সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর বৃহস্পতিবার , ১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
দেশে জনপ্রিয় হচ্ছে বেগুনি রঙের ধান চাষ

দেশে জনপ্রিয় হচ্ছে বেগুনি রঙের ধান চাষ

দেশে জনপ্রিয় হচ্ছে বেগুনি রঙের ধান চাষ

কুমিল্লায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক মনজুর হোসেন এবার মাঠে নতুন ধান চাষের মধ্য দিয়ে সাড়া জাগিয়েছেন। সুন্দরবন বেড়াতে গিয়ে সেখান থেকে মাত্র ২০০ গ্রাম ধান এনে বীজতলা তৈরি করে জমিতে রোপণ করার পর তিনি কৃষি বিভাগকেই চমকে দিয়েছেন। তবে কৃষক মনজুরের ওই ধানের বৈজ্ঞানিক নাম বা কৃষি বিভাগের কাছে এখনও স্বীকৃত কোনো নাম নেই।

নামহীন এ বেগুনি পাতার ধানে উচ্চফলনশীল ধানের বৈশিষ্ট্য রয়েছে বলে ধারণা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। কৃষি খামারের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে ফুটে উঠেছে যেন বাংলাদেশের পতাকা। চারপাশের জমিতে সবুজ ধানের সমারোহ, মাঝখানে এক চিলতে জমিতে বেগুনি রঙের নতুন জাতের এ ধানের নাম ‘বঙ্গবন্ধু’ রাখার দাবি জানিয়েছেন কৃষক মনজুর হোসেন।

জানা গেছে, কুমিল্লার সদর উপজেলার মনাগ্রামের ফসলের মাঠে এ বেগুনি পাতার ধানের চাষ এবং ওই মাঠে সবুজ ফসলের বুকে রং মেশানো পতাকার মতো দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমান আশপাশের এলাকাসহ দূরদূরান্তের কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এদিকে ব্যতিক্রমী এ বেগুনি রঙের পাতার ধান চাষের খবর পেয়ে সেখানে কয়েকদিন পর পর পরিদর্শন করেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। কিন্তু তারা এ ধরনের ধান আর কখনও দেখেননি এবং এর নাম তাদের জানা নেই। তাই এ ধান নিয়ে তারা গবেষণা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। তবে মনাগ্রামের বাসিন্দা ও ২০১৬ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক মনজুর হোসেন জানালেন, ফসলের মাঠে জাতির পিতার নাম নেই, তাই ব্যতিক্রমী এ ধানের নাম দিতে চাচ্ছেন ‘বঙ্গবন্ধু ধান’ এবং তিনি এ জাতের ধান দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

জেলার আদর্শ সদর উপজেলার মনাগ্রাম মাঠে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সবুজ মাঠের বুকে এক চিলতে জায়গায় বেগুনি রঙের পাতার ধান গাছ, যেন এক খ- বাংলাদেশ। নতুন জাতের বেগুনি এ ধান দেখতে প্রতিদিন উৎসুক মানুষ ভিড় করছেন। তাদের আশা, এ বেগুনি পাতার ধান সমৃদ্ধ করবে দেশের কৃষি কুমিল্লায় ধান চাষে।
কুমিল্লা পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা এবং সমবায় ও কৃষি গবেষক প্রয়াত ড. আখতার হামিদ খান অধিক ফলনের জন্য উন্নতজাতের ধান উৎপাদনের মাধ্যমে কুমিল্লার চেহারা পাল্টে দিয়ে ছিলেন। কৃষির উন্নয়নে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে স্বনামখ্যাত ড. আখতার হামিদ খানের অবদান দেখে কৃষক মনজুর হোসেনও অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

কৃষক মনজুর হোসেন জানান, সুন্দরবনের পাশ দিয়ে ট্রলারে যাওয়ার সময় বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপের মধ্যে বেগুনি রঙের ১০ থেকে ১২টি ধান গাছ দেখতে পাই। এ সময় সেখানে যেতে চাইলে ট্রলারের মাঝি বাঘ-বানর ও হিংস্র জন্তুর আক্রমণ হতে পারে বলে নিষেধ করেন। কিন্তু তার কথা শুনিনি। তাকে অতিরিক্ত টাকা দিই এবং দ্বীপের অদূরে ট্রলার থেকে নেমে হাঁটুপানি পেরিয়ে আমি সেখানে যাই এবং প্রায় ২০০ গ্রাম ধান সংগ্রহ করি। পরে বাড়িতে এসে এ ধান রোদে শুকিয়ে বীজ হিসেবে তৈরি করি। তিনি জানান, ধানের গাছগুলো যেহেতু বেগুনি রঙের তাই ফসলের মাঠে জাতীয় পতাকার দৃশ্য ফুটিয়ে তোলার আগ্রহ থেকে আমার ২ একর জমির মাঝখানে ৪ শতক জমিতে এ ধানের চারা রোপণ করি। বর্তমানে ওই জমির চারদিকে বিআর-২৮, বিআর-২৯ ও পাইজম ধানের সবুজ খেতের মাঝে বেগুনি রঙের পাতার ধানের অংশটুকু দূর থেকে দেখলে বড় আকারের জাতীয় পতাকা বলে মনে হয়।
বিভিন্ন তথ্যসূত্রের বরাত দিয়ে কৃষক মনজুর জানান, পৃথিবীর সবচেয়ে দামি চালের ধান এটি। উচ্চ ফলনশীল এ জাতের ধানের রোগবালাই প্রতিরোধ ক্ষমতাও ভালো এবং ১১০ দিনে এর ফলন ঘরে তোলা যায়। প্রতি শতকে ৪০ কেজি ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করছি। আবেগ ভরা কণ্ঠে কৃষক মনজুর জানান, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। কিন্তু ফসলের মাঠে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নামে কিছু নেই, তাই ব্যতিক্রমী এ ধান দেশের সর্বত্র ফসলের মাঠে ছড়িয়ে দিতে আমি এ ধানের নাম ‘বঙ্গবন্ধু ধান’ দিতে চাই। এ বিষয়ে আমি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
কৃষক মনজুর হোসেন শিক্ষা জীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর তার বাবা মারা যান। পরে তিনি বাড়ি ফেরেন এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে বাংলা বিভাগে অনার্সে ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি কুমিল্লার কৃষি বিভাগসহ সব মহলে উদ্ভাবনী কৃষক হিসেবে বেশ পরিচিত। তিনি পামগাছ এবং বিভিন্ন প্রজাতির ফল আর ধান চাষ করে কৃষি বিভাগসহ বিভিন্ন মহলে সুনাম অর্জন করেন। স্থানীয় কৃষক আবদুস সালাম, রমিজ উদ্দিন জানান, বেগুনি পাতার ধানের জমিটি প্রথম দেখায় যে কেউ ভাববে ধান গাছে হয়তো রোগবালাই আক্রমণ করেছে, তাই এমন বেগুনি রং হয়ে গেছে।

কিন্তু কাছে গেলে ধান গাছ বেশ তাজা ও উচ্চফলনশীল জাতের বলে মনে হয়। স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ছালেকুর রহমান বলেন, কৃষক মনজুর হোসেনের ধান খেত পরিদর্শন করেছি। এর আগে এ রং বা জাতের ধানের পাতা কখনও দেখা যায়নি। কৃষি বিভাগের কাছে নতুন এ প্রজাতির ধান নিয়ে আমরা কাজ করছি। ভালো উৎপাদন হলে কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া যাবে। কুমিল্লা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক দিলীপ কুমার অধিকারী বলেন, বেগুনি পাতার এ ধানের নাম সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত নই। এর ফলন ও পুষ্টিমান কেমন হয় এ নিয়ে পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা করা হচ্ছে। এ অঞ্চলের ধানের চেয়ে এটা ব্যতিক্রমী ও বেশ হৃষ্টপুষ্ট এবং অনেকটা রোগবালাই প্রতিরোধী বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কৃষি | অর্থনীতি আরও সংবাদ

রামগতিতে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হলো একটি ইলিশ

রামগতিতে ৩০ টন অবৈধ ইউরিয়া সার জব্দ, আটক-১

রামগতিতে মাছ উৎপাদন হয়েছে ১৮ হাজার ১০২ মেট্রিক টন

লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য অফিসের ইলিশ উৎপাদনের হিসাব কতটুকু বাস্তবসম্মত ? 

জলাবদ্ধতা নিরসনে ভুলুয়া নদীতে যৌথ অভিযান

লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় ভাসছে শতশত পশুর মৃতদেহ 

Lakshmipur24 | লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রনালয়ে নিবন্ধিত নিউজপোর্টাল  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2025
Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu
Muktizudda Market (3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com