নিজস্ব প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরসহ দেশের উপকূলের জেলাগুলোতে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার সবচেয়ে বেশি। এসব জেলায় কিশোরীরাও বেশি অপুষ্টির শিকার। আন্তর্জাতিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনালের (এইচকেআই) সর্বশেষ জরিপে এ তথ্য মিলেছে। এইচকেআই এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে উপকূলের ১৪টি জেলা, পার্বত্য চট্টগ্রাম, হাওর এলাকা, পদ্মা নদীর চর, উত্তরাঞ্চলের চর এবং উত্তর-পশ্চিমের ছয়টি অঞ্চলের (পঞ্চগড়, দিনাজপুর, নীলফামারী, রংপুর, জয়পুরহাট, বগুড়া, রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ) তথ্য সংগ্রহ করে। জরিপে পাঁচ বছরের কম বয়সী চার হাজার ৬০০ শিশু এবং ১০ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নয় হাজার ১৫৮ কিশোরী ও নারীর তথ্য নেওয়া হয়। ফুড সিকিউরিটি নিউট্রিশনাল সার্ভিলেন্স প্রজেক্টের আওতায় জরিপ করা হয়েছে। জরিপ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে সম্প্রতি।
উপকূলে অপুষ্টি বেশি: জরিপে দেখা গেছে, বাগেরহাট, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, ঝালকাঠি, খুলনা, নোয়াখালী, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা—এই ১৪ জেলায় শিশুর অপুষ্টি বেশি। এই জেলাগুলোতে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৩৪ শতাংশ শিশুর বয়সের তুলনায় ওজন কম। আর ৭ শতাংশের ওজন উদ্বেগজনকভাবে কম। এরপর কম ওজনের শিশু পদ্মা নদীর চর এলাকায় বেশি। এখানে ৩৩ শতাংশ শিশুর ওজন বয়সের তুলনায় কম। এর পরের স্থান উত্তর-পশ্চিমের কয়েকটি জেলা। জেলাগুলোতে ৩১ শতাংশ শিশুর ওজন বয়সের তুলনায় কম।এইচকেআই কিশোরীদের পুষ্টি পরিস্থিতিও জরিপ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, উপকূলের ১৪ জেলায় কিশোরীদের ১০ শতাংশের ওজন তুলনায় কম। ছয়টি এলাকার মধ্যে এই হারই সবচেয়ে বেশি। এরপর হাওর এলাকায় কম ওজনের কিশোরীর হার বেশি, ৯ শতাংশ। বৈপরীত্য: স্থূলতা ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত ওজন জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিচ্ছে। পদ্মার চর এলাকার নারীদের ৩৯ শতাংশের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। ২২ শতাংশের ওজন উদ্বেগজনকভাবে বেশি। এর উল্টো অবস্থা পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের। পদ্মার চরের শিশুদের ৩৩ শতাংশের ওজন বয়সের তুলনায় কম। ৮ শতাংশের ওজন উদ্বেগজনকভাবে কম। এই বৈপরীত্যের কারণ জানতে চাইলে জাতীয় পুষ্টি কর্মসূচির ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চরে সারা বছরে একটি ফসল হয়। সারা বছর কাজ না থাকা নারীদের বেশি ওজন হওয়ার অন্যতম কারণ।
0Share