতার অভাব ও ত্রাণ সহায়তা না পেয়ে হাটবাজার, রাস্তাঘাটে জনসমাগম বাড়তে শুরু করেছে। প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেলেও পুনরায় জনসমাগম আর আড্ডায় বসে মানুষ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারের শীর্ষ স্থানীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার লক্ষ্মীপুরে কর্মরত একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, তৃণমূল পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিরা এখন জনগণকে সতর্ক করে সাহসী ভূমিকা রাখার কথা। কিন্তু তারা গা ছাড়া মনোভাব নিয়ে করোনা সংকটে শুরু থেকে রহস্যজনক ভূমিকায় আছে। উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে ওই সব জনপ্রতিনিধিদের তালিকা হচ্ছে। এর মধ্যে তাদের কার কি ভূমিকা ছিল, তা নিয়ে প্রতিবেদন হয়েছে। সার্বক্ষণিক গুরুত্ব দিয়ে করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ চলছে।

প্রতিবেদন আরও সংবাদ

বানোয়াট মামলায় লক্ষ্মীপুর জেলার  শ্রেষ্ঠ জনবান্ধব চেয়ারম্যান আশরাফ এখন ফেরারী

লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য অফিসের ইলিশ উৎপাদনের হিসাব কতটুকু বাস্তবসম্মত ? 

প্রাণী সম্পদের তথ্যে কোরবানির মহিষ বাড়লেও লক্ষ্মীপুরের হাটে বাজারে মহিষ কম

লক্ষ্মীপুরে মেঘনার বাঁধ নির্মাণ বন্ধ রেখেছে ৫ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, আতঙ্কে স্থানীয়রা

লক্ষ্মীপুরে সংকট দেখিয়ে বেশি দামে সার বিক্রি

১৯৭০ থেকে ৫৪ বছরের ঝড়ে উপকূলে অন্তত ১২ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়

Lakshmipur24 | লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রনালয়ে নিবন্ধিত নিউজপোর্টাল  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2025
Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu
Muktizudda Market (3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com