লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের চরবংশী গ্রামে প্রভাবশালীর হামলার ভয়ে ও মামলার হয়রানিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন একটি পরিবারের লোকজন। প্রায় এক বছর থেকে তারা লাঠিয়ালদের ভয়ে নিজ বাড়ি-ঘরে ফিরতে পারছেন না বলে তাদে দাবি। আতঙ্কিত এ পরিবারটি এখন লক্ষ্মীপুর শহরে ভাড়া বাসায় মানবেতর জীবনযাপন করছে।
ওই গ্রামের বাবুরহাট চৌধুরী বাড়ির মনির আহমদের পুত্র ক্ষতিগ্রস্ত মোশারফ হায়দার (৫০) একই এলাকার গাজী বাড়ি ও দাইয়া বাড়ির মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে নিজামুল হায়দার, সুজা মিয়ার ছেলে মো. হারুন ও আব্দুল গণির ছেলে আলাউদ্দিন গাজীর বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের নিকট এমন তথ্য জানিয়ে সহযোগিতা কামনা করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত মোশারফ হায়দার (৫০) বলেন, চরবংশী মৌজায় তাদের খরিদ ও ওয়ারিশি সূত্রে বাড়ি ও বিলে ২ একর ২০ শতাংশ জমি রয়েছে। তাদের জমি তারা চাষাবাদ ও বাড়ি-ঘর করে ভোগ-দখল করে আসছিলেন। হঠাৎ করে প্রায় বছরখানেক পূর্বে তারা আমাদের কোটি টাকা মূল্যের বসতবাড়ি, বাগান, পুকুর ও বিলের জমি জবরদখলের চেষ্টা চালায়। সে সময় তারা আদালতের স্বরণাপন্ন হলে আদালত উক্ত ভূমিতে স্থিতিবস্থা জারী করেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে একাধিকবার হামলা ও অত্যাচার চালায় একই এলাকার গাজী বাড়ি ও দাইয়া বাড়ির মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে নিজামুল হায়দার, সুজা মিয়ার ছেলে মো. হারুন ও আব্দুল গণির ছেলে আলাউদ্দিন গাজী। অভিযুক্তরা ওই জমি তাদের ওয়ারিশ সূত্রে বলে দাবি করলেও একাধিকবারের থানা, আদালত, উকিল শালিস, এলাকা, ইউনিয়ন পরিষদ কোথাও তাদের দাবির স্বপক্ষে কোনো কাগজপত্র প্রদর্শন করতে পারেনি। তারা ক্ষমতার দাপটে আমাদের উপর অত্যাচার চালাতেই থাকে। তাদের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হই।
আমাদের ভূমি ও বাড়িতে আমরা বশির আহম্মদ (৫৫) ও আফতাবের রহমান (৬০) নামের দু’জন কেয়ারটেকারকে রেখে লক্ষ্মীপুর শহরে ভাড়া বাসায় চলে আসতে বাধ্য হই। কিছুদিন পর তারা আমার কেয়াটেকারদেরকে (বর্গাচাষী) মারধর করে তাড়িয়ে দিয়ে আমাদের বসতবাড়ি, বাগান, পুকুর ও বিলের জমি জবরদখল করে নেয়। তারা লুটে নেয় পুকুরের মাছ, ক্ষেতের ফসল ও বাগানের গাছ এবং ফল।
এখন আমি ও আমাদের লোকজন বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করলেই তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মহড়া দেয়। ভূমিদস্যুদের হামলার ভয়ে আমি ও আমার পরিবারের লোকজন বাড়ি-ঘর ছাড়া।
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত মো. হারুনের বক্তব্য জানার জন্য চেষ্টা করলে সাংবাদিক দেখে সে দৌঁড়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হোসেন মাষ্টার বলেন, উভয় পক্ষের মাঝে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে একাধিককার বৈঠক হলেও কোনো সমাধা করা যায়নি।
রায়পুর থানার এসআই মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, একটি তদন্তে অভিযুক্তদের নোটিশ প্রদান করা হলেও তারা থানায় হাজির হয়নি। ঘটনাটি তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আদালতে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
0Share